—ফাইল চিত্র।
খুব কাছের বন্ধুর মৃত্যুই নাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁকে। তাঁর বন্ধুর মতো আর কাউকে যাতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে না-হয়, তার জন্যই আইনি লড়াইয়ে নেমেছিলেন কেরলের অনাবাসী জোসেফ শাইন। সেই লড়াইয়ে অবশেষে জয় হয়েছে তাঁরই। কারণ গত কালই সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে পরকীয়া সম্পর্ক অপরাধের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
কিন্তু কে এই জোসেফ?
জোসেফের আইনজীবী কলীশ্বরম রাজ ফোনে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হোটেল ব্যবসায়ী জোসেফ মালয়ালি খ্রিস্টান। এখন ইটালিতে থাকেন। তিনি নিজে কিন্তু বিবাহিত জীবনে সুখী। আসলে এই লড়াইটা জোসেফের নিজের স্বার্থে একদমই ছিল না, শুধুমাত্র বন্ধুর জন্যই আইনি লড়াইয়ের এতটা পথ পেরিয়ে এসেছেন তিনি। এটাই প্রথম নয়, এর আগেও জোসেফ কেরলের বহু বিষয়ে এগিয়ে এসেছেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী এম এম মণির বিরুদ্ধে মহিলাদের কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই বিষয়ে একটি আবেদনও জমা দিয়েছিলেন তাঁর মক্কেল।
কিন্তু কোথা থেকে পরকীয়া আইনের লড়াইটা শুরু করলেন জোসেফ, সেই গল্পটা শোনার জন্যই ভোররাত থেকে তাঁর ইটালির বাড়ির ল্যান্ডলাইনে ফোন করে চলেছেন সাংবাদিকেরা। তবে সেই সব কিছু এড়িয়েই যাচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে তাঁর আইনজীবী জানান, জোসেফ নিজের নম্বর সংবাদমাধ্যমের কাছে দিতে বারণ করেছেন।
শেষ পর্যন্ত একটি সংবাদপত্রকে নিজের লড়াইয়ের গল্পটি শোনাতে রাজি হন জোসেফ। জানান, কেরলে তাঁর ওই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিরুদ্ধে বন্ধুরই এক বিবাহিতা সহকর্মী ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ এনেছিলেন। যার জেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন সেই বন্ধুটি। এই ঘটনাতেই তীব্র আঘাত পান জোসেফ। তাঁর মনে হতে থাকে, পরকীয়ায় কেন পুরুষরাই শুধু অভিযুক্ত হবেন? তাই ‘পুরুষ বৈষম্য’-এর অবসান চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
জোসেফের কথায়, ‘‘তাঁদের দু’জনের নিজের ইচ্ছেতেই সেটা ঘটেছিল। কিন্তু যখন মহিলার স্বামী ওই বিষয়ে অভিযোগ জানালেন, তখন ছেলেটিকে (বন্ধু) ভুগতে হল। এমন পরকীয়ার অভিযোগের জেরে ছেলেরা নিজেদের বিচ্ছিন্ন বোধ করেন এবং এই বিষয়টা অনেক সময়ই তাঁরা মেনে নিতে পারেন না। পরকীয়া আইন বাতিল করা হল প্রাথমিক পদক্ষেপ। এর থেকেই পরবর্তী পরিবর্তনগুলো আসবে।’’
জোসেফ বলেন, ‘‘প্রতারক মহিলাদের জন্য যে সব পুরুষরা পরকীয়ার শাস্তি ভোগ করেন, তার থেকে রক্ষা করতেই এই লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy