বিচারপতি জাস্তি চেলমেশ্বর
প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিলই। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম জোসেফকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগে নরেন্দ্র মোদী সরকার আপত্তি তুললেও, শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম ফের কেন তাঁর নাম সুপারিশ করে পাঠাচ্ছে না। বিদায়ের দিনে আজ সেই প্রশ্নটিই তুলে দিয়ে গেলেন সুপ্রিম কোর্টের সদ্য অবসর নেওয়া বিচারপতি জাস্তি চেলমেশ্বর। তাঁর বক্তব্য, কলেজিয়াম এ বিষয়ে একমত হওয়া সত্ত্বেও এখনও কেন তা হয়নি, এর উত্তর তাঁর কাছেও নেই।
আজই ছিল বিচারপতি চেলমেশ্বরের কর্মজীবনের শেষ দিন। ভোরেই স্ত্রীকে নিয়ে ৪ নম্বর তুঘলক রোডের বাংলো ছেড়ে যান তিনি। অনেক আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, অবসরের পর কোনও সরকারি পদ গ্রহণ করবেন না। আজ নিজের কিছু বক্তব্য এক সাক্ষাৎকারে জানিয়ে তিনি রওনা দেন অন্ধ্রের কৃষ্ণ জেলায় গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে। ঢোকার সময় যেমনটি ছিল, বাংলোটি সেই অবস্থাতেই ছেড়ে গিয়েছেন তিনি। গত জানুয়ারিতে এই বাংলোতেই অভূতপূর্ব সাংবাদিক বৈঠক করে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেন শীর্ষ আদালতের চার প্রবীণতম বিচারপতি। নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি চেলমেশ্বর। অভিযোগ এনেছিলেন, সরকারের চাপের কাছে মাথা নোয়াচ্ছে বিচার বিভাগ।
দিল্লি ছাড়ার আগে চেলমেশ্বর এক সাক্ষাৎকারে জানান, জানুয়ারির ওই সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে তাঁর কোনও খেদ নেই। কারণ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও বিবাদ নেই। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক লড়াই লড়ছিলেন। কিন্তু সমস্যা এখনও রয়ে গিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট’-এর প্রস্তাব নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও তিনি মনে করেন, বিচার বিভাগের শীর্ষ স্তরে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে থাকলে, তা খতিয়ে দেখা উচিত। কারণ, কিছু ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিচারপতি কে এস জোসেফ প্রসঙ্গে বিরোধীদের অভিযোগ, উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন খারিজ করেছিলেন বলেই তাঁর নামে মোদী সরকারের আপত্তি। এ প্রসঙ্গে চেলমেশ্বরের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘অবশ্যই তাঁর নাম ফের কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা উচিত। বিচারপতি হিসেবে উনি দারুণ।’’ সরকারের আপত্তিগুলি কেন ধোপে টেকে না, তা তিনি লিখিত ভাবে কলেজিয়ামকে জানিয়েছিলেন। কেন্দ্র তাঁর নামে আপত্তি তোলার পরে ১১ মের বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ প্রবীণ বিচারপতির কলেজিয়াম নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, আরও কয়েক জনের নামের সঙ্গে বিচারপতি জোসেফের নাম ফের সুপারিশ করা হবে। এক মাস পরেও তা করা হয়নি। এখন নতুন করে কলেজিয়াম গঠন হবে। এর নতুন সদস্য হবেন বিচারপতি এ কে সিক্রি। ফলে ফের বৈঠক ডেকে আলোচনা করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy