Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাইফোঁটার সকালে দিল্লির মাছবাজার আগুন

ভাইফোঁটা বাঙালির খুব প্রিয় একটি উৎসব। বারো মাসে তেরো পার্বণে মেতে উঠতে অভ্যস্ত বাঙালি এই দিনটাতেও মেতে উঠতে চায় রকমারি খাদ্যের আস্বাদ গ্রহণে, রসনার পরিতৃপ্তিতে। আর কে না জানে, আজও বাঙালির রসনা শ্রেষ্ঠ তৃপ্তি পায় নানানরকম মাছে।

সুমনা কাঞ্জিলাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৫ ২১:২৪
Share: Save:

ভাইফোঁটা বাঙালির খুব প্রিয় একটি উৎসব। বারো মাসে তেরো পার্বণে মেতে উঠতে অভ্যস্ত বাঙালি এই দিনটাতেও মেতে উঠতে চায় রকমারি খাদ্যের আস্বাদ গ্রহণে, রসনার পরিতৃপ্তিতে। আর কে না জানে, আজও বাঙালির রসনা শ্রেষ্ঠ তৃপ্তি পায় নানানরকম মাছে। কিন্তু এ বছর সেই মাছের বাজারেই আগুন দাম দেখে মাথায় হাত পড়েছে দিল্লির বাঙালির।

ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে বিশেষত মিষ্টি আর মাছের চাহিদা থাকে বেশি। দিল্লির বাঙালিপ্রধান মহল্লা চিত্তরঞ্জন পার্কের মাছবাজার তাই দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাঙালিদের ভিড়ে সরগরম। ইলিশ, গলদা চিংড়ি, পাবদা, তোপসে মাছের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কলকাতার মতোই এ শহরেও এ বছর ইলিশের আকাল চোখে পড়ার মতো। তার মূল কারণ, এ বার বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি হয়নি বললেই চলে। গাজিপুর মান্ডির অন্যতম মাছবিক্রেতা বাদল প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রতি বছর এই সময় ইলিশের বিক্রি থাকে সবচেয়ে বেশি। কিন্ত এ বছর ইলিশের আকাল, দামও আগুন। সম্ভবত তিস্তা নদীর জলবণ্টন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের যে টানাপড়েন চলছে, তারই কারণে বাংলাদেশ সরকার এ বছর এ দেশে ইলিশ রফতানিতে আগ্রহ দেখায়নি।’’

চিত্তরঞ্জন পার্ক দিল্লির মানুষের কাছে ‘মিনি কলকাতা’ নামে পরিচিত। এখন এখানকার ৮০ শতাংশ বাসিন্দা বাঙালি হলেও, একসময়ে ১০০ শতাংশই বাঙালির বাস ছিল। আর যেখানে বাঙালি সংখ্যাগুরু, সেখানে মাছের বাজার তো থাকবেই। চিত্তরঞ্জন পার্কে তাই বড় মাছবাজার দু’টি ও গোবিন্দপুরীতে আছে একটি। ১৯৭৫-এ তৈরি হলেও, ১৯৭৮-এ এখানে পাকা দোকান পান মাছ ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর অন্যান্য প্রান্তে মাছবাজার থাকলেও দিল্লিবাসীরা ছুটে আসতে চান এই বাজারেই। চিত্তরঞ্জন পার্ক ২ নম্বর মাছবাজারের বিক্রেতা দীনেশ জানালেন, বহু বিখ্যাত মানুষ থেকে মন্ত্রীদের বাড়ির মাছ এখান থেকেই যায়। শুধু দিল্লি নয়, অভিনেতা অভিষেক বচ্চনের বিয়ের মাছও তাঁরাই সরবরাহ করেছিলেন। ওই বাজারের আর এক বিক্রেতা বাপি দত্তের কাছে জানা গেল, এখানে মাছ আসে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে। কলকাতা থেকে কাজরি, তোপসে, পারশে ও ডায়মন্ড হারবার থেকে মাঝারি মাপের ইলিশ আসে। গুজরাতের ইলিশ আকারে বড়, কিন্তু স্বাদ তেমন নয়। এ বার ইলিশের দাম ছোট আকারের মাছে ১০০০ টাকা কেজি, একটু বড় হলে ১২০০-১৪০০ টাকা।

মাছবিক্রেতাদের অনেক সমস্যাও আছে। ঠান্ডাঘরের অভাবে মাছ মজুত রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ক্রেতাদের মানসিকতাও আর আগের মতো নেই। তবে ইদানিং অবাঙালি ক্রেতারাও মাছ কিনতে আসছেন, এটাই যা ভাল দিক। সুর্মাই বা অন্য সামুদ্রিক মাছের মতো রুই-কাতলাও তাঁরা কিনছেন।

তবে এত সমস্যার মধ্যেও চিত্তরঞ্জন পার্কের মাছবাজারের বৈচিত্র্য কলকাতার মানিকতলা মাছবাজারের মতোই বলে দাবি অধিকাংশ খাদ্যরসিক দিল্লিবাসী বাঙালির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Fish Market Price High
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE