কে চন্দ্রশেখর রাও।ফাইল চিত্র।
সরকারের চার বছর পূর্তির দিনেই কাল বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও! আগামিকাল দুপুর একটায় মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রের ইঙ্গিত, সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তিনি। আগামিকাল বিকেলে রঙ্গরেড্ডি জেলায় বিশাল জনসভার আয়োজন করেছে তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস)। সেখানেই সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারেন চন্দ্রশেখর। তাঁর ছেলে তথা রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী কে টি রামরাও বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘‘বাবা আগামিকাল কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’’
সূত্রের খবর, চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আছে ডিসেম্বরে। তার সঙ্গেই নিজের রাজ্যে ভোট সেরে ফেলতে চান চন্দ্রশেখর।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসাতেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে রাজধানী দিল্লি ও রাজ্য রাজনীতিতে। তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি উত্তমকুমার রেড্ডির কথায়, ‘‘বিরোধীরা জোট বাঁধছে দেখে চন্দ্রশেখর রাও ভীত। সে কারণেই তিনি তড়িঘড়ি সরকার ভেঙে দিতে চান।’’
টিআরএস বিধায়ক তথা চন্দ্রশেখরের মেয়ে কলবাকুন্তলা কবিতার অবশ্য দাবি, ‘‘এ রাজ্যে বিরোধীদের কোনও শক্তিই নেই। দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও ওরা বহু পিছিয়ে। গত চার বছরে আমরা যা কাজ করেছি, তার রিপোর্ট কার্ড মানুষের সামনে পেশ করব।’’
তেলঙ্গানায় ভোট হওয়ার কথা আগামী বছর। লোকসভা ভোটের সঙ্গে তা হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু এত দিন আগে কেন দান ছাড়তে যাবেন চন্দ্রশেখর? বিরোধী শিবিরের এক বড় অংশের মতে, এমন কোনও সিদ্ধান্ত নিলে মূলত তিনটি কারণ থাকতে পারে তার পিছনে। এক, দুর্নীতির বহুবিধ অভিযোগে চন্দ্রশেখর ও তাঁর দল এখন বেশ কিছুটা কোণঠাসা। দুই, জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে টিআরএস সরকার। তিন, কংগ্রেস ধীরে ধীরে জমি শক্ত করছে তেলঙ্গানায়। চন্দ্রশেখর তাদের আর সময় দিতে নারাজ।
কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, চন্দ্রশেখর যে হঠাৎ করে নির্বাচন এগিয়ে নিয়ে আসতে চাইছেন, তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইশারাতেই কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বিরোধী শিবিরের অনেকের ধারণা, মোদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই যাবতীয় পদক্ষেপ করছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। অতীতে লোকসভা ও বিধানসভার ভোট একসঙ্গে করার প্রস্তাব নিয়ে রাওয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন মোদী। কিন্তু বিরোধী দলগুলির নীতিগত আপত্তি ও পরিকাঠামোর অভাবে তার বাস্তবায়ন নিয়ে ঘোর সন্দেহ আছে।
এই অবস্থায় একসঙ্গে ভোট করানোর চেষ্টা ছেড়ে কংগ্রেসকে জমি শক্ত করার সুযোগ না দেওয়াটাই রাজনৈতিক ভাবে বেশি লাভজনক টিআরএস এবং বিজেপি উভয়ের কাছেই। গত সপ্তাহেই চন্দ্রশেখর দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও বিজেপির আরও কিছু শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। সূত্রের মতে, তখনই তেলেঙ্গানা বিধানসভা ভেঙে দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy