Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Air Pollution

দূষণে সেরা চোদ্দো শহরই ভারতের

যা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও। তালিকায় কলকাতা কিন্তু নেই। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ০৩:২৯
Share: Save:

জগৎসভায় ‘শ্রেষ্ঠ’ আসন ভারতের। উন্নয়ন বা দুর্নীতি-দমনে নয়, দূষণে! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সম্প্রতি বায়ুদূষণের নিরিখে দুনিয়ার ‘সেরা’ ২০টি শহরের তালিকা প্রকাশ করেছে, তার প্রথম ১৪টি শহরই ভারতীয়। তাতে কানপুর, ফরিদাবাদ, বারাণসীর পাশাপাশি রয়েছে দিল্লিও। যা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও। তালিকায় কলকাতা কিন্তু নেই।

এই নিয়ে অবশ্য আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে স্বস্তির কারণ নেই। খুব সতর্ক থাকতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে তালিকায় ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’

রিপোর্টে প্রকাশ, বিশ্বের বায়ুদূষিত মহানগরীগুলির মধ্যে সেরার শিরোপা জিতেছে দিল্লি। চতুর্থ স্থানে মুম্বই। পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এর কর্ণধার সুনীতা নারায়ণের মতে, ‘‘এই রিপোর্ট ভারতে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কড়া সতর্কবার্তা।’’ হু-র জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধিকর্তা মারিয়া নেইরার মতে, এই সব শহরের বায়ু তাঁদের নির্ধারিত সহনমাত্রার থেকে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি বিষাক্ত।

হু-র মতে, বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের কাছে পরিশুদ্ধ জ্বালানি নেই। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মোদীর বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ দেওয়ার প্রকল্পের প্রশংসা করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে চার হাজারের বেশি শহরের তথ্য নিয়ে এই সমীক্ষা হয়েছে। সেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বিশ্বের প্রতি দশ জনের মধ্যে ন’জনই দূষিত বায়ুর শিকার। এই দূষণে প্রতি বছর অন্তত ৭০ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে এবং তার বেশির ভাগই নিম্ন এবং মাঝারি আয়ের দেশের নাগরিক। পরিবেশবিদরা বলছেন, বায়ুদূষণ এই হারে বাড়লে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের ক্যানসার, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপি়ডি)-এর প্রকোপ বাড়বে।

এ দেশে সার্বিক ভাবে দূষণে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে কানপুর। তার পরে ফরিদাবাদ, গয়া, বারাণসী। এর পিছনে ডিজেলচালিত গাড়ির ধোঁয়া যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বিভিন্ন নির্মাণস্থল থেকে উড়ে আসা ধুলো, ভাগাড়ে বর্জ্য পো়ড়ানোর ধোঁয়া এবং বিভিন্ন দূষিত কলকারখানাও।

পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, বায়ুদূষণের ছবি গোটা দেশেই কমবেশি সমান। কলকাতা, চেন্নাইয়ের মতো উপকূলবর্তী কিছু শহরে ভারী বৃষ্টির জন্য বছরের কয়েক মাস বাতাস প্রাকৃতিক নিয়মে পরিশুদ্ধ হয়। কিন্তু দূষণের উৎস কিন্তু বাড়ছে বই কমছে না। সিএসই-র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুমিতা রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘রাজ্যগুলিরও বায়ুদূষণ রোধে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করা প্রয়োজন। বাতাসে সুক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫) আরও নিবিড় ভাবে পরিমাপ করা দরকার।’’ কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘এ কথা মাথায় রেখেই আমরা দূষণ রোধের বিস্তারিত রূপরেখা তৈরি করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Pollution Air Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE