Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
চূড়ান্ত সতর্কতা গুজরাতের বন্দরে

সমুদ্রপথে হামলার ছক পাকিস্তানি কমান্ডোদের

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৬
Share: Save:

সমুদ্রপথে ভারতে ঢুকে বড়সড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তানের কমান্ডো বাহিনী। ভারতে ঢোকার জন্য গুজরাতের কচ্ছের রানকে বেছে নিতে পারে তারা। গুজরাতে জঙ্গি হামলা এবং সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাধানোর ছক কষছে পাকিস্তানি কমান্ডোরা। ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর থেকে এমন সব তথ্য পেয়েই গুজরাতের বন্দরগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তার কড়াকড়ি আদানিদের বেসরকারি বন্দরেও।

জলপথে মুম্বইয়ে ঢুকে পাক জঙ্গিদের হামলার ক্ষত এত বছর পরেও অটুট। এ বারও সেই জলপথেই পাক কমান্ডোদের ভারতে ঢোকার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন গুজরাত পুলিশের ডিজি। ক’দিন আগেই নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল কর্মবীর সিংহ গোয়েন্দা তথ্যকে সামনে রেখে জানিয়েছিলেন, জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিরা ভারতে জলের নীচে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। শ্রীলঙ্কা থেকে আসা জইশ জঙ্গিদের হানার আশঙ্কায় সতর্কতা তামিলনাড়ুতেও। তবে এ বার গুজরাতে হামলা আটকাতে যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কার্গিল ধাঁচেই পাক কমান্ডো বাহিনী ভারতে নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাক সম্পর্কের চূড়ান্ত টানাপড়েনের মধ্যে গোয়েন্দাদের এই তথ্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার উপকূলরক্ষী বাহিনী গুজরাতের জলসীমায় নজরদারি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে, হারামি নালা, কাভদা-সহ কচ্ছের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে পাক কমান্ডোরা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে। গুজরাতে নাশকতা চালানো এবং সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাধানোই তাদের উদ্দেশ্য। কচ্ছের কান্ডলা ও মুন্দ্রায় দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর রয়েছে। মুন্দ্রায় বেসরকারি বন্দর আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশ্যাল ইকনমিক জ়োন (এপিএসইজেড) পণ্য পরিবহণে দেশের প্রথম সারিতে। কান্ডলায় সরকারি বন্দরও আছে গুরুত্বের তালিকায় প্রথম সারিতেই। আরব সাগরে দু’টি বন্দরই শুধু নয়, কাছাকাছি জামনগরে রয়েছে রিলায়্যান্সের তৈল শোধনাগার। যা বিশ্বের সবচেয়ে বড়। হামলার আশঙ্কায় কচ্ছের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আদানিদের বন্দরের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘উপকূলরক্ষী বাহিনীর থেকে তথ্য মিলেছে, পাক-প্রশিক্ষিত কমান্ডোরা কচ্ছ উপসাগরের হারামি নালা দিয়ে ঢুকে পড়েছে। জলের নীচে হামলা চালানোর বিষয়ে এদের প্রশিক্ষণ রয়েছে।’’ ওই বন্দরের তরফে যাতায়াতকারী সব জাহাজের জন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরামর্শ জারি করা হয়েছে। বন্দর এলাকা, উপকূলে কড়া নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কান্ডলায় দীনদয়াল উপাধ্যায় পোর্ট ট্রাস্ট (আগে নাম ছিল কান্ডলা পোর্ট ট্রাস্ট) একই ভাবে তাদের শিপিং এজেন্টদের সতর্ক করেছে। বলেছে, সন্দেহজনক কিছু দেখলেন তারা যেন উপকূলরক্ষী বাহিনীকে জানায়।

গত সপ্তাহেই কচ্ছ থেকে দুটি পরিত্যক্ত পাকিস্তানি মাছ ধরার নৌকা উদ্ধার করেছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ বার গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ছোট নৌকা করে ভারতের মাটিতে পা রাখার চেষ্টা করছে পাক কমান্ডোরা। তাই তার মোকাবিলায় বিএসএফ, উপকূলরক্ষী বাহিনী-সহ নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত সব সংস্থা তৎপরতা বাড়িয়েছে। দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়েছেন, পাক হামলা রুখতে সীমান্তে নিরাপত্তাবাহিনী সতর্ক রয়েছে। যে কোনও ধরনের পরিস্থিতির জবাব দিতে তৈরি আছে ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Coast Guard BSF Gujarat Port Pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE