Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ফ্লেক্সি ভাড়া আংশিক উঠে বাড়ল মাসুল

মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে আয় বাড়াতে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা চালু করে।

রেল জানিয়েছে, ১৪২টি ট্রেনে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা চালু ছিল। —ফাইল চিত্র।

রেল জানিয়েছে, ১৪২টি ট্রেনে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা চালু ছিল। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪২
Share: Save:

বাড়তি চাহিদার সময়ে যাত্রী ভাড়া থেকে বাড়তি আয়ের লক্ষে চালু করা ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা যে কার্যত ব্যর্থ, তা আজ স্বীকার করে নিল রেল। আংশিক প্রত্যাহারও করা হল ওই ব্যবস্থা। আর তার কোপ পড়ল পণ্য মাসুলে। ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ থেকে যাত্রী আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কায় আজ এক ধাক্কায় পণ্য মাসুল ৮.৭৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। ফলে ফের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রেল জানিয়েছে, ১৪২টি ট্রেনে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা চালু ছিল। তার মধ্যে যাত্রী সংখ্যা যে রুটগুলিতে একেবারে কমে গিয়েছে, সেই সব রুটের ১৫টি ট্রেনে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হবে। আর ৩২টি দূরপাল্লার ট্রেনে টিকিটের চাহিদা যখন কম থাকে, সেই তিন মাসে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ কার্যকর হবে না। তবে বাকি ৯৫টি ট্রেনে আপতত ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা চালু থাকছে।

মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে আয় বাড়াতে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ব্যবস্থা চালু করে। এই পদ্ধতিতে কোনও দিনের ১০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হলেই, বাকি টিকিটের দাম ১০ শতাংশ হারে বেড়ে যায়। এ ভাবে কোনও টিকিটের দাম পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায় রেল।

এতে শুরুতে রেলের ঘরে বাড়তি টাকা এলেও, এসি প্রথম শ্রেণি ও টু টিয়ারে টিকিটের দাম বিমান ভাড়ার প্রায় সমান হওয়ায় যাত্রী কমতে শুরু হয়। সিএজি থেকে শুরু করে রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, সকলেই ওই পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানানোয় কমিটি গড়ে রেল। সেই কমিটির সুপারিশ মেনে আজ প্রথম দফায় ১৫টি ট্রেনে সম্পূর্ণ ভাবে ও ৩২টি ট্রেনে ফ্রেব্রুয়ারি, মার্চ ও অগস্ট— এই তিন মাসে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ পদ্ধতি তুলে দিল রেল। বাকি ৯৫টি ট্রেনে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ রেখে দিলেও, সে সব ট্রেনে যদি যাত্রার চার দিন আগে ৬০ শতাংশের বেশি আসন খালি যায় তা হলে বর্ধিত ভাড়ার টিকিটে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছে রেল।

দু’বছর আগে রাজধানী, দুরন্ত ও শতাব্দীর মতো প্রায় ১৪২টি ট্রেনে চালু হয়েছিল ওই ব্যবস্থা। তবে যাত্রী একেবারে কমে যাওয়ায় অধিকাংশ শতাব্দী এক্সপ্রেসে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ তুলে দিল রেল। এর ফলে সুফল পাবেন নিউ জলপাইগুড়ি-হাওড়া ও হাওড়া-পুরী শতাব্দীর যাত্রীরা। তবে হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বা পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা কেবল তিন মাসের জন্য ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ বন্ধের সুবিধা পাবেন। বাকি সময় বাড়তি অর্থ দিয়ে টিকিট কাটতে হবে। দিল্লিগামী হাওড়া বা শিয়ালদহ রাজধানীর ক্ষেত্রে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’-এ কোনও ছাড় দিচ্ছে না রেল। তবে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ রয়েছে এমন ট্রেন যাতে খালি না যায়, সে জন্য শেষ মুহূর্তের টিকিটে ধাপে ধাপে ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এ দিকে যাত্রী ভাড়ায় আপস করায় বাধ্য হয়ে আজ পণ্য মাসুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় রেলকে। মন্ত্রক জানিয়েছে— কয়লা, ইস্পাত, আকরিক লোহার মতো দ্রব্যের পরিবহণে ৮.৭৫ শতাংশ হারে পণ্য মাসুল বাড়ানো হয়েছে। মন্ত্রকের দাবি, চাল-ডাল বা পেট্রোপণ্যের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের পরিবহণ খরচ একই রাখা হয়েছে। কিন্তু যে ভাবে মালগাড়ির ভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধি ও কয়লা পরিবহণের খরচ বাড়ানো হয়েছে, তাতে ফের একপ্রস্ত মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করছে বণিক সংগঠনগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Flexi Fare Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE