— ফাইল চিত্র।
সাম্প্রতিক কালে ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার, উমর খালিদদের সঙ্গে যে মহিলাকে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে ও সামনে থেকে লড়তে দেখা যেত, তিনি হলেন শেহলা রশিদ। ছাত্র সমস্যা ছাড়াও জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন ঘটনা নিয়েও দিল্লিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন এই কাশ্মীরি ছাত্রীটি। শেহলার সেই লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি পদে ও জেএনইউয়ের সাধারণ সম্পাদক পদে জায়গা করে নিলেন দুই কাশ্মীরি ছাত্র। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইশাল নিসার এবং জেএনইউয়ে আইয়াজ আহমেদ রাইদর। শেহলাকে পাশে নিয়ে এই দুই ছাত্র নেতাই চাইছেন, এ বার জম্মু-কাশ্মীরে নতুন করে ছাত্র সংগঠনগুলির কাজকর্ম শুরু হোক। এবং এই লক্ষ্যে আন্দোলনে নামতে চান তাঁরা।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত একক লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল কলেজ অব ভোকেশনাল স্টাডিজের ইতিহাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নিসারকে। বাধা পেয়েছেন পদে পদে। দক্ষিণ কাশ্মীরের বাসিন্দা নিসারকে কলেজ চত্বরে দেশদ্রোহী, পাকিস্তানের চর ও জঙ্গি অপবাদ দিয়েছে সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। নিশারকে রুখতে তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মিথ্যা মামলাও করেছে দক্ষিণপন্থী ছাত্রনেতারা। নিশারের কথায়, ‘‘আমাকে ভয় দেখাতেই পুলিশে অভিযোগ করে এবিভিপির কিছু সমর্থক। লক্ষ্য ছিল, যাতে আমি মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারি। তাই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলে বলেছিলাম, মনোনয়নের পরে থানায় যাব।’’ শেহলার সক্রিয় উপস্থিতির কারণে জেএনইউয়ে আইয়াজের লড়াইটা ছিল তুলনায় সহজ। তবে এবিভিপি তাঁকেও দেশদ্রোহী তকমা দিতে ছাড়েনি।
দিল্লির ছাত্র রাজনীতিতে কাশ্মীরের ছাত্রদের সক্রিয় উপস্থিতি বাড়তে দেখে শেহলা খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগে জেএনইউয়ে সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কোনও কাশ্মীরি জেতেনি। সে দিক থেকে আইয়াজ ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন।’’ তাঁর মতে, ‘‘এবিভিপি কাশ্মীরিদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানোর রাজনীতি করছে। কিন্তু ছাত্রসমাজ বলছে অন্য কথা। তারা চাইছে কাশ্মীরিরাও মূল সমাজের অঙ্গ হোক। কিন্তু সব থেকে দুঃখের ব্যাপার হল, কাশ্মীরি ছাত্র-ছাত্রীরা দিল্লিতে বসে ছাত্র রাজনীতি করতে পারে। কিন্তু কাশ্মীরে তা করার অনুমতি নেই।’’ তাই সদ্য নির্বাচিত দুই ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিকে পাশে নিয়ে উপত্যকায় গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতির অধিকার ফেরাতে সুর চড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন শেহলা-আইয়াজ-নিসাররা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy