Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শাস্তি উড়িয়ে অনশনে বসবেন কানহাইয়ারা

জরিমানার হুকুম নিয়ে তড়িঘড়ি কিছু বলেননি গত কাল। জেএনইউয়ের ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার আজ হুঙ্কার দিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ জানাবেন তদন্ত রিপোর্ট পুড়িয়ে। বসবেন অনশনেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:০৪
Share: Save:

জরিমানার হুকুম নিয়ে তড়িঘড়ি কিছু বলেননি গত কাল। জেএনইউয়ের ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার আজ হুঙ্কার দিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ জানাবেন তদন্ত রিপোর্ট পুড়িয়ে। বসবেন অনশনেও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে আফজল গুরুর ফাঁসির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানে হাজির থাকার অপরাধে কানহাইয়ার দশ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। গত ৯ ফেব্রুয়ারির ওই অনুষ্ঠানটি নিয়ে জেএনইউয়ের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তার ভিত্তিতেই উপাচার্য এম জগদীশ কুমার কাল মোট ১৪ জনের শাস্তি ঘোষণা করেছেন। ওই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা হিসেবে উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, মুজিব গাট্টুদের এক বা একাধিক সেমিস্টারের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। হস্টেলের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কয়েক জনের জন্য।

গত কালই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিল। বলেছিল, একতরফা তদন্ত হয়েছে। কেন্দ্রের শাসক দলের চাপেই এই শাস্তি ঘোষণা। পরের পদক্ষেপ ঠিক করতে কাল রাত থেকেই দফায় দফায় বৈঠক করেন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা। আজও বৈঠক চলে দিনভর। এর পর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছাত্রদের উদ্দেশে কানহাইয়া ঘোষণা করেন, ‘‘আমরা কেউ ওই রিপোর্ট মানছি না। একতরফা তদন্ত হয়েছে। তাই জরিমানা দেওয়ার প্রশ্নই নেই।’’

কানহাইয়ারা শুরু থেকেই ওই তদন্ত কমিটির বিরোধিতা করে আসছিলেন। ছাত্রদের বক্তব্য ছিল, তদন্ত কমিটির প্রধান রাকেশ ভাটনগর পক্ষপাতদুষ্ট। তিনি নীতিগত ভাবে সংরক্ষণ-বিরোধী। কানহাইয়ার কথায়, ‘‘মানসিকতাই যাঁর এই ধরনের, তাঁর কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য প্রথম থেকেই ওই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলাম আমরা। তা ছাড়া, উমর খালিদ ও অনির্বাণ জেলে থাকায় তাঁরা নিজেদের বক্তব্য রাখারও সুযোগ পাননি। কমিটি একতরফা রিপোর্ট দিয়েছে।’’ তাই ওই রিপোর্ট বাতিলের দাবিতে কাল থেকে অনশনে বসবেন কানহাইয়ারা। পোড়াবেন ওই রিপোর্টের কপি। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপিকে খুশি করতেই পড়ুয়াদের শাস্তির বিধান দিয়েছেন উপাচার্য। রাজ্যসভায় আজ এই শাস্তিকে অনৈতিক আখ্যা দেন সিপিআই নেতা ডি রাজা। এ নিয়ে সভায় আলোচনারও দাবি তোলেন তিনি। সমর্থন জানায় সিপিএম। যদিও সে দাবি মানা হয়নি।

ক্যাম্পাসে আফজল গুরুর ফাঁসির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠান করতে বারণ করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কানহাইয়াও দাবি করে এসেছেন, এমন অনুষ্ঠানে তাঁর সমর্থন ছিল না। আয়োজকদের সঙ্গে বিজেপির ছাত্রসংগঠন এবিভিপির ঝামেলা বেধে যাওয়ায় তা মেটাতেই তিনি অনুষ্ঠানস্থলে গিয়েছিলেন। যদিও এবিভিপি-শিবিরের দাবি, কানহাইয়া ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবেই জড়িত ছিলেন। তিনি মোটেই ঠিক কথা বলছেন না। আর এখন জেএনইউ ক্যাম্পাসে যাঁরা আফজল গুরুর সমর্থনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন, তাঁদের জন্য এবং তাঁদের পাশে নিয়েই কাল থেকে আন্দোলন করতে চলেছেন সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠনের এই নেতাটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

JNU Kanhiya Kumar Punishment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE