Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সঙ্ঘের ছাত্ররা হামলায়, তাই কি পুলিশ চুপ?

সোমবার দেশজোড়া প্রতিবাদের মধ্যেই রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২০
Share: Save:

হামলা হতে পারে ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। রয়েছে হামলার ভিডিয়ো, যাতে রড-লাঠি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে হামলাকারীদের। তবু চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গেলেও কোনও হামলাকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। উল্টে গত কালের ঘটনাকে ‘মামুলি বিশৃঙ্খলা’ আখ্যা দিয়ে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মারামারির ভিডিয়ো সংগ্রহ করে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) ওই তাণ্ডব চালানোয় পরিকল্পিত ভাবে ওই তাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে অমিত শাহের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ।

সোমবার দেশজোড়া প্রতিবাদের মধ্যেই রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। তাতে হিন্দু রক্ষা দল নামে একটি সংগঠনের প্রতিনিধিকে জেএনইউ হামলার দায় নিয়ে বলতে দেখা যায়, ধর্মবিরোধী, দেশবিরোধী কাজকর্মে লিপ্ত থাকার শাস্তি হিসেবেই এই হামলা। পড়ুয়ারা সমঝে না গেলে পরেও এমন হবে। ভিডিয়োটি আসল-নকল যা-ই হোক, জেএনইউয়ের ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের দৃষ্টিভঙ্গিই যে এর মধ্যে প্রতিফলিত, তাতে সন্দেহ নেই বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

গত কালই ছাত্ররা অভিযোগ করেছিলেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা এবিভিপি সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছে। বাম সংগঠনগুলির অভিযোগ, এবিভিপি ঝামেলা করতে পারে সেই খবর আসতে শুরু করেছিল দুপুর থেকেই। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত থাকা সাদা পোশাকের পুলিশের পক্ষ থেকেও জেএনইউ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করার অনুরোধ করা হয় বিকালেই। কিন্তু উপাচার্য এম জগদেশ কুমার সেই অনুমতি দেননি।

দিল্লি পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বিকালেই পুলিশ মোতায়েন হলে হামলা এড়ানো যেত। যদিও এমন কোনও তথ্য মানছে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পড়ুয়ারা আজ অভিযোগ করেছে, হামলা চলাকালীন বার বার পুলিশকে ফোন করা হলেও পুলিশ আসে হামলাকারীরা চলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য পুলিশের দেরি করে যাওয়ার অভিযোগ মানা হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ যদি সত্যিই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, হামলাকারীদের কেন ধরা গেল না? বাম সংগঠনগুলির অভিযোগ, হামলাকারীরা সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠনের সদস্য হওয়ায় তাদের বাঁচানোর চেষ্টায় নেমেছে পুলিশ।

জেএনইউ-এর ঘটনা নিয়ে দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বৈজলের সঙ্গে কথা বলেন অমিত শাহ। সূত্রের খবর, বৈজল যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে জেএনইউ-এর পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর হন সেই বার্তাও দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার পরেই ছাত্রদের উদ্দেশে বার্তা দেন উপাচার্য। প্রশ্ন উঠেছে, দিন কয়েক আগে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় যখন ঝামেলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সে সময়ে কালক্ষেপ না করে দ্রুত তা থামাতে নেমে পড়েছিল দিল্লি পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠি চার্জ, ক্যাঁদনে গ্যাস, এমনকি গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। লাইব্রেরিতে ঢুকে নিরস্ত্র পড়ুয়াদের মারধরের অভিযোগ ওঠে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। শাসক শিবিরের যুক্তি, এ ধরনের ঝামেলা দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রায়ই হয়ে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Violence Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE