মেহবুবা মুফতি। ছবি: এপি। ইনসেটে নরেন্দ্র মোদী।
দেশহিতের কথা বলে জোট গড়েছিল বিজেপি। দেশভক্তির তাস খেলেই লোকসভা ভোটের আগে সেই জোট ছেড়ে দিল তারা।
আরএসএস, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলে অমিত শাহ আজ দলকে জানালেন, জম্মু-কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতির পিডিপি-র সঙ্গে জোট ছিন্ন করছে বিজেপি। রাম মাধব বললেন, ‘‘জোটে থেকে শান্তি আর উন্নয়ন হচ্ছে না। বাড়ছে সন্ত্রাস, হিংসা, চরমপন্থা।’’ সাংবাদিক শুজাত বুখারির হত্যার পরে মোদী-শাহরা একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। আজ সেই হত্যাকেই এই সিদ্ধান্তের অন্যতম ‘মোড়’ বলে চিহ্নিত করল বিজেপি।
জোট ভাঙার পরে মেহবুবা নিজে তো বটেই, বিরোধী ওমর আবদুল্লা বা রাহুল গাঁধীর দল— কেউই জোড়াতালির সরকার গড়ায় আগ্রহ দেখাল না। ফলে উপত্যকায় রাজ্যপালের শাসনের ছাড়পত্র দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। নির্ধারিত সময়ে ভোট হলে যেটি অনায়াসে লোকসভা ভোট পর্যন্ত চলতে পারে। রাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে রিপোর্ট পাঠিযে দিয়েছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ব্যর্থ ডোভাল, তির বিরোধীদের
এ দিন রাহুল টুইটারে বললেন, ‘‘সুযোগসন্ধানী বিজেপি-পিডিপি জোট জম্মু-কাশ্মীরে আগুন লাগিয়েছে। সেনা-সহ নির্দোষীদের প্রাণ গিয়েছে। ইউপিএ সরকারের কঠোর পরিশ্রম নষ্ট হয়েছে, ভারতকেও কৌশলগত কারণে খেসারত দিতে হয়েছে।’’
জোট ভাঙার কারণ ব্যাখ্যা করে বিজেপি বলছে, তারা না ছাড়লে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে মেহবুবা ছাড়তেন। জোটের কাজে দু’পক্ষই ভোটব্যাঙ্ক খোয়াচ্ছিল। বিজেপি জম্মু-লাদাখে, মেহবুবা কাশ্মীরে। ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতেই জোট ছাড়া দরকার ছিল। তাই মেহবুবা আজ বিজেপির বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করলেন না। বরং বোঝালেন, বিজেপির সিদ্ধান্তে ‘স্তম্ভিত’ নন। বিজেপি বলছে, সময় এলে আবার জোট হতে পারে। মেহবুবা কিংবা ওমর— যে কারও সঙ্গে।
জোট ভেঙে এখন দেশভক্তি আর জাতীয়তাবাদের তাস খেলছে বিজেপি। পাকিস্তান ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীর ভোটে প্রভাব ফেলতে চায় তারা। ২৩ জুন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিন উপলক্ষে জম্মু যাচ্ছেন অমিত শাহ। তার আগেই জোট ভাঙার সিদ্ধান্তে কর্মীদের চাঙ্গা করলেন। শরিক শিবসেনাও বলছে, উদ্ধব ঠাকরে বলেছিলেন ‘দেশদ্রোহী’ জোট। আজ উদ্ধবের প্রশ্ন, এই জোট ছাড়তে সাড়ে তিন বছর লাগল কেন?
মেহবুবাও ইস্তফা দিয়ে রইলেন নিজের পথে। ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে বললেন, সংঘর্ষবিরতি থেকে ‘মানবিক স্পর্শ’, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হোক— এটাই চেয়েছেন। বিজেপিকে ৩৭০ ধারা নিয়ে এগোতে দেননি। পেশিশক্তির নীতি চলতে পারে না। বিজেপি এখন পিডিপি ভাঙার তালে আছে। ওমর বলছেন, আগেই মেহবুবাকে জোট ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy