ভেঙে পড়া সেই এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তানি বিমান ভেবে নিজেদের কপ্টারে আঘাত হেনে এ বার শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ার অফিসার কম্যান্ডিং (এওসি)। গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, যা শেষ হতে সময় লাগবে আরও ২০ দিন। তবে বায়ুসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগেই দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে ওই এয়ার অফিসার কম্যান্ডিংকে। ১৯৫০ সালের বায়ুসেনা আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলার চার্জ গঠন করার চিন্তাভাবনা চলছে।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। তার একদিন পরেই নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতে প্রবেশ করে পাকিস্তানি বায়ুসেনার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। সেই এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তাড়া করতে গিয়েই পাকিস্তানে বন্দি হন বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান।
কিন্তু ওই দিন অভিনন্দন পাক বিমানের মোকাবিলা করার সময়েই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যায় কাশ্মীরের নৌশেরা সেক্টরে। রাশিয়ায় তৈরি বায়ুসেনার একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে সেখানে, যাতে ছ’জনের মৃত্যু হয়। শুরুতে বিষয়টি সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য পাওয়া না গেলেও, তদন্ত শুরু হওয়ার পর জানা যায়, শত্রুপক্ষের বিমান ভেবে কপ্টারটিকে লক্ষ করে ইজরায়েলে তৈরি ‘স্পাইডার’ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ভারতীয় বায়ুসেনা। তাতেই ভেঙে পড়ে সেটি।
আরও পড়ুন: কাঁকিনাড়া-সহ গোটা বাংলা নিয়ে কেশরীকে নালিশ বিজেপির, রাজ্যে কি এমার্জেন্সি? প্রশ্ন তৃণমূলের
আরও পড়ুন: ইভিএম কারচুপির অভিযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়
বায়ুসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানি বায়ুসেনার একঝাঁক যুদ্ধবিমান জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকে আসে, যার মধ্যে ছিল মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানও। তাদের রুখতে ভারতীয় বায়ুসেনার ৮টি যুদ্ধবিমান রওনা দেয়। এ ছাড়াও প্রস্তুত রাখা হয় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র, যাতে বেগতিক দেখলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়। সেই সময় শ্রীনগর বিমানবন্দরের রেডারে একটি উড়ন্ত যান ধরা পড়ে, যা মাটি থেকে অল্প উঁচু দিয়েই উড়ছিল। বিমান শত্রুপক্ষের না নিজেদের তা জানার জন্য সেখানে বিশেষ আইডেন্টিফিকেশন, ফ্রেন্ড অর ফো (আইএফএফ)ট্রান্সপন্ডার প্রযুক্তি থাকলেও, রেডারে ধরা পড়া ওই যানটি কাদের তা বুঝে উঠতে পারেননি সেখানে উপস্থিত লোকজন। ঘটনার সময় আইএফএফ প্রযুক্তি আদৌ সক্রিয় ছিল কিনা, তা-ও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তাই বিমান কাদের তা না জেনেই কেন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হল, তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ওঠে।
রেডারে বিমান শনাক্ত করার দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন টার্মিনাল ওয়েপন্স ডিরেক্টর(টিডব্লিউডি)। ঘটনার সময় যে সিনিয়র এয়ার অফিসার কম্যান্ডিং সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তার নির্দেশেই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তদন্তকারীদের। তাই তাঁকেই শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। এ ছাড়াও, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সময় যে সমস্ত নিয়মকানুন মানতে হয়, তা-ও মানা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে ধরা পড়েছে আরও গাফিলতি। শ্রীনগরে বায়ুসেনা ঘাঁটির এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy