Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মানিকের বক্তৃতা নিয়ে সুর চড়াচ্ছে দু’পক্ষই

প্রসার ভারতীর সিদ্ধান্তের পিছনে মোদী সরকারের যে পূর্ণ সম্মতি রয়েছে, মন্ত্রীর কথাতেই তা স্পষ্ট। কাল চুপ থাকার পরে আজ আগরতলা দূরদর্শন কেন্দ্রের অধিকর্তা এক বিবৃতি জারি করে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বা বক্তৃতা বন্ধ করা হয়নি।

মানিক সরকার।

মানিক সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও আগরতলা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৩
Share: Save:

স্বাধীনতা দিবসে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বক্তৃতা আটকে দেওয়ার বিতর্কে ঢুকে পড়লেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। ঘটনায় সামনে এল সিপিএম বনাম আরএসএস-বিজেপির লড়াইও।

স্বাধীনতা দিবসের এক দিন আগে মানিক সরকারকে চিঠি লিখে আগরতলার দূরদর্শনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রচার বিধি অনুযায়ী তাঁর বক্তৃতা নতুন করে সাজানো হোক। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও বিজেপির পক্ষ থেকে এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করা না হলেও আজ দিল্লিতে মোদী সরকারের এক শীর্ষ মন্ত্রী বলেন, ‘‘কেরলে মোহন ভাগবতকে যদি জাতীয় পতাকা তুলতে আপত্তি জানায় সিপিএম সরকার, তা হলে মানিক সরকারের বক্তৃতা ঠিক করতে বলাতে অসুবিধে কোথায়? দূরদর্শন, প্রসার ভারতীর নির্দিষ্ট বিধি সকলকেই মেনে চলতে হয়।’’

ভাগবতকে পতাকা তোলার অনুমতি না দেওয়াতেই কি তা হলে পাল্টা কোপে পড়লেন মানিক?

প্রসার ভারতীর সিদ্ধান্তের পিছনে মোদী সরকারের যে পূর্ণ সম্মতি রয়েছে, মন্ত্রীর কথাতেই তা স্পষ্ট। কাল চুপ থাকার পরে আজ আগরতলা দূরদর্শন কেন্দ্রের অধিকর্তা এক বিবৃতি জারি করে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বা বক্তৃতা বন্ধ করা হয়নি। বরং প্রায় আধঘণ্টা দেখানো হয়েছে। আজ সেটির পুনঃপ্রচারও করা হয়।’’

দূরদর্শনের এই বিবৃতিতে অবশ্য চিঁড়ে ভিজছে না। দিল্লিতে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, মোহন ভাগবতের বক্তৃতা দূরদর্শনে সম্প্রচার হয়। অথচ জনতার প্রতি তাঁর কোনও দায়বদ্ধতা নেই। যে মুখ্যমন্ত্রীর আছে, তাঁর কণ্ঠরোধ হচ্ছে। রাজ্যের অধিকারে এই আঘাত ইন্দিরা জমানার জরুরি অবস্থার থেকেও বেশি, মন্তব্য করেন তিনি। সব অ-বিজেপি রাজ্যকেই সরব হওয়ার আহ্বান জানান সীতারাম।

সিপিএমের সুরে সুর মিলিয়ে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদও বলেন, ‘‘কাল রাতে রেডিওয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিটি বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পতাকা উত্তোলনের কথা বলা হলো। কিন্তু বিরোধী দলের কোনও মুখ্যমন্ত্রীর উল্লেখ করা হলো না।
একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলা হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করা হয়নি। এর থেকেই স্পষ্ট, সরকারি গণমাধ্যম কী ভাবে বিকিয়ে গিয়েছে। তার চেয়ে সরকার কেন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে দিচ্ছে না!’’

বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, এ সব কথা কংগ্রেস-সিপিএমের মুখে মানায় না। কংগ্রেসই জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। আর ভাগবতকে জাতীয় পতাকা তোলার অনুমতি দেয়নি কেরল সরকার। তাদের আপত্তি ছিল, স্কুলে শিক্ষক ও ছাত্র ছাড়া কোনও নেতা এ কাজ করতে পারবেন না। আরএসএসের মনমোহন বৈদ্য বলেন, এই ফরমান আর কোনও স্কুলে দেওয়া হয়নি। তবু হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে সরসঙ্ঘচালক পতাকা তুলেছেন। স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনেও সিপিএমের বিভাজনের রাজনীতি অব্যাহত, দাবি আরএসএসের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE