Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছিবড়ের থালায় খাবার এক্সপ্রেসে

সর্বশেষ কালি লেগেছে পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেসে খাবারে বিষক্রিয়ার জেরে বেশ কিছু যাত্রীর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায়। খাবারের গুণমান খারাপ হয়ে যাওয়ার পিছনে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের পাত্রকেই দায়ী করছেন রেলকর্তারা। তাই এ বার থালা ফিরে আসতে চলেছে রেলে। ধাতব নয়, ছিবড়ের থালা!

ছিবড়ের থালা। নিজস্ব চিত্র

ছিবড়ের থালা। নিজস্ব চিত্র

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫০
Share: Save:

নিম্ন মানের খাবার, নষ্ট খাবার সরবরাহের অভিযোগ থেকে নিজেকে কিছুতেই মুক্ত করতে পারছে না রেল।

সর্বশেষ কালি লেগেছে পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেসে খাবারে বিষক্রিয়ার জেরে বেশ কিছু যাত্রীর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায়। খাবারের গুণমান খারাপ হয়ে যাওয়ার পিছনে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের পাত্রকেই দায়ী করছেন রেলকর্তারা। তাই এ বার থালা ফিরে আসতে চলেছে রেলে। ধাতব নয়, ছিবড়ের থালা!

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড টুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি-র গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র জানান, স্টেশনের ‘বেস কিচেন’ থেকে আখের ছিবড়ের থালায় খাবার সাজিয়ে উন্নত মানের প্লাস্টিক দিয়ে সিল করে দেওয়া হবে। ‘‘অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় এই থালা অধিকতর পরিবেশবান্ধব। এত দিন এঁটো ফয়েলকে বিশেষ পদ্ধতিতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে হত। আখের ছিবড়ের থালা স্বাভাবিক উপায়েই পচে মিশে যাবে পরিবেশে,’’ বলেন দেবাশিসবাবু।

রেলের একাংশের বক্তব্য, কয়েক বছর ধরে খাবার নিয়ে অভিযোগ আসছিল। কখনও খাবারে পাওয়া যাচ্ছিল আরশোলা বা অন্য পোকা। কখনও খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। কখনও বা বিষক্রিয়া হচ্ছিল। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়েই ফয়েল পাত্রের বিষয়টি সামনে আসে। আইআরসিটিসি-র কর্তারা জানান, ফয়েল পাত্রে খাবার পুরে কাগজ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হলেওতাতে ফাঁক থাকে। সেই ফাঁক দিয়ে পোকামাকড় ঢুকে প়ড়ে। তার ফলে বিষক্রিয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। নতুন পদ্ধতি তার তুলনায় অনেক উন্নত। কেন?

আইআরসিটিসি-কর্তারা জানান, ‘বেস কিচেন’ সরাসরি তাঁদের নজরদারিতে থাকে। সেখানে খাবার তৈরি করে পাত্রে ঢেলে সিল করে দেওয়া হবে। সিল না-কাটলে বাইরে থেকে খাবারে কিছু মিশতে পারবে না। সেই পাত্র ট্রেনে তুলে দেওয়া হবে। কর্মীরা খাবার পরিবেশন করলে যাত্রী নিজের হাতে সিল কেটে খাবার খেতে পারবেন। স্বচ্ছ প্লাস্টিকের দৌলতে উপর থেকেই বোঝা যাবে, কী খাবার আছে। মোড়কের উপরে কোন রান্নাঘরে খাবার তৈরি হয়েছে এবং ঠিক কখন তা সিল করা হয়েছে, তারও পরিষ্কার উল্লেখ থাকবে।

দেবাশিসবাবু জানাচ্ছেন, এই ব্যবস্থায় যাত্রীদের সুবিধার কথাও ভেবেছেন তাঁরা। ফয়েল থেকে খাবার খেতে সমস্যা হত। থালায় সেই সমস্যা থাকবে না। দামের দিক থেকেও সংস্থার খরচ কম হবে। রেল সূত্রের খবর, প্রথমে শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসে এই থালা চালু হবে। ধাপে ধাপে এই থালা দেওয়া হবে অন্যান্য ট্রেনেও।

পাত্র বদলের সুবাদে খাবার নিয়ে রেলের ধারাবাহিক অপবাদ ঘোচে কি না, সেটাই এ বার দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE