বিরোধীরা তো বটেই, নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন দেশের ৬৬ জন প্রাক্তন আমলা। অভিযোগ ওঠে, নিরপেক্ষতা হারিয়ে শাসক দলের হয়ে কাজ করছে কমিশন। চর্তুদিক থেকে আসা অভিযোগের জবাবে আজ মুখ খুললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। বললেন, ‘‘আমার কারও শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই।’’
আজ একটি চ্যানেলে সুনীল অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পরেই তাঁর কাছে নির্বাচন করা নিয়ে বিশেষ ‘বার্তা’ এসেছিল। শাসক দল না কি অন্য কোনও শিবির থেকে সেই বার্তা এসেছিল, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি তিনি। শুধু বলেন, ‘‘আমি ফিরতি বার্তায় জানিয়ে দিয়েছিলাম যে আমি ও আমার সতীর্থরা সংবিধানের নির্দেশ যথাসম্ভব মেনেই কাজ করব।’’
দু’দিন আগে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেন শিবশঙ্কর মেনন, জহর সরকার, অর্ধেন্দু সেনের মতো প্রাক্তন আমলারা। প্রশ্ন তোলেন নমো টিভি, মোদী বায়োপিকের প্রচার, যোগী আদিত্যনাথের বিতর্কিত মন্তব্য সত্ত্বেও কেন পদক্ষেপ করছে না কমিশন। উত্তরে আজ সুনীল সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘আমার সততা নিয়ে নিজের মনে কোনও সন্দেহ নেই। আমি এ নিয়ে খুব শীঘ্রই একটি চিঠি লিখব। যার প্রতিলিপি সংবাদমাধ্যমকেও দেব। কারও শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই আমার। বিশেষ করে সেই মুষ্টিমেয় আমলার, যাঁরা নিজেদের লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রতিনিধি ভাবছেন।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
চলতি নির্বাচনে দেশভক্তির মতো বিষয়কে সামনে রেখেই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই যোগী আদিত্যনাথ কখনও ভারতীয় সেনাকে মোদীর সেনা বলে মন্তব্য করছেন, আবার কখনও পুলওয়ামার নিহত জওয়ানদের নামে ভোট চাইছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। অথচ সেনার নামে ভোট চাওয়ার প্রশ্নে ইতিমধ্যেই একাধিক বার নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে কমিশন। তার পরেও এ ধরনের প্রচার প্রসঙ্গে সুনীল বলেন, ‘‘যোগীকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’’ আর প্রধানমন্ত্রীকে? সুনীলের জবাব, ‘‘কমিশন বক্তব্যের ট্রানস্ক্রিপ্টের জন্য অপেক্ষা করছে।’’ কিন্তু আচরণবিধি ভাঙলে কি প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করা হবে? উত্তর আসে, ‘‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমি একা নিতে পারি না। গোটা বেঞ্চ একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়।’’
ভোট ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হলেও কমিশনের হাতে শাস্তিমূলক ক্ষমতা না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে পার পেয়ে যান নেতা-মন্ত্রী-প্রার্থীরা। এ দিক থেকে তিনি তথা কমিশন যে অসহায়, তা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন সুনীল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy