Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চান বিজয়নের মুন্ডু, প্রচারককে সরাল সঙ্ঘ

সিপিএম নেতার মুন্ডু চাইছেন সঙ্ঘের প্রচারক! হুমকি গণহত্যারও! উত্তরপ্রদেশে ভোটের শেষ পর্বে আরএসএসের এই তীব্র মেরুকরণের রাজনীতিতে আজও তোলপাড় রাজধানী। কংগ্রেস, সিপিএমের চাপের মুখে অভিযুক্ত সঙ্ঘ প্রচারক কুন্দন চন্দ্রাবত দুঃখপ্রকাশ করলেও আজ দিনভর মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন সঙ্ঘের শীর্ষ নেতারা।

 পিনারাই বিজয়ন  ও কুন্দন চন্দ্রাবত

পিনারাই বিজয়ন ও কুন্দন চন্দ্রাবত

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

সিপিএম নেতার মুন্ডু চাইছেন সঙ্ঘের প্রচারক! হুমকি গণহত্যারও!

উত্তরপ্রদেশে ভোটের শেষ পর্বে আরএসএসের এই তীব্র মেরুকরণের রাজনীতিতে আজও তোলপাড় রাজধানী। কংগ্রেস, সিপিএমের চাপের মুখে অভিযুক্ত সঙ্ঘ প্রচারক কুন্দন চন্দ্রাবত দুঃখপ্রকাশ করলেও আজ দিনভর মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন সঙ্ঘের শীর্ষ নেতারা। বিকেলে অবশ্য জানিয়ে দেওয়া হয়, সঙ্ঘের সব পদ থেকে সরানো হল কুন্দনকে। বিরোধীরা বলছেন, জনমতের চাপে আপাতত লোক দেখানো পদক্ষেপ করলেও সঙ্ঘ তার মেরুকরণের রাজনীতি থেকে সরে আসবে, এমনটা মনে করার কারণ নেই।

এত দিন বিশ্বের অনেক ব্যক্তিই মুসলিম মৌলবাদীদের ফতোয়ার মুখে পড়েছেন। লেখক সলমন রুশদি বা তসলিমা নাসরিন, আবার ফ্রান্সে কার্টুনের জন্য ফতোয়ার শিকার হয়েছেন ব্যঙ্গ-পত্রিকা শার্লি এবদো। ফতোয়ার নিশানা এ বার কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ফতোয়াটি দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের সঙ্ঘ প্রচারক কুন্দন। গত কাল উজ্জয়িনীতে এক সভায় প্রকাশ্যে তিনি ঘোষণা করেন, বিজয়নের মাথা কাটতে পারলে ১ কোটি টাকা পুরস্কার মিলবে। কেরলে সঙ্ঘ-কর্মীদের উপরে হামলা বন্ধ না হলে গুজরাতের ধাঁচে গণহত্যারও হুমকি দেন তিনি। কুন্দনের অভিযোগ, বিজয়নের প্রত্যক্ষ মদতে কেরলে গত কয়েক মাসে প্রায় ৩০০ জন সঙ্ঘ প্রচারক মারা গিয়েছেন। তার বদলা নিতেই ওই হুমকি দেন তিনি।

ফতোয়া দেওয়ায় উজ্জয়িনীর অতীত ইতিহাস রয়েছে। মাস কয়েক আগেই সেখানকার জৈন মন্দিরে মহিলাদের জিন্স পরা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। এখন উত্তরপ্রদেশে ভোটের পরবে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের কবরস্থান-কসাব মন্তব্যে এমনিতেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে এই হিন্দু কট্টরবাদীর মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আইইউএমএল-এর মতে, ‘‘এমন কদর্য মন্তব্য শোনার অযোগ্য।’’

বিরোধী দলগুলি সঙ্ঘনেতার বিরুদ্ধে সরব হলেও, সঙ্ঘের পক্ষ থেকে পাল্টা জানানো হয়েছে, কেরলে দলীয় কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। জেএনইউ বা রামজস কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি দেশবিরোধী শক্তির আখড়া হয়ে উঠেছে। এই সবের প্রতিবাদে গোটা দেশে প্রতিবাদ জানাবে আরএসএস। তবে ঘটনা হল, গত কাল রাতেও কেরলের এলাপ্পুল্লিতে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের দুই সদস্য জখম হয়েছেন বিজেপি সমর্থকদের হামলায়। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে।

এই ধরনের হামলার রাজনীতি, খুনের হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিরোধীরা মুখর হলেও কুন্দনের বিষয়টি নিয়ে আজ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত বা জাতীয় মুখপাত্র মনমোহন বৈদ্যের মতো শীর্ষনেতারা কেউ মুখ খোলেননি। মুখরক্ষা করতে ইনদৌর থেকে সঙ্ঘের এক মুখপাত্র দায়সারা গোছের নিন্দা করেন। এর পরে ক্ষমা চান কুন্দনও। কিন্তু সঙ্ঘনেতারা বুঝতে পারেন, এতেই প্রতিবাদের ঝড় থামবে না। বরং এমন মন্তব্য বিরূপ প্রভাব ফেলবে সঙ্ঘ-বিজেপির নরমপন্থী কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। আপাতত তাই পদ থেকে সরিয়ে কুন্দনকে আড়ালে পাঠানোর কৌশল নিল সঙ্ঘ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kundan chandrawat Pinarayi Vijayan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE