Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কামাখ্যার পরিষেবায় অখুশি হাইকোর্ট

অম্বুবাচীর বাকি ৪ দিন। তার আগে দুর্নীতির অভিযোগ, অব্যবস্থার ধাক্কায় বেহাল কামাখ্যা! পর্যটন দফতর নীলাচল পাহাড়ে ভিড় সামলাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী আবাস তৈরির কাজ শেষ করে ফেলেছে। ভক্তদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন পরিষেবাও চালু করা হয়েছে। কিন্তু, তাতে খুশি নয় হাইকোর্ট। কামাখ্যার পরিষেবা আরও ভাল করার জন্য নির্দেশ জারি করেছে আদালত।

উদ্বোধনের সুর। কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী মেলার আগে। উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।

উদ্বোধনের সুর। কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী মেলার আগে। উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০৩:৩০
Share: Save:

অম্বুবাচীর বাকি ৪ দিন। তার আগে দুর্নীতির অভিযোগ, অব্যবস্থার ধাক্কায় বেহাল কামাখ্যা!

পর্যটন দফতর নীলাচল পাহাড়ে ভিড় সামলাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী আবাস তৈরির কাজ শেষ করে ফেলেছে। ভক্তদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন পরিষেবাও চালু করা হয়েছে। কিন্তু, তাতে খুশি নয় হাইকোর্ট। কামাখ্যার পরিষেবা আরও ভাল করার জন্য নির্দেশ জারি করেছে আদালত।

২২ জুন বন্ধ হয়ে ২৬ জুন খুলবে কামাখ্যা মন্দির। কামাখ্যার অম্বুবাচী মেলা মানেই অন্তত ৫-৬ লক্ষ মানুষের সমাগম। ইতিমধ্যেই দলে-দলে গেরুয়া, লাল, কালো কাপড়ের সাধু-সন্ন্যাসীর রওনা হচ্ছেন চূড়ার দিকে। এসেছেন ফ্রান্স, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, নেপাল, বাংলাদেশ, কানাডা, জার্মানির পর্যটকরা। সেই সঙ্গে সপরিবার মন্দিরমুখো হয়েছেন কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদা, মেদিনীপুর, হুগলি, বর্ধমানের মানুষও। খামখেয়ালি আবহাওয়ায় গুয়াহাটিতে কখনও গরমের প্রকোপ, কখনও বৃষ্টির দাপট। যে কোনও পরিস্থিতি সামলে কামাখ্যার সব চেয়ে বড় উত্‌সব অম্বুবাচী সফল ভাবে আয়োজন করাই অসম পর্যটন দফতরের কাছে আপাতত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

গত দু’বছর ধরেই পর্যটন দফতর কামাখ্যায় সাধু-সন্তদের থাকা বন্ধ করে দিয়েছে। যত্রতত্র মলত্যাগে নজরদারি জারি হয়েছে। খাবার বিলির ব্যবস্থা হয়েছে পাহাড়ের নীচেই। এ বারও কামাখ্যা স্টেশনের বাইরে, সোনারাম স্কুলের মাঠ ও পুরনো পাণ্ডু স্টেশনের চত্বরে সন্ন্যাসীদের আখড়া ও ভক্তদের আস্তানা তৈরি করা হয়েছে। বিনামূল্যে লঙ্গরের ব্যবস্থা করবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শিবিরে থাকছে পাখা, আলো। বিনামূল্যেই মিলবে চিকিত্‌সা ও ওষুধ। থাকছে পানীয় জলের ব্যবস্থা, পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক শৌচালয়। শিবির থেকে বিনা খরচে বাসে ভক্তদের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। অম্বুবাচীর জন্য কামাখ্যার আশপাশে এম জি রোড, ডি জি রোড, টি আর ফুকন রোড ও কামাখ্যা রোডে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

কিন্তু হাইকোর্ট কামাখ্যার আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির জেরে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে শ্রীধর রাও নিজে কামাখ্যা চত্বর পরিদর্শন করেন। তার পরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাও ও বিচারপতি পি কে শইকিয়ার এজলাসে গত কাল এ নিয়ে ফের শুনানি হয়। শুনানিতে হাজির ছিলেন জেলাশাসক এম আংগামুথু। আদালতের ডাক পেয়েও দেবোত্তর ট্রাস্টের কোনও প্রতিনিধি শুনানিতে হাজির না থাকায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতিরা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাও জেলাশাসকে জানান, কামাখ্যা মন্দিরে ঢোকার আগে হাজার-হাজার মানুষ যেখানে লাইনে দাঁড়ান, সেই জায়গাটি পুরো খাঁচা-বন্দি। এই পরিস্থিতিতে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ড হলে কেউ পালাতে পারবেন না। তাই খাঁচা সরিয়ে সেখানে রেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। লাইন যেখানে থাকে সেখানে পাখা বা পানীয় জলের ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। মন্দির দর্শনের আগে সৌভাগ্যকুণ্ডে স্নান বা হাত-মাথায় জল দেওয়া নিয়ম। কিন্তু ওই কুণ্ডের জলের অবস্থা শোচনীয়। তাই দ্রুত সৌভাগ্যকুণ্ড পরিষ্কার করতেও আদালত নির্দেশ দিয়েছে।

অন্য দিকে, দেবোত্তর ট্রাস্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। এ নিয়ে আদালতে চিঠি পাঠিয়েছেন দু’জন। তাঁদের অভিযোগ, গত দু’দশকে কামাখ্যা উন্নয়নের জন্য আসা বহু কোটি টাকা ট্রাস্টের সদস্যরা নয়ছয় করেছেন। অবশ্য ট্রাস্টের তরফে আজ সেই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে বলা হয়, প্রয়োজনে পুরো হিসেব তাঁরা আদালতে জমা দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE