Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আসনে ভর্তুকি ছাড়ার আবেদনের পথে রেল

রেল সূত্রের খবর, বিপুল আর্থিক ঘাটতি মেটাতে বিভিন্ন ভাবে সাশ্রয়ের চেষ্টা করছে রেল। সরাসরি ভাড়া বাড়ানোর পথে না-গিয়ে ভর্তুকির বোঝা কমানোর উদ্যোগ তারই অঙ্গ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

সম্পন্ন বয়স্ক ট্রেনযাত্রীদের ভর্তুকির টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সাফল্য মিলেছে। এ বার সংরক্ষিত শ্রেণির টিকিটে ভর্তুকি ফিরিয়ে দিতে যাত্রীদের কাছে আবেদন জানানোর পথে হাঁটছে রেল। যাত্রী-ভাড়া খাতে ক্ষতির বহর কমাতেই অনেকটা রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ফিরিয়ে দেওয়ার ঢঙে এই আবেদন জানানো হতে পারে বলে রেল সূত্রের খবর। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বাতানুকূল কামরা তো বটেই, স্লিপার কামরার যাত্রীদেরও এই অনুরোধ করা হতে পারে।

রেল সূত্রের খবর, বিপুল আর্থিক ঘাটতি মেটাতে বিভিন্ন ভাবে সাশ্রয়ের চেষ্টা করছে রেল। সরাসরি ভাড়া বাড়ানোর পথে না-গিয়ে ভর্তুকির বোঝা কমানোর উদ্যোগ তারই অঙ্গ। একক ভাবে যাত্রী পরিবহণ খাতে ভর্তুকিজনিত কারণেই রেলে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার লোকসানের বোঝা রয়েছে। তার মধ্যে স্লিপার ক্লাসে ঘাটতির অঙ্ক প্রায় ১১ হাজার কোটি। প্রথম শ্রেণির বাতানুকূল কামরায় অঙ্কটা ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। দ্বিতীয় শ্রেণির বাতানুকূল কামরায় প্রায় ৭০০ কোটি। এসি থ্রি টিয়ারে অবশ্য সে-ভাবে লোকসানের বোঝা তেমন বড় নয়। এর বাইরে শহরতলির ট্রেন চালাতে গিয়ে রেলকে বিপুল ভর্তুকি দিতে হয়।

যাত্রীদের উপরে ভাড়ার চাপ কমাতে রেলে পরোক্ষ ভর্তুকির নীতি চালু আছে। পণ্য পরিবহণ খাতে আদায় করা উদ্বৃত্ত টাকা থেকে যাত্রী পরিবহণ খাতে ভর্তুকি দেয় রেল। বহু বছর ধরেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে। তা হলে আচমকা এই পরিস্থিতি কেন? চলতি আর্থিক বছরের শুরুতে বাজেটে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য ঠিক রাখতে গিয়ে রেলে প্রধান পণ্য পরিবহণকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে বছরভর ভাড়া না-বাড়ানোর শর্তে ভাড়া বাবদ অগ্রিম টাকা আদায় করা হয় বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই খাতে রেলের ঘরে আসে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। একই সঙ্গে আর্থিক বছরের শেষ দু’দিন রেলের যাবতীয় বিলের অর্থ মেটানো বন্ধ রাখা হয়। চলতি বছরে পণ্য পরিবহণ খাতে ওই টাকা তাই আয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকার সম্ভাবনা। শিল্পে বৃদ্ধির হার কম হওয়ায় পণ্য পরিবহণেও তার আঁচ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় লোকসানের বোঝা কী ভাবে কমানো যায়, মরিয়া হয়ে তার পথ খুঁজছেন রেল-কর্তৃপক্ষ।

টিকিটে ভর্তুকি ছাড়ের বিষয়টি কী ভাবে সামনে আনা হবে? রেলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্রে ফর্ম পূরণের সময় অথবা অনলাইনে টিকিট কাটার ক্ষেত্রে যাত্রীদের কাছে ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার জন্য ‘বিকল্প’ দেওয়া হতে পারে। সেই জন্য প্রচার চালানোর কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। রেলে প্রবীণ এবং প্রবীণাদের ক্ষেত্রে ভাড়ায় যথাক্রমে ৪০ এবং ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। বিগত আর্থিক বছরে সেই ছাড় ‘ঐচ্ছিক’ করে দেওয়া হয়। তার পরে ন’লক্ষেরও বেশি প্রবীণ যাত্রী ওই ছাড় গ্রহণ করেননি। তাতে ভর্তুকি বাবদ রেলের প্রায় ২৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সে-ভাবেই টিকিটে সরকারি ভর্তুকির অঙ্ক উল্লেখ করে তা গ্রহণের বিষয়টি ঐচ্ছিক করে দিতে চায় রেল। তবে তাতে কতটা সুরাহা হবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। রেলের আধিকারিকদের একাংশের মতে, বিপুল ঘাটতির বড়জোর এক-চতুর্থাংশ মিটতে পারে ওই খাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railway Rail Rail Ticket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE