Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাশ থাকবে কার হাতে? কাশ্মীরে টানাপড়েন লস্কর, আল কায়দার

গত এপ্রিলে কাশ্মীরে খিলাফত তৈরির কথা বলে হিজবুল ও হুরিয়ত নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছিল মুসা। কিছু দিন পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে লুকিয়ে থাকার পরে ফের সক্রিয় হয় সে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
Share: Save:

কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপের রাশ কাদের হাতে থাকবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেল দুই জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে। যার এক দিকে রয়েছে আল কায়দা। আর অন্য দিকে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা।

আল কায়দার দাবি, হিজবুলের প্রাক্তন কম্যান্ডার জাকির মুসা তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উপত্যকায় সংগঠনের নুতন শাখা খুলেছে। যাতে স্বেচ্ছায় যোগ দিচ্ছে কাশ্মীরের তরুণেরা। আর পাল্টা বিবৃতিতে লস্করের দাবি, ভারত কাশ্মীরের লড়াইয়ে হারছে। তাই আল কায়দা ও আইএসের মতো সংগঠনের নাম নিয়ে কাশ্মীরের ‘সংগ্রাম’কে বদনাম করার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি। গত তিন সপ্তাহ ধরে অপেক্ষাকৃত ভাবে শান্ত রয়েছে গোটা উপত্যকা। জঙ্গি নিকেশের ঘটনা বাড়লেও, কমতে শুরু করেছে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ব্যাখ্যা, ক্রমশ জমি হারানোর ফলে এবার নিজেদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি।

গত এপ্রিলে কাশ্মীরে খিলাফত তৈরির কথা বলে হিজবুল ও হুরিয়ত নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছিল মুসা। কিছু দিন পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে লুকিয়ে থাকার পরে ফের সক্রিয় হয় সে। মুসা আল কায়দা বা আইএসে যোগ দিতে পারে বলে বহু দিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল নানা শিবিরে। আজ আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠী ‘গ্লোবাল ইসলামিক মিডিয়া ফ্রন্ট’ বিবৃতি দিয়ে জানায়, হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানি শহিদ হওয়ার পরে কাশ্মীরে জনজাগরণ ঘটেছে। উপত্যকার মুসলিমদের এই জেহাদে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জাকির মুসার নেতৃত্বে নয়া ফ্রন্ট তৈরি হয়েছে।

কিছু ক্ষণ পরেই আসে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার পাল্টা বিবৃতি। তাতে লস্কর নেতা মাহমুদ শাহ দাবি করে, কাশ্মীরের ‘সংগ্রাম’কে সন্ত্রাস অ্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আল কায়দা ও আইএসের নাম জড়াচ্ছে ভারত। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের বুদ্ধিতেই এই কাজ করা হচ্ছে। আল কায়দা ও আইএস ইসলামের বহু ক্ষতি করেছে। পাকিস্তান থেকে টাকা নিয়ে জঙ্গিদের আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগে হুরিয়ত নেতাদের গ্রেফতারিরও কড়া সমালোচনা করেছে লস্কর। গতকাল হিজবুল নেতা সৈয়দ সালাউদ্দিনও বিবৃতি দিয়ে কাশ্মীরিদের কোনও ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনে’ যোগ দিতে নিষেধ করেছেন।

গোয়েন্দাদের মতে, কাশ্মীরে খিলাফত প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে। মুসার মাধ্যমে আল কায়দার কাশ্মীরে শাখা খুলতে চাওয়া লস্করের মতো পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের পক্ষে স্বীকার করে নেওয়া কঠিন। কারণ, তাহলে কাশ্মীরে
জঙ্গি কার্যকলাপের নেতৃত্ব মুসার হাতেও চলে যেতে পারে। ফলে শুরু হয়েছে টানাপড়েন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE