বিপিন রাওয়ত।
পাকিস্তান সন্ত্রাস বন্ধ করলে এশিয়ান গেমসের জ্যাভেলিন থ্রো-এ সোনাজয়ী নীরজ চোপড়ার মতো সৌজন্য দেখাতে তৈরি ভারতীয় সেনা। পদকজয়ী সেনাকর্মীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আজ এ কথা জানান সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।
এশিয়াডে জ্যাভেলিন-এ ব্রোঞ্জ পান পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম। তাঁর সঙ্গে নীরজের সৌজন্য বিনিময়ের ছবি ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আজকের অনুষ্ঠানে রাওয়তকে প্রশ্ন করা হয়, সীমান্তে কি খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব বজায় রয়েছে? উত্তরে সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘পাকিস্তানকে আগে এগিয়ে আসতে হবে। তারা সন্ত্রাস বন্ধ করলে আমরাও নীরজ চোপড়ার মতো হতে রাজি।’’ ভারতের সঙ্গে আলোচনার দরজা খুলতে পাক সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়ার উদ্যোগ সংক্রান্ত খবরের প্রেক্ষিতে রাওয়তের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে, পূর্বসূরিদের পথে না হেঁটে ভারতের সঙ্গে ভাব জমাতে উদ্যোগী হয়েছেন বাজওয়া। জুলাইয়ের পাক ভোটের আগে রাওয়তের কাছে এমন বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। রাওয়ত অবশ্য তাতে সাড়া দেননি। ভারতীয় সেনার একটি সূত্র বাজওয়ার এমন উদ্যোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। প্রতিরক্ষার বিষয়ে ওয়াকিবহাল সূত্রের দাবি, সেনার সদর দফতর স্তরে এমন উদ্যোগের কোনও খবর নেই।
২০১৫ সাল থেকেই ভারত-পাক আলোচনা আটকে। সংবাদপত্রটি জানাচ্ছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও বিদেশনীতি যে হেতু সেনাই নিয়ন্ত্রণ করে, তাই নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান। তাঁর এমন সিদ্ধান্তের পিছনে যুক্তি ছিল, বিশ্বের সামনে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে ভারতের প্রবল চাপ। তিনি মনে করেছেন, পাক অর্থনীতির বেহাল অবস্থা সেনার লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে ধাক্কা নিয়ে আসতে পারে। বাণিজ্যের দরজা খুললে লাভ ইসলামাবাদের। পাশাপাশি, চিনের চাপও রয়েছে। সেখানে অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ করছে তারা। চিন চাইছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত গোলমাল মেটাক ইসলামাবাদ।
তবে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু কিংবা বন্ধ করার বিষয়টি ভারতীয় সেনা নিয়ন্ত্রণ করে না। ফয়সালা নয়াদিল্লির রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাতে। দু’দেশের মধ্যে এই ‘ব্যবস্থাগত জটিলতাতেই বাজওয়ার প্রস্তাব মুখ থুবড়ে পড়েছে’ বলে এক জন কূটনীতিককে উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে। বাজওয়ার উদ্যোগের সত্যতা কত টুকু, তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশাই রয়ে গিয়েছে। তবে পাক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী সেই সুরেই কথা বলেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা এগোতে চাই। ভারত-সহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাইছে পাকিস্তান।’’ আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ ব্যাপারে বাজওয়ার বক্তব্যকেই টেনে এনেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘জেনারেল বাজওয়ার কথাই ঠিক। কোনও একটা দেশেই শুধু নয়, সমৃদ্ধির খোঁজ মেলে গোটা অঞ্চলে। তাই পাকিস্তানকে দুর্বল করে ভারত এগোতে পারবে না।’’
তবে নয়াদিল্লির উপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে পাকিস্তান। সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে আজ ইসলামাবাদে ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy