ফের সেই গাঁধী ময়দান এবং নরেন্দ্র মোদীর সফর। ফলে আতঙ্কে বিহার পুলিশ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সতর্ক বার্তা এসেছে, হামলা হতে পারে। অতএব থরহরিকম্প রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে। গাঁধী ময়দানে হাজির বিহার পুলিশের পদস্থ কর্তারা। আইজি (অপারেশন) সুনীল খোপরের সঙ্গে এসপিজি-র আইজি পীযূষ পাণ্ডেকে আলোচনা করতে দেখা গেল। পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের অফিসার পীযূষকে পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন সুনীল। এই গাঁধী ময়দানেই প্রায় দু’বছর আগে তত্কালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর সভায় হামলা করেছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গিরা। তবে এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি বিহার পুলিশের ‘টপ প্রায়োরিটি’।
আজ দুপুরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সর্তকতা জারি হওয়ার পরে সচিবালয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব অঞ্জনিকুমার সিংহ। বৈঠকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বারবার যাচাই করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সাংবাদিক, বিদ্যুৎ মিস্ত্রি, শ্রমিক অথবা মহিলা সেজে এই হামলা হতে পারে বলে গোয়েন্দাদের খবর। পাঁচ জনের জঙ্গিদের একটি দল নেপাল সীমান্ত দিয়ে বিহারে ঢুকতে পারে বলে বার্তায় জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান স্থলের একশো মিটারের মধ্যে বিশেষ অনুমতিপত্র ছাড়া কেউ যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। পটনা ও মুজফ্ফরপুর জেলা প্রশাসন আলাদা আলাদা দু’টি রিপোর্টও তৈরি করেছে। সেই রিপোর্ট রাজ্য সচিবালয়ে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি দেখভাল করছেন খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি পি কে ঠাকুর। প্রধানমন্ত্রীকে মালা বা ফুলের তোড়া দেওয়া যাবে না বলে আয়োজকদের সাফ জানানো হয়েছে।
সকালে বিমানবন্দরে নেমে পশু চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে শ্রীকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হলে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচারাল রিসার্চের (আইসিএআর) অনুষ্ঠান। দেশের নাম করা কৃষি বিজ্ঞানীরা থাকবেন সেখানে। গোয়েন্দা সতর্কতার কথা স্বীকার করেছেন সুনীল খোপরে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তারা কথায়, ‘‘পটনা-সহ সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আমরা নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করছি।’’ প্রয়োজনে বদলাতে পারে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথও। এর আগে, ২০১৩ সালের নভেম্বরে সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও তত্কালীন নীতীশ সরকারের পুলিশ সে ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছিল।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ দুয়েক আগে পটনা শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকেই উদ্ধার হয়েছে একশো কেজি বিস্ফোরক-সহ আধুনিক প্রযুক্তির সরঞ্জাম। বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে দিল্লি ও কলকাতা থেকে এনএসজি-র দলকে হাজির হতে হয় পটনায়। বিস্ফোরক জমা করায় ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের হাত রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ। এই প্রেক্ষিতে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় এসপিজি ও বিহার পুলিশ। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঠেলায় বেলি রোড, ডাকবাংলো মোড়-সহ গোটা এলাকায় আজ থেকেই শুরু হয়েছে তল্লাশি। প্রতিটি গাড়ি, মোটরবাইক আটকে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বাদ দেওয়া হচ্ছে না সাইকেল ও রিকশাও।
পটনা শহর দুর্গের চেহারা নিয়েছে। গাড়িতে ঘুরছে পুলিশ কর্মীরা। নিরাপত্তার কাজে লাগানো হয়েছে আধা-সামরিক বাহিনীকেও। এরই মধ্যে আগামী কাল বিহার বন্ধের ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা। পটনা বা মুজফ্ফরপুর শহরে না হলেও উত্তর বিহারের কিছু কিছু এলাকায় মাওবাদীদের প্রভাব রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy