Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘হিরো’ নই, কাশ্মীরিদের বাঁচিয়ে বলছেন রিজভি

মারধর এবং হেনস্থার ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিয়ো করেছিল ওই সংগঠনেরই এক জন। সেটি ভাইরাল হয়। তাতে দেখা গিয়েছে রিজভিকেও। এখন এই যুবককেই ধন্য ধন্য করছেন সবাই। কিন্তু একের পর এক ফেসবুক পোস্টে রিজভি বলেছেন, তিনি রাতারাতি কোনও ‘হিরো’ হতে চান না।

 জ়াফর রিজভি

জ়াফর রিজভি

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

দু’দিন আগে বিকেলে লখনউয়ের ডালিগঞ্জ এলাকায় দুই কাশ্মীরি ফল বিক্রেতার উপরে চড়াও হয়েছিল একটি দক্ষিণপন্থী সংগঠনের কয়েক জন সমর্থক। সে সময়ে ফল বিক্রেতাদের বাঁচাতে ছুটে যান স্থানীয় যুবক জ়াফর রিজভি। তিনি দ্রুত হস্তক্ষেপ করেন এবং ফল বিক্রেতাদের বাঁচান।

মারধর এবং হেনস্থার ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিয়ো করেছিল ওই সংগঠনেরই এক জন। সেটি ভাইরাল হয়। তাতে দেখা গিয়েছে রিজভিকেও। এখন এই যুবককেই ধন্য ধন্য করছেন সবাই। কিন্তু একের পর এক ফেসবুক পোস্টে রিজভি বলেছেন, তিনি রাতারাতি কোনও ‘হিরো’ হতে চান না। তাঁর মতে, ‘‘অন্যদের ‘হিরোগিরি’র প্রশংসা না করে সব মানুষ বরং চেষ্টা করুক ‘হিরো’ হতে।’’ সংবাদমাধ্যমের কেউ কেউ মুখোমুখি হয়েছেন রিজভির। তখন এই যুবক বলেছেন, ‘‘এটা আমার কর্তব্য ছিল। আমি বাঁচিয়েছি। এ নিয়ে আর কী বলব?’’

রিজভির প্রশংসা করে আজ টুইট করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। রাহুল ওই ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীরি ফল বিক্রেতাদের উপরে হামলা দেখে বিরক্ত হয়েছি। কিন্তু হামলাকারীদের যিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন, সেই সাহসী মানুষটিকে স্যালুট জানাতে চাই। ভারত প্রত্যেক নাগরিকের। আমাদের কাশ্মীরি ভাইবোনদের উপরে হামলার কড়া নিন্দা করছি।’’

আরও পড়ুন: সন্ত্রাস প্রশ্নে মিছিলে, বইয়ে সরব মমতা

শিল্পপতি হর্ষ গোয়েন্কাও ভিডিয়োটি পোস্ট করে টুইট করেছেন, ‘‘শালীনতা এবং আভিজাত্য লখনউয়ের সংস্কৃতির ভিত্তি। তবু গেরুয়া পোশাকের কিছু গুন্ডা কাশ্মীরিদের ভয় দেখাচ্ছে। এই ধরনের লোকেদের জন্যই আমাদের দুর্নাম হয়। এক জন শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে এসেছেন— লখনউয়ের এই নবাবি ‘স্পিরিট’কে ধন্যবাদ।’’

গত কাল দক্ষিণপন্থী সংগঠনের সমর্থকরা ওই দুই কাশ্মীরিকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলেছেন। এমনকি তাঁদের আধার কার্ডও দেখতে চায় হামলাকারীরা। সংগঠনের চার জনকে গত কালই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আজ শুকনো ফলের পসরা সাজিয়ে ফের ডালিগঞ্জের পথে বসেছিলেন মহম্মদ আফজল নাইক এবং আব্দুল সালাম নামে ওই দুই কাশ্মীরি ফল বিক্রেতা। যেখানে আগে বসতেন, সেখানে আজ না বসলেও ক্রেতার কোনও অভাব হয়নি। আব্দুল বলেছেন, ‘‘পুলিশ আমাদের সাহায্য করেছে।’’ তাঁদের অস্থায়ী জায়গায় বসার ব্যবস্থা করে দেয় ‘অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশন।’ আব্দুলের আর এক বন্ধু মুস্তাক বলেন, ‘‘আমরা ২২ বছর ধরে এখানে আসছি। লখনউয়ের মানুষ আমাদের খুব ভালবাসেন। বাড়ির থেকেও এখানে নিজেদের নিরাপদ মনে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Zafar Rizvi Mob Violence Kashmiri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE