সংগৃহীত ছবি।
‘পবিত্র’ গরুর মড়ক লেগেছে বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে।
গরু মারলে যারা হই হই করে ওঠেন, সেই বিজেপি-র হাতে থাকা গ্বালিয়রের সরকারি গোশালায় গরুর মড়ক লাগায় বিব্রত রাজ্য সরকার আর শাসক দলের ‘পকেট’-এর পুরসভার মধ্যে ‘ইট ছোড়াছুড়ি’ শুরু হয়ে গিয়েছে। চলছে চাপান-উতোর। দায় এড়াতে গ্বালিয়র পুরসভা দোষ চাপাচ্ছে সরকারি কেয়ারটেকারের ঘাড়ে! আর সরকারি কেয়ারটেকাররা বলছেন, ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ পুরসভারই!
ঘটনা হল, গ্বালিয়র পুরসভা এলাকার সরকারি গোশালায় গত ৪ মাসে ১,২০০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। মানে, ফি মাসে গড়ে ৩০০টি গরু মরেছে খাস সরকারি গোশালাতেই! রহস্যজনক ভাবেই।
শুধু তাই নয়, একটা গরু মারলে বা তাকে কসাইখানায় নিয়ে যাওয়া হলে যখন গোরক্ষকরা তুমুল হই চই বাধাচ্ছেন, মারধর করছেন, হচ্ছে খুনোখুনি আর তা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ একের পর এক ঘটনায়, তখন গ্বালিয়রের সরকারি গোশালায় যে গত ৪ মাসে ‘পবিত্র’ ১,২০০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে, সেই খবর ধামাচাপা দেওয়ার যথাসম্ভব চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে ‘গোপ্রেমী’ বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার। স্থানীয় বাসিন্দারা খানদশেক গরুর কঙ্কাল, হাড়গোড়ের হদিশ আর দুর্গন্ধ না পেলে ‘কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরতো’ না! কাকপক্ষীও টের পেত না!
স্থানীয় বাসিন্দাদের দৌলতে সেই খবর জানাজানি হওয়ার পর গোশালার সরকারি কেয়ারটেকার আর গ্বালিয়র পুরসভার মধ্যে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- চিনের দিকে নজর রাখতে লাদাখে উট নিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী
আরও পড়ুন- পেশ তিন তালাক বিল, কিছু সংশোধন চায় কংগ্রেস
গ্বালিয়র মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের পশু চিকিৎসক উপেন্দ্র যাদব বলেছেন, ‘‘বেশ কয়েকটি গরুর অটোপ্সি করে দেখা গিয়েছে, তারা পলিথিন, সিঁদুর আর কাচের টুকরো খেয়েছিল।’’ তাঁর প্রশ্ন, সরকারি গোশালায় এই সব ঢোকে কী ভাবে? কী করছিলেন সরকারি কেয়ারটেকাররা?
এত গরু মরার খবর ধামচাপা দেওয়ার চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন।
গ্বালিয়র শহরের মেয়র বিবেক নারায়ণ সেজওয়াকার বলেছেন, ‘‘শুধুই গরু মরেনি। মোষ মরেছে, বাছুর মরেছে। যাঁড় মরেছে। আর সেগুলি ছিল স্থানীয় গ্রামবাসীদের। গোশালার নয়। অন্ত্র ও পাচন নালীর পথ সেই পলিথিন রুখে দিয়েছিল বলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।’’
কী বলেছেন গোশালার সরকারি কেয়ারটেকার?
সরকারি কেয়ারটেকার স্বামী ঋষভানন্দের কথায়, ‘‘গোশালার যা কাঠামো আর যে ভাবে অত গাদাগাদি করে গরু রাখা হয় সেখানে, তাতে এমন ঘটনা না ঘটলেই অবাক হতে হত। সুস্থ আর অসুস্থ গরুদের একই সঙ্গে পাশাপাশি রাখা হয় গোশালায়। ফলে সুস্থ গরুদেরও অসুস্থ হয়ে পড়তে বিশেষ সময় লাগে না।’’
এর দায় চাপে গ্বালিয়র পুরসভারই ঘাড়ে।
সমাজকর্মী সুধীর সাপরা বলেছেন, ‘‘পুরসভা অনর্থক কেয়ারটেকারের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। অনাহার আর চিকিৎসার অভাবেই দেদার গরু মরেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy