এক পক্ষের হিসেব বলছে, এক ডজনের কম হবে না। অন্য পক্ষ বলছে, ১৬টা হয়ে যাবে। ভোট মিটে যাওয়ার পরে বাম এবং কংগ্রেস, দুই শিবিরে আসনের হিসেব আলাদা হলেও আশা একই— বিজেপির ঝুলি ফাঁকাই থাকবে!
গেরুয়া শিবির অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। ভোটের আগে তাদের পাখির চোখ ছিল রাজ্যের দু’টি আসন। ভোটের পরে তারা এখনও পাতানামতিট্টা আসন জয়ের ব্যাপারে ‘আত্মবিশ্বাসী’। শবরীমালার যে মন্দিরের দরজা মহিলা ভক্তদের আয়াপ্পা দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া নিয়ে প্রবল বিতর্ক, সেই এলাকা পড়ে এই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই। হিন্দু ভাবাবেগ কাজে লাগিয়ে কেরলে এই প্রথম লোকসভা আসন জেতার স্বপ্ন পূরণে বিজেপি এখনও ভরসা রাখছে ওই পাতানামতিট্টার উপরেই। সেই সঙ্গে তাদের আশা, সারা রাজ্যেই তাদের ভোট বাড়বে।
কেরলের ভোট শেষ হওয়ার পরে আসন ধরে ধরে হিসেব কষেছে বামেদের ফ্রন্ট এলডিএফ এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ। তার পরে কেরলের সিপিএম নেতৃত্ব যে রিপোর্ট দিল্লির এ কে জি ভবনে পাঠিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে, অন্তত ১২টি আসন বামেরা জিতবে। আসন দু-একটা বাড়তেও পারে। আগে বামেদের হাতে ছিল ৮টি আসন। দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের সাম্প্রদায়িক ও মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে কেরলের মানুষ ভোটের বাক্সে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সংখ্যালঘু মানুষ এককাট্টা হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। এই অঙ্কের ভিত্তিতেই আমাদের রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছেন, অন্তত ১২টি আসন বামেরা পাবে। বাকি আসনে জয়ী হবে কংগ্রেসের ইউডিএফ।’’ বামেরা যে ১২ আসন জয়ের আশা করছে, সেই তালিকায় রাহুল গাঁধীর কেন্দ্র ওয়েনাড নেই।
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন অবশ্য প্রকাশ্যে দাবি করছেন, তাঁরা ১৬ থেকে ১৮টি আসন জিতবেন! কারণ, সংখ্যালঘুদের ভোট পুরোটাই বামেদের বাক্সে কেন্দ্রীভূত হবে। আবার ঠিক একই আশা কংগ্রেস শিবিরেরও। তাদের বক্তব্য, রাহুল নিজে কেরলে প্রার্থী হওয়ায় এ বারই প্রথম এই দক্ষিণী রাজ্য থেকে নির্বাচিত কোনও সাংসদের দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এসেছে। তার সঙ্গে আছে সংখ্যালঘুদের সমর্থনের প্রশ্ন। এই দুই ‘ফ্যাক্টর’ মিলিয়েই ইউডিএফ ১৬টি আসন জেতার আশা করছে। তার মধ্যে ওয়েনাডে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী কমিটির পাঠানো হিসেব ধরে প্রদেশ কংগ্রেসের দাবি, রাহুল জিতবেন অন্তত আড়াই লক্ষ ভোটে। ভোটের পরে দেশের বাইরে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা। দিল্লিতে এআইসিসি-র কাছে কাল, মঙ্গলবার কেরলের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের মূল্যায়ন রিপোর্ট তুলে দেওয়ার কথা।
কংগ্রেসের এক প্রদেশ নেতার বক্তব্য, ‘‘পাতানামতিট্টা আসনে সংখ্যালঘু খ্রিস্টান মানুষের সংখ্যা অনেক। বিজেপি জেতার কথা বললেও আমাদের হিসেব বলছে, অল্প ভোটে ওই আসন আমাদেরই থাকবে। সঙ্ঘ-বিজেপির নিশানায় থাকা আর এক আসন তিরুঅনন্তপুরমেও সংখ্যালঘু ভোট একজোট হয়ে শশী তারুর ফের জিতবেন।’’ বাম ও কংগ্রেস দুই শিবিরেরই বক্তব্য, বিজেপির ‘বিপদ’ ঠেকাতে এই দু’দলের মধ্যে যেখানে যে শক্তিশালী, তার পক্ষে ভোট ‘স্যুইং’ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy