সৌজন্য: করুণানিধির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে রাহুল গাঁধী ও সীতারাম ইয়েচুরি। শনিবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে দ্রাবিড় রাজনীতির বর্ষীয়ান নেতা এম করুণানিধির ৯৪তম জন্মদিনকে সামনে রেখে একজোট হল বিরোধী দলগুলি।
করুণানিধির জন্মদিন ও তাঁর বিধায়ক জীবনের ৬০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে চেন্নাইয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ডিএমকে। সেই অনুষ্ঠানে এ দিন হাজির হয়েছিলেন রাহুল গাঁধী, নীতীশ কুমার, ওমর আবদুল্লা, সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজারা। প্রতিনিধি পাঠান শরদ পওয়ারও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে চেন্নাইয়ে পৌঁছন তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন। অনুষ্ঠানের আগে করুণানিধি-পুত্র এম কে স্ট্যালিন এ দিন তাঁর বাসভবনে চায়ের আসরে মিলিত হন রাহুলের সঙ্গে। দুই নেতার মধ্যে একান্তে আধ ঘণ্টা কথাবার্তা হয়। পরে বিরোধী নেতারা সন্ধেয় জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ ছবিকে ফুটিয়ে তোলেন। নরেন্দ্র মোদী-বিরোধী নেতারা এক মঞ্চে এলেও অসুস্থতার কারণে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিজেই হাজির থাকতে পারেননি করুণানিধি। চেন্নাইয়ে এ দিন হাজির হননি লালুপ্রসাদও। তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনাও শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, নীতীশের জন্যই লালু অনুষ্ঠান এড়িয়ে গিয়েছেন। কারণ, ২৬ মে দিল্লিতে সনিয়া গাঁধীর দেওয়া ভোজসভায় যাননি নীতীশ। পরে যদিও অন্য একটি বিষয়কে সামনে রেখে মোদীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ লালুপ্রসাদ। তবে নীতীশ আজ বলেন, জ্বর হওয়াতেই চেন্নাইয়ে আসতে পারেননি লালুপ্রসাদ। তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে এর বেশি কিছু ভাবার দরকার নেই।
ডিএমকে নেতার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই রাহুল গাঁধী মোদীকে নিশানা করেন। অভিযোগ করেন, সরকার যা খুশি তাই করছে। নোট বাতিল নিয়েও তোপ দাগেন রাহুল। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ায় মোদীর পক্ষে মাঠে নেমে অরুণ জেটলি যুক্তি দিয়েছিলেন, নোট বাতিলের জন্য বৃদ্ধির হার কমে গিয়েছে— এমন ভাবার কারণ নেই। রাহুল এ দিন কটাক্ষ কবেন, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তই তো আগাম জানতেন না অর্থমন্ত্রী!
চেন্নাইয়ে করুণানিধির গোপালগঞ্জের বাসভবনে সকাল থেকেই ছিল উৎসবের পরিবেশ। সাজানো হয়েছিল বাসভবন, মিষ্টি বিলিয়েছেন সমর্থকরা। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়ির বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন মানুষ। করুণানিধিকে অনলাইনে শুভেচ্ছা জানানোর ব্যবস্থাও করেছিল ডিএমকে। আর সব কিছুরই দায়িত্বে ছিলেন দলের কার্যকরী সভাপতি স্ট্যালিন। অসুস্থতার কারণে করুণানিধি কর্মীদেরও সামনে আসতে পারেননি। তবে তাঁর একটি ভিডিও জারি করা হয়েছে। অনেকেই অবশ্য বলছেন, বাবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কার্যত জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক হল পুত্র স্ট্যালিনের।
৯৪-তম জন্মদিনে বারবার সামনে এসেছে করুণানিধির দীর্ঘ রাজনৈতিক ইনিংসের কথা। ডিএমকের শীর্ষ নেতা করুণানিধি ১৯৫৭ সালে প্রথমবার বিধায়ক হন অবিভক্ত তিরুচিরাপল্লীর কুলাইথালাই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। তার পর রাজ্য রাজনীতিতে জয়ললিতা-ঝড়ের মুখে কখনও খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে তাঁর দল। কিন্তু দীর্ঘ ছয় দশক এক বারের জন্যও ভোটে হারেননি করুণানিধি। ৪৫ বছর বয়সে প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার পর সব মিলিয়ে পাঁচবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy