Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Hindu Mahasabha

ধর্মের দোহাই দিয়ে এ বার দুই টপারের বিয়ে আটকানোর চেষ্টা

এক জন হিন্দু। অন্য জন মুসলমান ধর্মের। ইউপিএসসি পরীক্ষায় এক জন হয়েছিলেন প্রথম। অন্য জন ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ১৭:৪৫
Share: Save:

এক জন হিন্দু। অন্য জন মুসলমান ধর্মের।

ইউপিএসসি পরীক্ষায় এক জন হয়েছিলেন প্রথম। অন্য জন ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে।

পরে এই দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্প্রতি তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এবং সেই সিদ্ধান্তের কথা ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েও দেন। এ বার ব্যক্তিগত সেই সম্পর্কেই নাক গলালো অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। পাত্রীর বাবাকে রীতিমতো চিঠি লিখে বিয়ে আটকানোর নির্দেশ দিয়েছেন মহাসভার এক নেতা। একান্তই যদি বিয়ে আটকানো সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে পাত্রকে মুসলমান ধর্ম ছেড়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার নিদানও দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। এমনই দাবি একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি ওয়েবসাইটের।

২০১৫তে ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন টিনা দাবি। ওই পরীক্ষায় সে বার দ্বিতীয় হন আমির উল সাফি খান। সম্প্রতি টিনা তাঁর ফেসবুক পেজে আমিরের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা জানান। গত সপ্তাহের সেই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। এর পরেই টিনার বাবাকে ওই চিঠি লেখেন মহাসভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুন্নাকুমার শর্মা। সেখানে তিনি লিখছেন, এই সিদ্ধান্ত ‘লভ জিহাদ’কে উত্সাহ জোগাবে। তাই, কোনও ভাবেই এ বিয়ে সম্ভব নয়। এর পরেও যদি ওই যুগল বিয়ে করতে চান, তবে আমির উলের ‘ঘর ওয়াপসি’ বাধ্যতামূলক। এবং মুসলমান ধর্ম ছেড়ে হিন্দু হতে সম্মত হলেই তবে বিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এর পরেই মুন্নাকুমারের পরামর্শ, এই ঘর ওয়াপসি বা ধর্মান্তরণের ক্ষেত্রে তাঁদের সদস্যেরা সাহায্য করবেন।

আরও পড়ুন: সম-অধিকারে হাজি আলিতে মেয়েরা

টিনার বাবা যশবন্ত দাবিকে লেখা ওই চিঠিতে মুন্নাকুমার জানিয়েছেন, মেয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পর তাঁরা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু আমিরকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট আঘাত এবং দুঃখ দিয়েছে মহাসভার কর্মীদের। কারণ হিসেবে তিনি লিখেছেন, মুসলমানরা ‘লভ জিহাদ’-এ বিশ্বাসী। প্রেমের ফাঁদ পেতে হিন্দু মেয়ের সঙ্গে প্রথমে প্রেম, পরে মুসলমান ধর্মে রূপান্তরিত করে বিয়ে করে। মুন্নাকুমারের নির্দেশ, যদি টিনা-আমিরের একান্ত বিয়ে করতেই হয় তবে তা যেন পাত্রের ধর্মান্তরণের পরেই হয়।

ফেসবুকে টিনা জানিয়েছিলেন, এ বছরের মে মাসে তাঁর সঙ্গে আমিরের পরিচয় হয়। প্রথম দেখাতেই আমির তাঁকে পছন্দ করে ফেলেন। কয়েক মাস পরে টিনাও তাঁর প্রেমে পড়ে যান। এর পরেই দু’জনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ফেসবুকে নিজেদের সম্পর্কের কথা জানিয়ে সেই সিদ্ধান্তও পোস্ট করেন টিনা। তিনি আরও জানান, বিয়ের পরেও তাঁরা নিজেদের ধর্মবিশ্বাস মেনে চলবেন। দু’জনের কেউই কোনও ভাবেই ধর্মান্তরিত হবেন না।

যদিও এই চিঠি পাওয়ার পর টিনা, আমির বা তাঁদের পরিবারের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে, সম্প্রতি ফেসবুকে অন্য এক পোস্টে ওই তরুণী লিখেছিলেন, মুক্ত চিন্তা-ভাবনা করা অন্য নারীদের মতো আমারও সব বিষয়ে নিজের পছন্দ রয়েছে। আমি সেই পছন্দ নিয়ে খুশি। এবং আমিরকে নিয়েও। আমার বাবা-মাও ভীষণ খুশি। তবে, আমাদের সমাজে সেই সব মানুষরাও থাকবেন, যাঁরা সারা ক্ষণ নেতিবাচক মন্তব্য করে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hindu Mahasabha Love Jihad Two IAS toppers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE