Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
general-election-2019-national

তেজস্বীর রাশ আলগা, বিহারে বেহাল মহাজোট

এক দিকে, লালুপ্রসাদের না থাকায় তাঁর চাহিদা চরমে। সেই সময়ে পরপর চার দিন নিজেকে প্রচার থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন তেজস্বী। তিনি নাকি অসুস্থ। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা।

তেজস্বী যাদব

তেজস্বী যাদব

দিবাকর রায়
পটনা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৩৩
Share: Save:

বাবা লালুপ্রসাদের আশীর্বাদ তাঁর উপরে রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনায় এখনও পর্যন্ত বাবার মতো দক্ষতা তেজস্বী যাদব দেখাতে পারছেন না। তাঁর মধ্যে লালু-সুলভ কোনও কিছু দেখতে পাচ্ছেন আরজেডি নেতারা। বিহারে সমস্ত বিজেপি-বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় এনে মহাজোট করতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন লালুপ্রসাদ। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিতে নির্বাচনের ভরা মরসুমে আরজেডি এবং মহাজোটের বাকি শরিকদের মধ্যে সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। উল্টে শরিকদের থেকে দূরে সরে গিয়েছে আরজেডি। কোনও ভাবেই তা ‘ম্যানেজ’ করতে পারছেন না তেজস্বী।

তার উপরে টানা প্রচারের জেরে মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তিনি। এক দিকে, লালুপ্রসাদের না থাকায় তাঁর চাহিদা চরমে। সেই সময়ে পরপর চার দিন নিজেকে প্রচার থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন তেজস্বী। তিনি নাকি অসুস্থ। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা। গত ৩০ মার্চ, ৯ এপ্রিল, ১৪ এপ্রিল এবং ১৫ এপ্রিল কোনও প্রচারে যাননি তিনি। তার জেরে প্রায় এক ডজন নির্বাচনী জনসভা বাতিল করতে হয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, দু’দিন হেলিকপ্টার খারাপ থাকায় এবং দু’দিন শরীর অসুস্থ থাকায় এই অনুপস্থিতি। বাকি দু’দিন তুলনায় গুরুত্বহীন ঝাড়খণ্ডে প্রচার করে বেরিয়েছেন তিনি।

এই লোকসভা নির্বাচনে তেজস্বীর এই প্রচার-কৌশল নিয়ে বিহারের রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ দলীয় নেতাদের সঙ্গে তেজস্বীর দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। অনেকে বলছেন, জেল থেকে ফোনে তেজস্বীকে নানা রাজনৈতিক পরামর্শ দিতেন লালুপ্রসাদ। কিন্তু নির্বাচনের মুখে লালুপ্রসাদের দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের ৪০ জন নিরাপত্তারক্ষীকে সরিয়ে নতুন রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। জেলবন্দি লালুপ্রসাদের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দিশাহারা তেজস্বী।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নির্বাচনে লালুপ্রসাদ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বৈশালীর আরজেডি প্রার্থী রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘লালুপ্রসাদ না থাকায় সমস্যা হবে এটাই তো স্বাভাবিক। আমাদের দলের সমর্থকরা তাঁর কথা শুনতে চান। মহাজোটের প্রচারও মার খাচ্ছে। রঘুবংশবাবু জানিয়েছেন, প্রতি লোকসভা নির্বাচনে লালুপ্রসাদ প্রতি দিন আটটা থেকে ন’টা সভা করতেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে হার্টের অপারেশনের পরেও নীতীশ কুমারের চেয়ে বেশি সভা করেছিলেন তিনি। সেখানে তেজস্বী প্রতিদিন তিনটে থেকে চারটে সভা করছেন। গয়া এবং কাটিহারে রাহুল গাঁধীর সভায়ও তেজস্বী হাজির ছিলেন না। তাতেও কংগ্রেস নেতাদের ক্ষোভ রয়েছে।

কিষাণগঞ্জের কংগ্রেস নেতা আব্দুস জলিল বলেন, ‘‘মহাজোটের প্রচারে কোনও সমন্বয় নেই। তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। গত ১৪ এপ্রিল আমাদের এখানে সভা ছিল। প্রায় ২৫ হাজার লোক হয়েছিল। কিন্তু তেজস্বী আসেননি। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE