Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শান্তি চেয়েছি, প্ল্যাকার্ড বিতর্কে ক্ষমাপ্রার্থী তরুণী

গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ায় একজোট হয়েছিল মুম্বই। সেখানেই মেহেকের হাতে দেখা যায় ‘ফ্রি কাশ্মীর’ লেখা প্ল্যাকার্ড।

এই প্ল্যাকার্ড ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

এই প্ল্যাকার্ড ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৭
Share: Save:

গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ার কাছে প্রতিবাদে শামিল হয়ে ‘ফ্রি কাশ্মীর’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। যা দেখে খেপে ওঠে দক্ষিণপন্থী বিভিন্ন সংগঠন এবং আন্দোলনকারী। আজ বিতর্কের মধ্যে পড়ে মেহেক মির্জা প্রভু নামে ওই মহিলা ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই প্ল্যাকার্ডটি জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য শান্তি চেয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও ভুল-বোঝাবুঝি তৈরি হোক, চাননি তিনি।

গত কাল সন্ধ্যায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে হিংসার প্রতিবাদে গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ায় একজোট হয়েছিল মুম্বই। সেখানেই মেহেকের হাতে দেখা যায় ‘ফ্রি কাশ্মীর’ লেখা প্ল্যাকার্ড। যা দেখে বিরোধী নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস প্রশ্ন তুলেছেন, ওখানে প্রকৃতপক্ষে কী নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছিল এবং এ ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখানো হচ্ছে কেন। আজ তাঁর টুইট, ‘‘মুম্বইয়ে এই ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে কেন মেনে নেওয়া হচ্ছে? সিএমও-র দু’কিলোমিটার দূরে আজাদি গ্যাং ‘ফ্রি কাশ্মীর’ স্লোগান দিচ্ছে? উদ্ধবজী (ঠাকরে), আপনার নাকের ডগায় এ ধরনের ভারত-বিরোধী প্রচার কি আপনি মেনে নিচ্ছেন?’’

বিজেপির প্রশ্নের মুখে শিবসেনার রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত স্পষ্ট করেছেন, কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে কেউ ভারতে কোনও কথা বললে, তা মেনে নেওয়া হবে না। রাউত পরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘যাঁরা ওই প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়েছিলেন, তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, ইন্টারনেট, মোবাইল পরিষেবা এবং অন্যান্য বিষয়ে নিষেধ উঠে যাক। তাঁরা উপত্যকার স্বাধীনতা পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন, বিষয়টা একেবারেই তেমন নয়।’’

মুখ খুলেছেন উদ্ধব ঠাকরেও। তিনি বলেছেন, ‘‘ওখানে জেএনইউ-জামিয়ার ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছিল। ওই একটা বিষয়কেই কেন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? উনি হয়তো ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বলছিলেন। কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে কথা হলে সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়। সবাই তা নিয়ে আপত্তি জানাবেন। তবে ওখানে যা নিয়ে প্রতিবাদ চলছিল, তা নিয়ে আমরা সকলেই একমত।’’

যদিও মুম্বই পুলিশ মেহেককে চিহ্নিত করেছে বলে দাবি মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা প্রতিবাদী, বিক্ষোভকারীদের বলছি, এ ধরনের প্ল্যাকর্ড হাতে আসবেন না, যাতে নিজেরাই সমস্যায় পড়েন।’’ তবে অনেকে এই প্রশ্নও তুলেছেন যে ইন্ডিয়া গেটের প্রতিবাদকে লঘু করতে ওই প্ল্যাকার্ড ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে না তো?

কবি ও গল্পকার হিসেবে পরিচিত মেহেক। তিনি বলেছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভাবে গোটা ঘটনার প্রচার চালানো হয়েছে, তা দেখে আমি স্তম্ভিত। ওই প্ল্যাকার্ডে প্রত্যেকের বাক্‌স্বাধীনতার কথা বলা হচ্ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ করা নিয়েও বহু মানুষ আপত্তি জানিয়েছেন। প্রত্যেকের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলাম। আর অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না আমার।’’ নিজেই একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে এই তরুণী বলেছেন, ‘‘আমি মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। মুম্বইয়ে জন্মেছি, বড় হয়েছি। সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে আমি মানবিকতায় বিশ্বাসী। একটা প্ল্যাকার্ডের জন্য এত গন্ডগোল হয়ে থাকলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Violence Mumbai Free Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE