Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পরিবেশ শরণার্থী নিয়ে চিন্তায় ভারত

পোলান্ড বৈঠকে আরও একটি বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হবে। উষ্ণায়ন যে দিকে যাচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে অভিধানে একটি নতুন শব্দ যোগ করতে হতে পারে। ‘পরিবেশ–শরণার্থী’।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৮
Share: Save:

উষ্ণায়ন নিয়ে পোলান্ডে রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠক বসছে আগামী মাসে। তার আগে ভারত-সহ সমমনস্ক উন্নয়নশীল দেশগুলি (এলএমডিসি) দিল্লিতে বসে নিজেদের কৌশল স্থির করল। সূত্রের খবর, আসন্ন বৈঠকে উষ্ণায়ন রুখতে ঠিক কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তার জবাবদিহি চাওয়া হবে ধনী দেশগুলির কাছে। ‘পরিবেশ শরণার্থী’ নিয়ে আশঙ্কার কথাও তুলে ধরা হবে।

ভারত, চিন, মালয়েশিয়া, মিশর-সহ ২৪টি দেশের গোষ্ঠী এলএমডিসি একটি যৌথ ঘোষণাপত্র তৈরি করেছে। প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে পোলান্ডে প্রত্যেকটি দেশের নিজস্ব কৌশল ও প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা। পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘আমরা পোলান্ড বৈঠকে উন্নত দেশগুলির কাছে জানতে চাইব, ২০২০ সালের ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন’ যোজনা নিয়ে তারা কত দূর এগিয়েছে? ধনী দেশগুলি এই খাতে তাদের আর্থিক প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করেছে, তা-ও জানতে চাওয়া হবে।’’

পোলান্ড বৈঠকে আরও একটি বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হবে। উষ্ণায়ন যে দিকে যাচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে অভিধানে একটি নতুন শব্দ যোগ করতে হতে পারে। ‘পরিবেশ–শরণার্থী’।

ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের আশঙ্কা, বঙ্গোপসাগরের পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে দূষণ ও উষ্ণায়নের প্রকোপ মারাত্মক হবে অদূর ভবিষ্যতে। তার ফলে ভারতে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী চলে আসতে পারে বলে আশঙ্কা দিল্লির। কারণ, উষ্ণায়নের জেরে বঙ্গোপসাগরের লাগোয়া কিছু দেশের উপকূল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ, মায়ানমার তো রয়েছেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু অংশের ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে পরিবেশ-শরণার্থী (ক্লাইমেট রিফিউজি)-র একটি বড় অংশ ভারতে আসতে পারে বলে মনে করছে দিল্লি।

উদ্বেগ বাড়িয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘ইন্টার গভর্মেন্টাল প্যানেল’-র একটি রিপোর্টও। সেখানে বলা হয়েছে যুদ্ধকালীন ত়ৎপরতায় উষ্ণায়নের মোকাবিলা না করলে সামনে বড় বিপদ। যে হারে উষ্ণতা বাড়ছে তা যদি অব্যাহত থাকে, তা হলে ২০৩০ থেকে ২০৫২ সালের মধ্যে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বেড়ে যাবে পৃথিবীর। বিশ্বের বেশ কিছু অংশে থাকা-বাঁচাই কঠিন হয়ে পরবে। সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে উপকূলবর্তী বহু ভূখণ্ড জলমগ্ন হয়ে পড়বে। খাদ্য ও পানীয় জলের এমন সঙ্কট তৈরি হবে যে, বহু মানুষকে তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিতে হবে। সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার প্রশ্নও উঠবে। ফলে ভূকৌশলগত সুস্থিতি নিরাপত্তা নিয়ে বড় মাপের প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE