Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

বাঁচতে গেলে মেরে ফেল, কাঠুয়াকাণ্ডে ধর্ষক ছেলেকে বলেছিল বাবা

কাঠুয়ার ঘটনার তদন্তকারী পুলিশকে জেরায় এ কথা কবুল করেছে প্রধান অভিযুক্তদের অন্যতম সানজি রাম।

কাঠুয়ার ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তদের অন্যতম সানজি রাম। -ফাইল চিত্র।

কাঠুয়ার ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তদের অন্যতম সানজি রাম। -ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
জম্মু শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ১৯:৫৭
Share: Save:

হ্যাঁ, সে চেয়েছিল, কাঠুয়ায় ধর্ষিতা ৮ বছরের মেয়ে আসিফাকে মেরে ফেলা হোক। আর সেটা চেয়েছিল তার ছেলেকে বাঁচাতেই।

কাঠুয়ার ঘটনার তদন্তকারী পুলিশকে জেরায় এ কথা কবুল করেছে প্রধান অভিযুক্তদের অন্যতম সানজি রাম।

সানজি পুলিশকে জানিয়েছে, অপহরণের ৪ দিন পর সে জানতে পারে মেয়েটি ধর্ষিতা হয়েছে। আর সেই ঘটনায় জড়িত তার ছেলেও। তাই বেঁচে থাকলে, আসিফার বয়ানে ছেলে বড় বিপদে পড়ে যেতে পারে ভেবে মেয়েটির মৃত্যুই চেয়েছিল সানজি। ছেলে, ভাইপোকে বলেছিল, মেয়েটি বেঁচে থাকলে তো সবাই খুব মুশকিলে পড়ে যাবে।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে দিন (গত ১০ জানুয়ারি) অপহরণ করা মেয়েটিকে, সে দিনই তাকে ধর্ষণ করে সানজির নাবালক ভাইপো। তার পর তাকে ধর্ষণ করে সানজির ছেলে বিশাল। অপহরণের ৪ দিন পর মেয়েটিকে খুন করা হয় গত ১৪ জানুয়ারি। আর তার তিন দিন পর জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ।

পুলিশ জানিয়েছে, মুসলিমদের পিছিয়ে পড়া বকরওয়াল সম্প্রদায়ের বলেই অপহরণের পর মেয়েটিকে একটি হিন্দু মন্দিরে আটকে রাখা হয়েছিল। যার নাম- ‘দেবীস্থান’। সানজি ওই মন্দিরের পুরোহিত ছিল। নীয় গুজ্জর ও বকরওয়াল সম্প্রদায়ের মানুষকে সন্ত্রস্ত করতেই ওই ঘটনা ঘটানো হয়।

সানজির কৌঁসুলি অঙ্কুর শর্মা মুখ খুলতে না চাইলেও, সানজি বলেছে, ওই ধর্ষণের ঘটনা সে প্রথম জানতে পারে গত ১৩ জানুয়ারি, তার ভাইপোর মুখ থেকে। ভাইপোই বলেছিল, জড়িয়ে রয়েছে সানজির ছেলে বিশালও। সব শুনে সানজি তার ভাইপোকে বলেছিল, তাদের জন্য সে মন্দিরে দেবীর কাছে পুজো দিয়েছে, প্রার্থনা করেছে। আর সেই পুজোর প্রসাদ ভাইপোকে তার বাড়িতে এসে খেয়ে যেতে বলেছিল সানজি। কিন্তু সে কথা শোনেনি বলে ভাইপোকে মারধর করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে সানজি।

পুলিশের চার্জশিটে বলা হয়েছে, ‘‘এর পরেই সানজি ঠিক করেছিল মেয়েটিকে মেরে ফেলতে হবে।’’

গত ১৩ এবং ১৪ জানুয়ারির মধ্যে মেয়েটিকে ওই মন্দির থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় বিশালের বন্ধু পরভেশ কুমার ওরফে মন্নু। আরও এক বার ধর্ষণের জন্য। সেখানে দীপক খাজুরিয়া নামে এক পুলিশ অফিসারও ছিলেন। তিনিও মেরে ফেলার আগে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলেন মেয়েটিকে। কিন্তু সানজিই চায়নি, মেয়েটিকে আর বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখা হোক। তাই গত ১৪ জানুয়ারি মেরে ফেলা হয় মেয়েটিকে।

কিন্তু কোনও তথ্যপ্রমাণই রাখতে চায়নি সানজি। তাই ঠিক হয়েছিল, হিরানগর খালে ফেলে দেওয়া হবে মেয়েটির দেহ। কিন্তু গাড়ি পাওয়া যায়নি বলে তার দেহটি আর হিরানগর খালে নিয়ে যাওয়া হয়নি তাদের। দেহটি রেখে দেওয়া হয় মন্দিরেই। আর মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়ে সানজি সেটা পাহারা দিচ্ছিল।পরের দিন সানজি তার ছেলে, ভাইপোকে জানায়, বন্ধু গাড়ি দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে। তাই হিরানগরে নিয়ে গিয়ে আসিফার দেহটি খালে ফেলা যাবে না। সে ক্ষেত্রে আর মন্দিরে ফেলে না রেখে তড়িঘড়ি আসিফার দেহটি কাছের জঙ্গলেই ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Kathua Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE