জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। -ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসবাদ দমনে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা কী? সংবাদমাধ্যম চুপ থাকলে, সন্ত্রাসবাদও শেষ হয়ে যাবে। নয়াদিল্লিতে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে দু’দিনের এক আলোচনাসভায় সোমবার সন্ত্রাসে ইসলামাবাদের মদত নিয়ে সরব হন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সেই সভাতে তিনি সন্ত্রাসবাদ দমনে সংবাদমাধ্যমের নীতির বদল নিয়ে এই মন্তব্য করেন।
প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের এক পুরনো মন্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদীরা কোনও কিছু করল, আর তারপরও যদি সংবাদমাধ্যম সেটা না দেখায়, তাহলেই সন্ত্রাসবাদ ধ্বংস হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, ‘’সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জঙ্গিরা কেন খুন করে? তারা প্রচারের জন্য করে এ সব। কারণ তারা চায় এ ভাবে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করতে। যদি কোনও জায়গায় 10 জন মানুষকে খুন করা হয়, এবং কেউই সেটা জানতে না পারে তাহলে কেউই আতঙ্কিত হবে না। কারও সন্তানকে অপহরণ করে খুন করা হলে 500 মাইল দূরে থাকা আর এক মায়ের সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তা হতে থাকে।’’ সংবাদমাধ্যম যদি খবর প্রচার না করে, তাহলে কোনও মা-ই তাঁর সন্তানকে নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হবে না”।
এ কারণেই মিডিয়া পলিসিতে কিছু বদল আনারও প্রস্তাব রাখেন তিনি। যেমন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ে চলা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা, জঙ্গি দমনের বিশেষ বাহিনীগুলিকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। সংবাদমাধ্যমের থেকে তথ্য গোপন রাখলে, অনেক সময় তারা নিজেদের মতো ধরে নেয়, যার ফলে সমাজে আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ে। এমন যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভাল।
আরও পড়ুন: জিয়াগঞ্জ কাণ্ডের কিনারা! ২৪ হাজার টাকার জন্য খুন, আততায়ী গ্রেফতার সাগরদিঘি থেকে
এই আলোচনা সভার মূল বিষয় ছিল সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ায় ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সরব হওয়া। সোমবার অত্যন্ত কৌশলগত ভাবেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হন ডোভাল। তিনি বলেন, ‘‘ভারত দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের সন্ত্রাস নীতি নিয়ে সরব। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের উপরে সব থেকে বেশি চাপ রয়েছে এফএটিএফ-এর। সন্ত্রাস দমনের প্রশ্নে অন্য কোনও ভাবে পাকিস্তানের উপরে এর চেয়ে বেশি চাপ দেওয়া সম্ভব হত না।’’
ডোভাল জানান, সন্ত্রাসে মদত দেওয়াকে পাকিস্তান কেবল রাষ্ট্রীয় নীতি বানিয়ে ক্ষান্ত থাকেনি, তারা জঙ্গিদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রযুক্তিগত সাহায্যও পাচ্ছে জঙ্গিরা।’’
পাকিস্তানের এই ভূমিকাকে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সামনে আরও বেশি করে তুলে ধরা ও তার জন্য আরও বেশি করে প্রমাণ জোগাড়ের উপরে জোর দেন ডোভাল। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা, জঙ্গি দমনের বিশেষ বাহিনীগুলির প্রধানদের উদ্দেশ্যে ডোভালের পরামর্শ, ‘‘কোনও প্রমাণ নষ্ট করবেন না। কোনও দেশকে নিশানা করা আমাদের নীতি নয়। তবে প্রমাণ ও যুক্তির ভিতে দাঁড়িয়ে আমরা পাকিস্তানের ভূমিকাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy