ভারতে নয়া ‘প্রদেশ’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা আইএস-এর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভারতে নয়া ‘প্রদেশ’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করল জঙ্গি সংগঠন আইএস। শুক্রবার কাশ্মীরের সোপিয়ানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ইশফাক আহমেদ সোফি ওরফে আবদুল্লা ভাই নামের এক জঙ্গির। ওই দিনেই নিজেদের মুখপত্র ‘আমাক’-এ ‘উইলায়া অব হিন্দ’ অর্থাত্ ভারতীয় প্রদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করছে ওই জঙ্গি সংগঠন।তবে সোফিকে আবু নাদের আল কাশ্মীরি বলে চিহ্নিত করে তারা।
বিবৃতিতে সোপিয়ানের আমশিপোরায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের কথাও উল্লেখ করে আইসিস। তবে তাদের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে উপত্যকার পুলিশ প্রশাসন। জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ সিংহ সংবাদমাধ্যমকে জানান, “মিথ্যা দাবি করছে আইএস। এখানে তেমন কিছুই হয়নি। নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কোনও জঙ্গির মৃত্যু হলে, সমস্ত জঙ্গি সংগঠন-ই তাকে নিজেদের লোক বলে দাবি করে। চেষ্টা করে ‘শহিদ’ তালিকায় তার নাম ঢোকাতে।”
রাজ্য পুলিশের আর এক আধিকারিক বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরে আইএসের দুই জঙ্গি ছিল। তাদের মধ্যে একজন আইএস ছেড়ে ইতিমধ্যেই হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দিয়েছে। একমাত্র সোফি-ই তাদের হয়ে কাজ করছিল। তার মৃত্যুতে উপত্যকা থেকে আইএস-এর অস্তিত্ব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন: সকাল থেকে অত্যাচার করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্বাচনী হিংসা নিয়ে তোপ মমতার
এর আগে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘আল রিসাল্লাহ্’ পত্রিকায় সোফির একটি সাক্ষাত্কার প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার সত্যতা যদিও যাচাই করা যায়নি, তবে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইেট সেই সাক্ষাত্কার কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে। তাতে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে, হাতে বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সোফিকে। নিজেকে উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লার বাসিন্দা বলে জানায় সে। তবে ওই পত্রিকার সঙ্গে আইএস-এর যোগ নাও থাকতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে। তাদের যুক্তি, আইএস-এর পত্রিকাগুলি দেখলে বোঝা যায়, পেশাদার লোক নিয়োগ করে সেগুলি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ‘আল রিসাল্লাহ্’ পত্রিকায় তার কোনও বৈশিষ্ট্যই চোখে পড়েনি।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, ২০১৬ সালে ‘হরকত-উল-মুজাহিদিন’-এর সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে সোফিকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৮-য় মুক্তি পাওয়ার পর বেশ কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিল সে। পরে ইসলামিক স্টেট অব জম্মু-কাশ্মীর (আইএসজেকে)শাখায় যোগ দেয়। তবে আইএসজেকে-র সঙ্গে আইএস-এর সরাসরি কোনও যোগসূত্র রয়েছে বলেও মানতে নারাজ পুলিশ। তাদের ধারণা, আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে কাশ্মীরের কিছু যুবক আইএসজেকে-র প্রতিষ্ঠা করে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: কেশপুরের পর মেদিনীপুর, এ বার ভারতীর কনভয় রুখল পুলিশ
এহতিশাম বিলাল নামের শ্রীনগরের এক পড়ুয়া গতবছর আইএস-এর সুইসাইড স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু কয়েক মাস পরেই আত্মসমর্পণ করে সে। হিজবুল মুজাহিদিনের মতো যে জঙ্গি সংগঠনগুলি উপত্যকায় সক্রিয়, তারাও শুরু থেকে আইএস-এর বিরোধিতা করে এসেছে। শ্রীনগরের জামিয়া মসজিদে আইএস-এর পতাকা ওড়ার পর আইএস-এর আদর্শকে ইসলাম বিরোধী বলেও উল্লেখ করে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy