ছবি: পিটিআই।
সাধ করে প্রস্তাব পাঠিয়ে নেতাকে ডেকে এনেছিলেন তাঁরাই। কিন্তু এখন ‘সামলাতে’ পারছেন না!
উত্তরপ্রদেশে গাঁধী পরিবারের খাস তালুক অমেঠীর পাশাপাশি দক্ষিণের কোনও আসন থেকেও লোকসভায় লড়ার জন্য কর্নাটক, তামিলনাড়ুর মতো কেরলের কংগ্রেসও রাহুলকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কংগ্রেস সভাপতি কেরলের ওয়েনাড আসন বেছে নেওয়ার পরে এখন প্রস্তাবক দলের রাজ্য নেতৃত্ব পড়েছেন জোড়া ফ্যাসাদে! প্রথম বিড়ম্বনা রাজনৈতিক বার্তা সংক্রান্ত। দ্বিতীয় বিপত্তি ভিভিআইপি প্রার্থীর সঙ্গে তাল রেখে দৌড়নোর!
প্রথম বিড়ম্বনার কথাই ধরা যাক। ওয়েনাডে মনোনয়ন জমা দিতে এসে রাহুল বলে গিয়েছিলেন, বামেদের বিরুদ্ধে তিনি কোনও কথা বলবেন না। কারণ, লড়াইটা এখন হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে। রাহুল প্রার্থী হওয়ায় গোটা দক্ষিণ ভারতেই কংগ্রেস আসন বাড়ানোর আশা করছে ঠিকই। কিন্তু কেরলের কংগ্রেস নেতাদের কাছে আসনওয়াড়ি বিচারে প্রধান প্রতিপক্ষ বামেরাই, বিজেপি এখনও মাথা তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতির লাইনের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে কেরলের দলীয় নেতারা দক্ষিণ ভারতের যে কোনও প্রচার-সভায় মোদী বা শাহ কী বলছেন, সে দিকে শ্যেনদৃষ্টি রাখছেন। যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ানো যায়। তাতেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না!
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কোঝিকোড়েই যেমন। বাংলার নারদ-কাণ্ডের মতো এই কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ এম কে রাঘবনকেও গোপন ক্যামেরায় কাজ করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা চাইতে দেখা ও শোনা গিয়েছে। ‘স্টিং অপারেশনে’র সেই সিডি রাহুলের ওয়েনাড-বার্তার আগে ছড়িয়ে দিয়েছিল সিপিএম। ক্ষুব্ধ রাঘবন সিপিএমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী, কোঝিকোড় উত্তরের বিধায়ক এ প্রদীপ কুমার কান্নুরের সমবায় ব্যাঙ্কে ৬০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ সম্প্রতি সামনে এনেছিলেন। সেই ব্যাঙ্কেরও চেয়ারম্যান কান্নুরের আদি বাসিন্দা রাঘবন। সমবায় দুর্নীতির কথাও বামেদের প্রচার-পত্রে ছাপানো হয়েছে। রাঘবন কি এখন রাহুলের বার্তা মেনে বামেদের ছেড়ে কথা বলবেন?
রাহুলময়: কোঝিকোড়ে জেলা কংগ্রেস দফতর। নিজস্ব চিত্র
এর পরে আছে রাহুলের ‘ঝটিকা প্রচারে’র সঙ্গে কেরলের কংগ্রেস নেতাদের তাল রাখার সমস্যা। তিরুঅনন্তপুরমে সোমবার রাতে এসে রাহুলের আজ, মঙ্গলবার দক্ষিণ কেরলে কোল্লম, পাতানামতিট্টা, আলপ্পুঝায় সভা করে ফের রাজধানী শহরে প্রচার করার কথা। মাঝে যাওয়ার কথা কোট্টায়মে কেরল কংগ্রেস (এম)-এর সদ্যপ্রয়াত নেতা ও পালা কেন্দ্রের টানা ৫৫ বছরের বিধায়ক (তার মধ্যে মন্ত্রী হিসেবে ১৩ বার রাজ্য বাজেট পেশের অনন্য রেকর্ড) কে এম মানির বাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে। রাহুলের মঙ্গলবার রাত্রিবাস কান্নুরে। পরদিন, বুধবার কান্নুরের একটি প্রেক্ষাগৃহে কাসারগোড, কান্নুর ও কোঝিকোড় জেলার নেতাদের তিনি বৈঠকে ডেকেছেন সকাল সাড়ে ৭টায়। তার পরে ওয়েনাড লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি এবং পালাক্কাডে একটি সভা। কান্নুরের যে মন্দিরে বাবা রাজীব গাঁধীর চিতাভস্ম আছে, সেখানেও এক বার যেতে চান রাহুল। রাহুলের সঙ্গে কে কোথায় থাকবেন, তা ঠিক করতেই হিমশিম কংগ্রেস। কোঝিকোড় জেলা কংগ্রেসের সভাপতি টি সিদ্দিক বলছেন, ‘‘ওয়েনাডের জন্য নিজের জেলায় এখন থাকছি কম!’’ বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালার বক্তব্য, ‘‘চেষ্টা করছি টিম ভাগ করে দেওয়ার। তবে অনেকগুলো টিম লাগছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy