জগদীশ কুমার। ছবি: টুইটার।
ছাত্রবিক্ষোভের আশঙ্কায় অনুষ্ঠানস্থল পরিবর্তন করে উপাচার্য বললেন, তিনি চান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাধীন চিন্তার চর্চা হোক, প্রশ্ন করার অভ্যাস বাড়ুক!
৪৬ বছর পরে জওহরলাল নেহরু় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব এমন ঘটনারই সাক্ষী থাকল। ঠিক যে নীতিগুলো পালন না করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে, সেই সব নীতির কথাই শোনা গেল উপাচার্য জগদীশ কুমারের মুখে। জেএনইউ-এর বেশির ভাগ শিক্ষকই ভোট দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা জগদীশকে চান না। উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেই শিক্ষক-ছাত্রদের বড় অংশ সমাবর্তনও বয়কট করেছেন। সেই জগদীশই তাঁর বক্তৃতায় উচ্চ আদর্শের কথা বলে গেলেন বারবার।
১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে জেএনইউ-এর প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয় ১৯৭২ সালে। ৪৬ বছর পরে ফের সমাবর্তন হচ্ছে। কিন্তু উপাচার্য জগদীশ কুমার মুক্ত স্বরকে স্তব্ধ করে দিচ্ছেন, এই অভিযোগে অনুষ্ঠান বয়কট করার ডাক দিয়েছে জেএনইউ ছাত্র সংগঠন। ঝামেলার আশঙ্কায় সমাবর্তনের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ বুধবারের অনুষ্ঠানটি হল মূল ক্যাম্পাসের বাইরে। অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের প্রেক্ষাগৃহে। সমাবর্তনে উপস্থিত থাকলেও, প্রতিবাদ জানিয়ে আজ উপাচার্যের সঙ্গে হাত মেলাতেও অস্বীকার করেন অনুপ পটেল নামে পি এইচডি-র এক ছাত্র। ছাত্র সংগঠনের দাবি, বয়কটের ডাক দিলেও সমাবর্তন অনুষ্ঠান বানচাল করার কথা তারা কখনই বলেনি। তারা এ দিন পাল্টা সমাবর্তন অনুষ্ঠান করে ক্যাম্পাসে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল হরবংশ মুখিয়া, আনন্দ কুমার, কবিতা কৃষ্ণণের মতো প্রাক্তনীদের।
ক্যাম্পাসে মুক্ত আবহের গলা টিপে ধরার অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই জগদীশই এ দিন বলেন, ‘‘মুক্ত মন এবং জিজ্ঞাসু দৃষ্টিই উর্বর চিন্তার জন্ম দেয়। জেএনইউ চিন্তার স্বাধীনতা এবং জিজ্ঞাসু দৃষ্টির পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।’’ জেএনইউ-এর শিক্ষক সংগঠন কিন্তু মনে করে, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশকে কলুষিত করছেন। মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে গণভোটের আয়োজন করেছিল জেএনইউটিএ। সেখানে ৫৮৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩০০ জন অংশ নেন। ভোটদাতাদের মধ্যে ৯৩ শতাংশ শিক্ষকই রায় দিয়েছেন, উপাচার্যের পদ ছাড়ুন জগদীশ। জেএনইউটিএ-র মতে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। তার পরেও গণভোটের এই ফলাফল ‘বিস্ময়কর’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy