এম কে গণপতি
এক সপ্তাহের মধ্যেই কর্নাটকে আবার আত্মঘাতী পুলিশ অফিসার। গত কাল সন্ধেয় কোদাগু জেলার মাদিকেরি শহরের একটি হোটেলের দরজা ভেঙে ডেপুটি পুলিশ সুপার এম কে গণপতির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গণপতির পরনে তখন পুলিশের পোশাক। সঙ্গে সার্ভিস রিভলভার। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে মামলাও রুজু করা হয়। তাতেই শোরগোল পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে।
আসলে ঘটনার ঠিক আগে আগেই স্থানীয় চ্যানেলে একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দেন গণপতি। ২০১০ সালে বেঙ্গালুরুর একটি থানায় ইনস্পেক্টর থাকাকালীন ২১ বছরের প্রশান্তকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। আবার ২০১৪-য় এক ব্যবসায়ীর এক কোটি টাকা চুরির তদন্তের দায়িত্ব পড়ে গণপতির উপর। কিন্তু এফআইআরে তিনি লেখেন, ১ কোটি নয় আসলে ২৪ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। এবং সেই ব্যবসায়ীর আত্মীয়ই টাকাটি চুরি করেছেন, যিনি নাকি অল্প কিছু অংশ আবার ফেরতও দেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সাসপেন্ড করা হয় গণপতিকে। তবে তাঁর দাবি, তাঁকে ইচ্ছাকৃত ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছিল। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে জে জর্জ, আইপিএস অফিসার এ এম প্রসাদ এবং প্রণব মোহান্তির দিকে আঙুল তোলেন তিনি। বলেন, তাঁর যদি কিছু হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এঁরাই
দায়ী থাকবেন।
কিছু দিন আগেই ম্যাঙ্গালোরে বদলি করা হয় গণপতিকে। সে বিষয়েও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, ‘‘পুলিশ বিভাগে জাতপাতের ভিত্তিতে বদলি করা হয়।’’ এই সুযোগে বিরোধী দল বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার পদত্যাগও দাবি করে। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁর (গণপতির) সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ ছিল না। কোনও ব্যক্তিগত ঝামেলাও না। ’’
ম্যাঙ্গালোর থেকে গত কাল সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ মাদিকেরি পৌঁছন গণপতি। সাক্ষাৎকার দিয়ে চটপট ফিরে আসেন ঘরে। ইতিমধ্যেই চ্যানেলটি প্রচার করতে শুরু করে, কোদাগুর এক জন পুলিশ অফিসারের খোলাখুলি সাক্ষাৎকার তারা রাত সাড়ে আটটায় দেখাতে চলেছে। এতেই টনক নড়ে কোদাগুর পুলিশের। কোন অফিসার হঠাৎ সাক্ষাৎকার দিল চ্যানেলটিকে? সব কিছু জানার পরেই খোঁজ শুরু হয়ে যায় এম কে গণপতির। অবশেষে সন্ধে নাগাদ তাঁর সন্ধান পেয়ে হোটেলে ছোটে পুলিশ। আর তখনই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
কর্নাটক পুলিশের এক উচ্চ পদস্থ অফিসার বি কে সিংহ আজ সকালে জানান, মানসিক রোগে ভুগছিলেন গণপতি।
পুলিশ বিভাগ নিজেদের পিঠ বাঁচাতেই এমন অভিযোগ করছে বলে মন্তব্য করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। গণপতির সাক্ষাৎকারটি ভিত্তিহীন প্রমাণ করতেই যে তাঁকে ‘মানসিক রোগী’ বানানো হচ্ছে, ওই সংস্থার পক্ষ থেকে এমনটাও দাবি করা হয়। তাই সাক্ষাৎকারে যে পুলিশ অফিসার এবং প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম করেছিলেন গণপতি, তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও মামলা রুজু করা হয়নি। অথচ পুলিশের এক প্রাক্তন কর্তা জানান, গণপতির সেই সাক্ষাৎকারটিকে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি হিসেবে গণ্য করা যায়। সে ক্ষেত্রে যাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন গণপতি, তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলাও শুরু হতে পারে। সিআইডি ঘটনাটির তদন্তভার গ্রহণ করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy