কল্পিত বীরবল।
একশোয় একশো পাওয়ার অনেক কাহিনি রয়েছে। অনেকেই পেয়েছে।
কিন্তু ৩৬০-এ ৩৬০? ভূভারতে আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি।
পরীক্ষার্থীদের এত দিনের সেই ‘কল্পনা’কে এ বার সত্যি-সত্যিই ছুঁয়ে ফেলল কল্পিত! উদয়পুরের ১৭ বছর বয়সের একটা ছেলে। কল্পিত বীরবল। এ বছর জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন) পরীক্ষায় একেবারে একশো শতাংশ নম্বর পেয়ে! আর সেটা কোনও একটা বা দু’টো বিষয়ে নয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের (মেন) মতো সর্বভারতীয় স্তরের অত্যন্ত কঠিন একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মোট নম্বরের (৩৬০) পুরোটাই পেয়েছে কল্পিত। কোনও বিষয়েই তার একটি নম্বরও কাটা যায়নি! জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যা কল্পনাতীত। কেউ কখনও ওই নম্বর পায়নি।
উদয়পুরের কল্পিত বীরবলই সেই অর্থে, ‘স্কোরে’র নিরিখে, সর্বভারতীয় স্তরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ‘সচিন তেন্ডুলকর’! রাজস্থানের উদয়পুরের একটি সরকারি এমবি হাসপাতালের পুরুষ নার্স পুষ্পেন্দ্র ও একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা পুষ্পার একমাত্র সন্তান কল্পিত এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে এমডিএস সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল থেকে। বছরে যত দিন স্কুলে যতগুলি ক্লাস হয়েছে, তার কোনওটিতেই ‘অ্যাবসেন্ট’ ছিল না কল্পিত। অসুস্থতার জন্য স্কুলে আসতে পারেনি কল্পিত, এমন ঘটনাও ঘটেনি কখনও। সেটা কী ভাবে সম্ভব হল, তার উত্তরটা কল্পিতই দিয়েছে। বলেছে, ‘‘আমার মা, বাবা সব সময় আমার যত্ন নিয়েছেন। এক দিনও আমাকে সর্দি-কাশিতে ভুগতে হয়নি।’’
সর্বভারতীয় স্তরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় শীর্ষ স্থানটি পাওয়ার জন্য উদয়পুর ছেড়ে দূরে কোথাও গিয়ে কোচিং নেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেনি, নিজেই জানিয়েছে কল্পিত। তার কথায়, ‘‘আমাকে অনেকেই পইপই করে বলেছিলেন, তুমি কোটায় যাও, যাও হায়দরাবাদে। ওখানে অনেক ভাল কোচিং পাবে। তার ফলে জয়েন্টে তোমার রেজাল্ট খুব ভাল হবে। কিন্তু আমি কখনওই চাইনি পড়াশোনাটা আমার বোঝা হয়ে উঠুক। আমি আমার পড়াশোনাটাকে বরাবর উপভোগ করেছি। পড়াশোনাটা করেছি, করে চলেছি- আনন্দে। তাই আমি ঠিক করেছিলাম অন্য কোথাও যাব না। উদয়পুরে থেকেই পড়াশোনা করব। এখানকার কোচিং-ই আমাকে পরীক্ষায় ভাল ভাবে উতরে দিতে পারবে। তাই আমি উদয়পুরের কোচিং সেন্টারেই পড়েছি।’’
আর জয়েন্টের শীর্ষ স্থানটি পাওয়ার জন্য দিনে খুব বেশি পড়েওনি, জানিয়েছে কল্পিত। বলেছে, ‘‘স্কুলের সময়টুকু আর কোচিং ক্লাসে যাওয়া ছাড়া দিনে-রাতে মিলিয়ে বড়জোড় ৫ কি ৬ ঘণ্টা পড়েছি। তবে যতটা পড়েছি, খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। আর বরাবরই কনফিডেন্ট ছিলাম, পরীক্ষায় আমার স্কোর ভাল হবেই। তবে একেবারে ৩৬০ নম্বরই স্কোর করব, সত্যি বলছি, এমনটা কল্পনাও করিনি।
আরও পড়ুন- আরও ভাল বাইক চাই, বিয়ে ভাঙলেন কনে
কল্পিতের স্কুলের অধিকর্তা শৈলেন্দ্র সোমানি বলেছেন, ‘‘বরাবরই খুব উজ্জ্বল ছাত্র কল্পিত। অসম্ভব রকমের মেধাবী। ও যখন নাইন্থ স্ট্যান্ডার্ডে পড়তো, তখনই ভারতের জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে শীর্ষ স্থানটি পেয়েছিল কল্পিত। তার পরের বছরেই জাতীয় মেধা সন্ধান পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিল।’’
কল্পিত এ বার চায়, এক জন নামজাদা কম্পিউটার বিজ্ঞানী হতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy