Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শান্তি প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র খাপলাংকে গুরুত্ব দেবে না

ভারতীয় নাগাদের স্বার্থ রক্ষায় এনএসসিএন-খাপলাং গোষ্ঠীর কোনও ভূমিকা নেই বলে জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তিনি জানান, মায়ানমার সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে থাকা খাপলাং গোষ্ঠী নাগা সমস্যা সমাধানে আদপেই চিন্তিত নয়। তারা মায়ানমারে ঘাঁটি গেড়ে ভারতের জমিতে নাশকতা ও তোলাবাজি চালিয়ে যাওয়া একটি সংগঠনমাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৩:৩৪
Share: Save:

ভারতীয় নাগাদের স্বার্থ রক্ষায় এনএসসিএন-খাপলাং গোষ্ঠীর কোনও ভূমিকা নেই বলে জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তিনি জানান, মায়ানমার সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে থাকা খাপলাং গোষ্ঠী নাগা সমস্যা সমাধানে আদপেই চিন্তিত নয়। তারা মায়ানমারে ঘাঁটি গেড়ে ভারতের জমিতে নাশকতা ও তোলাবাজি চালিয়ে যাওয়া একটি সংগঠনমাত্র।

রিজিজু বলেন, ‘‘চাংলাংসুর ঘটনা নাগা শান্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’’ লোকসভায় খাপলাং গোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মণিপুরের কংগ্রেস সাংসদ থকচম মেইনা। তার উত্তরেই কেন্দ্রের এই মনোভাব জানান রিজিজু। তিনি বলেন, ‘‘এনএসসিএন-আইএম গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি আলোচনা চলছে। নতুন মধ্যস্থতাকারীও নিযুক্ত করা হয়েছে। এই আলোচনার সঙ্গে অসম, মণিপুর, অরুণাচলের সীমানা প্রসঙ্গও জড়িত। কারণ আইএম গোষ্ঠী এই তিন রাজ্যের নাগা অধ্যূষিত এলাকাগুলি নিয়ে বৃহত্তর নাগালিম গড়ার প্রস্তাব দিয়েছে। রিজিজু জানান, এই বিষয়ে তিন রাজ্যের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ও তিন রাজ্যের স্বার্থ সুরক্ষিত রেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উত্তর-পূর্বের বিকাশের স্বার্থে আলোচনার বাইরে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলিকেও শান্তির পথে ফেরার আহ্বান জানান রিজিজু। এ দিকে, চাংলাংসুর ঘটনার পরে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং রিজিজুর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, খাপলাং গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গ করার সিদ্ধান্তের কথা আসাম রাইফেল্সকে সরকারিভাবে জানানো হলেও এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। তিনি নাগাল্যান্ডে শান্তির স্বার্থে সংঘর্ষবিরতি নবীকরণের আর্জি জানিয়েছেন। রিজিজু তাঁকে জানান, ‘‘কেন্দ্র নয়, খাপলাং গোষ্ঠীই একতরফা ভাবে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গ করে নাশকতা শুরু করেছে।’’ তবে কেন্দ্র সংঘর্ষবিরতি চালিয়ে যাবে কিনা তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বৈঠকেই ঠিক হবে। সিদ্ধান্ত রাজ্যকেও জানানো হবে। চাংলাংসুর ঘটনার পরে তুয়েনসাং জেলায় ব্যাপক সেনা অভিযান শুরু হয়েছে। সেখানকার জেলাশাসক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘পুলিশ বা অন্য নিরাপত্তাবাহিনীর পোষাকের সঙ্গে মিল থাকা খাকি বা জংলা পোষাক বা কাপড় বিক্রি নিষিদ্ধ। কোনও ধরণের অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ। যে কোনও সময়ে। যে কোনও জায়গায় সেনা-তল্লাশি হতে পারে।’’

এ দিকে, রিজিজুর বিরুদ্ধে খড়্গ হস্ত হয়ে উঠেছে খাপলাং গোষ্ঠী। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, যে সমস্যা নিয়ে গাঁধীজি থেকে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রীরা সকলেই সুচিন্তিত ও সংযত মনোভাব নিয়েছেন, সেই নাগা সমস্যা থেকে খাপলাংকে ছেঁটে ফেলার মতো মন্তব্য করে রিজিজু নিজের অজ্ঞতাই প্রকাশ করেছেন। খাপলাংদের মতে, নিপীড়িত উপজাতি মানুষের প্রতিনিধি হয়েও ক্ষমতার লোভে রিজিজু ভারত সরকারের হয়ে কথা বলছেন। ৩ মে আধা-সেনাবাহিনীর উপরে খাপলাং বাহিনীর আক্রমণের প্রতিবাদে গত কাল টোবু এলাকার ২৬টি গ্রামের বাসিন্দারা খাপলাংদের বিরুদ্ধে বিরাট প্রতিবাদী মিছিল বের করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kiren rijiju khaplang India Nagaland
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE