আরও এক ইতিহাসের সাক্ষী রইল গোটা দেশবাসী। ভারত পেল বিমানবাহিনীর প্রথম তিন মহিলা পাইলট— মধ্যপ্রদেশের আভানি চতুর্বেদী, বিহারের মোহনা সিংহ এবং রাজস্থানের ভাবনা কান্থ। শনিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের উপস্থিতিতে এই তিন কন্যাকে যুদ্ধবিমানের ককপিটে বসার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। আগেই ১৫০ ঘণ্টার উড়ানের প্রশিক্ষণের প্রথম ধাপ উতরে গিয়েছিলেন ভাবনা, আভানি, মোহনা। একের পর এক প্রশিক্ষণে সফল হওয়ার পরই ককপিটে বসার সুযোগ আদায় করে নিয়েছেন এই তিন কন্যা। এটা তাঁদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। বিশেষ করে যখন দীর্ঘ দিনের প্রথা ভেঙে মহিলাদের যুদ্ধবিমান ওড়ানোর ছাড়পত্র দেওয়ার ঘোষণা করেছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রক। সেই সুযোগকে হাতছাড়া করতে চাননি ভাবনারা। তাঁদের সাফল্যে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। যুদ্ধবিমান ওড়ানোর চূড়ান্ত পর্যায়ের সেই প্রশিক্ষণ নিতে তিন কন্যা হায়দারাবাদ থেকে এ বার কর্নাটকের বিদারে যাবেন। আগামী ছ’মাস প্রশিক্ষণের পর তাঁরা মিগ, সুখোই এবং মিরাজের ককপিটে বসবেন।
বায়ুসেনা সূত্রের খবর, তিন জনেই প্রথম ধাপে ‘পিসি সেভেন বেসিক ট্রেনার’ বিমান ৫৫ ঘণ্টা আকাশে ওড়ানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এর পর ‘কিরণ মার্ক-টু’ বিমানে দ্বিতীয় ধাপের প্রশিক্ষণও হয়েছে। হায়দরাবাদ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ এখানেই শেষ। এ বার তাঁদের ‘অ্যাডভান্সড জেট ট্রেনার’-এ প্রশিক্ষণ শুরু হবে। শব্দের থেকেও দ্রুতগামী যুদ্ধবিমান চালানোর সময়, বেশ কিছু পরিস্থিতিতে পাইলটদের শরীরে মাধ্যাকর্ষণের ন’গুণ পর্যন্ত চাপ পড়ে। ‘অ্যাডভান্সড জেট ট্রেনার’-এ ভাবনা-মোহনাদের শরীরে মাধ্যাকর্ষণের পাঁচ গুণ চাপ পড়বে।
সহকর্মীদের সঙ্গে উল্লাস তিন কন্যার।
এত দিন পর্যন্ত কোনও মহিলা পাইলটকে যুদ্ধবিমান চালানোর অনুমতি দেয়নি বায়ুসেনা। সেনার হেলিকপ্টার এবং কার্গো বিমান চালানো পর্যন্ত অনুমতি ছিল তাঁদের। এ বছরই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এ বার সেনাবাহিনীর কমব্যাট ফোর্সেও মহিলাদের সুযোগ দেওয়া হবে। সেই সুযোগটা প্রথম এনে দিল ভারতীয় বায়ুসেনা।
কী ভাবে এই পেশায় আসা? বিশেষ করে যখন এতটা ঝুঁকি রয়েছে যুদ্ধ বিমান ওড়ানোয়? প্রশ্নের উত্তরে মোহনা বলেন, “সেনাবাহিনীতে কাজ করে দেশের সেবা করতে চেয়েছিলাম। আর যুদ্ধ বিমান ওড়ানোর মতো কাজ তো একটা গর্বের বিষয়।” মোহনার বাবাও বিমান বাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার হিসাবে কাজ করেন। তাঁর ঠাকুর্দাও এই পেশায় ছিলেন। মোহনা বলেছেন, “পরিবারের অনেকের এই পেশাটাকেই বেছে নিতে চেয়েছি।”
আরও পড়ুন...
আসুন, আলাপ করে নিই দেশের যুদ্ধবিমানের প্রথম তিন মহিলা চালকের সঙ্গে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy