বন্ধন: বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে প্রচারের ফাঁকে। ছবি: পিটিআই
নৌকা করে আগামিকাল পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতে। তার আগে আজ নাম না করেই মোদীকে নিশানা করলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। কটাক্ষ করে বললেন, ৭০ বছর ধরে এ দেশে কিছুই হয়নি বলে যে প্রচার, তার মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। আর এই পাঁচ বছরে কৃষক হোক কিংবা যুব সমাজ—মোদী সরকারকে নিয়ে খুশি নয় কেউই। এ বার তারা সবাই মিলে সরকার পাল্টাবে।
গত কাল গঙ্গাবক্ষ দিয়ে শুরু হয়েছিল পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদিকা প্রিয়ঙ্কার প্রচার। নদীর তীরের এলাকাগুলিতে রাজীব-কন্যার অভিনব প্রচার শুরুতেই সাড়া ফেলেছিল। সোমবার রাতে ভাদোহীতে রাত কাটিয়ে এ দিন সীতামারি মন্দিরে পুজো দেন প্রিয়ঙ্কা, পরে পৌঁছন মির্জাপুরে। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে বিজেপি যে চিন্তিত, আজ তা প্রকাশ পেয়েছে মির্জাপুরে বিন্ধ্যবাসিনী দেবী মন্দিরে তিনি পৌঁছনোর পর। মন্দিরের বাইরে ভিড় করেছিলেন মোদীর সমর্থকেরা। প্রিয়ঙ্কা যখন গাড়ি থেকে নেমে মন্দিরে ঢুকছেন, মোদীর সমর্থনে স্লোগান শুরু হয়। এমনকি তিনি যখন পুজো দিচ্ছেন, তখনও থামেননি মোদীর সমর্থকেরা। পরে সীতামারিতে মহর্ষি বাল্মীকি আশ্রম, মির্জাপুরের খাজা ইসমাইল চিস্তির দরগাতে পৌঁছন প্রিয়ঙ্কা।
এ দিন ভাদোহীর সীতামারি অতিথিশালায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেস ও গাঁধী পরিবারকে নিয়ে বিজেপির প্রচারের জবাব দেন প্রিয়ঙ্কা। উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা গত কাল মন্তব্য করেছিলেন, রাহুল গাঁধী আর প্রিয়ঙ্কা ভোটের আগে পিকনিক করতে আসেন। ভোট শেষ হয়ে গেলেই চলে যান সুইৎজ়ারল্যান্ড কিংবা ইটালিতে। প্রিয়ঙ্কা পাল্টা বলেন, ‘‘৩-৪ বছর হল ইটালি যাইনি। সত্যি বলতে কী, আমার যাওয়া উচিত ছিল। ওখানে আমার দিদা থাকেন।’’ এর সঙ্গেই আক্রমণ মোদীকে। প্রধানমন্ত্রী সব সময়েই বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ৭০ বছরে কংগ্রেস কোনও কাজই করেনি। প্রিয়ঙ্কার জবাব, ‘‘ভোটে প্রতিশ্রুতি দেওয়া আর কাজ করে দেখানোর ফারাক অনেক। ৭০ বছর ধরে কংগ্রেস কাজ করেনি বলে যে প্রচার, তার এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে গিয়েছে! তোমরাও (বিজেপি) তো পাঁচ বছর ধরে ক্ষমতায়। কী কাজ হয়েছে?’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রিয়ঙ্কা যখন উত্তরপ্রদেশে, তখনই যোগী আদিত্যনাথ সরকারের দু’বছর পূর্তি হয়েছে। সেই উপলক্ষে কাজের খতিয়ান দিয়ে রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। এ দিন যোগীকেও আক্রমণ করেন প্রিয়ঙ্কা। বলেন, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতি কী, সেটা বুঝতে বিজেপিকে মাটিতে নেমে আসতে হবে। রিপোর্ট কার্ড দেখতে ভাল। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে ফারাক অনেক। এখানে সব স্তরের মানুষকেই হেনস্থা হতে হচ্ছে।’’ প্রিয়ঙ্কার দাবি, যোগীর জমানায় উত্তরপ্রদেশে কিছুই উন্নয়ন হয়নি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘রোজই আমি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। দেখছি, ছাত্র, যুবসমাজ, ‘শিক্ষা মিত্র’, অঙ্গনওয়ারি থেকে শুরু করে আশা কর্মী, সকলেরই অবস্থা খারাপ। কোথাও কোথাও বলা হয়েছে, ওঁরা নাকি ১৭ হাজার টাকা বেতন পাবেন। কিন্তু দু’বছর ধরে ওঁরা ৮ হাজার টাকা বেতনেই কাজ করে চলেছেন।’’
গঙ্গা বক্ষে প্রিয়ঙ্কার সফর নিয়ে এ দিন কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী। বলেন, ‘‘এত দিন গঙ্গা, রাম, হনুমান কিংবা গরিবের কথা ওঁদের মনে ছিল না। আমরাই এ নিয়ে বলতাম।...তবে মিসেস বঢরা এখন গরিবি নিয়েও বলছেন। এর আসল উদ্দেশ্য বুঝতে হবে। গরিবি নিয়ে উনি মোটেই চিন্তিত নন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy