অনুতপ্ত: স্ত্রী’র ধমকে শৌচাগার গড়ছেন রাজেশ মাহাতো। ধানবাদে। ছবি: চন্দন পাল।
বৌয়ের জন্য স্মার্টফোন কিনেছিলেন ধানবাদের ভুলির বাসিন্দা রাজেশ মাহতো। উপহার দেখে চটে লাল লক্ষ্মীদেবী। মাটিতে আছড়ে ভাঙলেন সেই ফোন!
রাগের কারণ কী? সে কথা জানালেন গৃহিনীই। বাড়িতে শৌচাগার গড়তে অগ্রিম টাকা দিয়েছিল প্রশাসন। হাজার ছ’য়েক টাকা হাতে পেয়েছিলেন রাজেশবাবু। কিন্তু শৌচাগারের বদলে বৌকে খুশি করতে সেই টাকায় কিনে ফেলেন মোবাইল ফোন।
ধানবাদ সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের ভুলিতে বেশির ভাগ লোক কয়লাখনির শ্রমিক। কয়েক জন কৃষিকাজ করেন। রাজেশবাবু কৃষক। বাড়িতে শৌচাগার গড়তে সরকারি সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। প্রথম পর্যায়ে পান ৬ হাজার টাকা। ধানবাদ নগর নিগম জানায়, কাজ কতটা এগোল, তা দেখে পরের কিস্তির টাকা দেওয়া হবে। রাজেশবাবু বলেন, ‘‘গ্রামের অনেকের বৌয়ের হাতে স্মার্টফোন দেখতাম। আমারও ইচ্ছা ছিল বৌকে মোবাইল ফোন উপহার দেওয়ার। কিন্তু ও যে এত রেগে যাবে তা বুঝিনি।’’ লক্ষ্মীদেবী জানান, শৌচাগারের কাজ কবে শুরু হবে জানতে চাইলেই হরেক অজুহাত দিতেন তাঁর স্বামী। বরের মাথায় যে অন্য কিছু ঘুরছে তা কখনওই তিনি টের পাননি।
আরও পড়ুন:হাহাকার ঘিরে শুধু তরজাই
ফোন ভেঙে একটুও অনুতপ্ত নন লক্ষ্মীদেবী। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, টাকা জোগাড় করে শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু করতেই হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে রান্না হবে না। সব কথা জেনে ধানবাদ নগর নিগমের আঞ্চলিক কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের দেওয়া ৬ হাজার টাকা দিয়ে শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু না করলে রাজেশের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে।’’
ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার করেছেন রাজেশ। শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি বলছেন, ‘‘এ বার থেকে আগে জিজ্ঞাসা করেই বৌয়ের জন্য উপহার কিনব। নেড়া বেলতলায় এক বারই যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy