এই কিছু দিন আগেও ছিলেন ভারতীয়দের চোখের মণি। তবে কাশ্মীর নিয়ে টুইট করার পর থেকেই পরিস্থিতিটা পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে। গৌতম গম্ভীর, বিরাট কোহালির পর এ বার জাভেদ আখতারের তোপের মুখে পড়লেন পাক ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদি। কপিল দেবের মতো প্রাক্তন থেকে শুরু করে সুরেশ রায়নার মতো জাতীয় দলের সদস্যও আফ্রিদির সমালোচনায় মুখ খুলেছেন।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গে মঙ্গলবার আফ্রিদির বিতর্কিত মন্তব্যের পরই তোপ দাগেন গৌতম গম্ভীর এবং বিরাট কোহালি। এর পর বুধবার জাভেদ আখতার বলেন, “ডিয়ার মিস্টার শাহিদ আফ্রিদি, আপনি শান্তিপূর্ণ জম্মু ও কাশ্মীর দেখতে চান। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে না! পাক জঙ্গিরা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, পাক সেনা বাহিনী যাতে জঙ্গি শিবির তুলে দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে, সেটা একটু দেখবেন! তাতে সমস্যা সমাধানে খুব সুবিধা হবে।”
টুইটে ঠিক কী বলেছিলেন শাহিদ আফ্রিদি? মঙ্গলবার আফ্রিদি লিখেছিলেন, “ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন ভয়ঙ্কর। অত্যাচারী সরকার নিরীহ মানুষদের খুন করছে। স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবিকে দমিয়ে রাখা হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এই রক্তপাত থামাতে কেন পদক্ষেপ করছে না জানি না!” ঘটনাচক্রে সোমবারই পাক সেনার গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছিলেন এক ভারতীয় জওয়ান। আহত এক আধিকারিক-সহ চার সেনা। তার আগেই ভারতীয় সেনা, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে নিহত হয় কাশ্মীরে অনুপ্রবেশকারী ১৩ জন জঙ্গি। দু’দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আফ্রিদির এই টুইটে যেন আগুনে ঘি পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল সমালোচনা শুরু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন
সন্ত্রাসের নেটওয়ার্ক, রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় দাউদ-হাফিজ
এই প্রসঙ্গে চুপ করে ছিলেন না গম্ভীর বা কোহালির মতো ক্রিকেটাররাও। পাল্টা টুইট করে গম্ভীরের কটাক্ষ, “আফ্রিদির বক্তব্য নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই। ওঁর পিছিয়ে থাকা অভিধানে ইউএন মানে রাষ্ট্রপুঞ্জ (ইউনাইটেড নেশনস) নয়, অনূর্ধ্ব উনিশ (আন্ডার নাইন্টিন) ক্রিকেট দল। ওঁর বয়সটা উনিশের নীচেই কিনা!” কোহালির টুইট, “আফ্রিদির টুইটে একটু সংশোধন প্রয়োজন। কাশ্মীরের একটি অংশ পাকিস্তানই দখল করে রেখেছে।”
Dear Mr Afridi , since you want to see a peaceful JK sans any human rights violations could you please see to it that pak terrorists stop infiltrations n pak army stops supporting the separatists by closing down the training camps . It will greatly help in solving the problem
— Javed Akhtar (@Javedakhtarjadu) April 3, 2018
ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে আফ্রিদির সম্পর্কও বরাবরই মধুর। ভারতীয় ক্রিকেটার বা ভারতেরও সব সময় প্রশংসা করে এসেছেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতেই সুইৎজারল্যান্ডে এক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে তাঁর আচরণের প্রভূত প্রশংসিত হয়েছিল। এক তরুণী সমর্থকের সঙ্গে সেলফি তোলার সময় তাঁর হাতে ধরা ভারতীয় পতাকা তুলে ধরতে বলেন তিনি। তা নিয়ে অভিনন্দনের বন্যা বয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে কাশ্মীর প্রসঙ্গে তাঁর টুইট সেই ভাবমূর্তিতে বেশ বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
জাভেদের মতোই এ দিন আফ্রিদিকে ফের তিরে বিঁধেছেন বিরাট কোহালি। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের স্বার্থে আঘাত লাগে এমন কিছুকেই সমর্থন করেন না তিনি। বিরাট বলেন, “এক জন ভারতীয় হিসাবে সব সময় দেশের স্বার্থরক্ষা করতেই চাইব আমি। যদি কোনও কিছুর দ্বারা তাতে বাধা আসে, অবশ্যই তার বিরোধিতা করব।” কপিল দেব আফ্রিদিকে পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, “সে কে? আমরা কেন আফ্রিদিকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছি। কিছু লোককে বেশি পাত্তা দেওয়া়টাই উচিত নয়।” রায়না টুইট করে বলেন, কাশ্মীর সব সময়ই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এবং তা-ই থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy