Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

আদর্শ থেকে বিচ্যুত, তাই স্বাধীনতার পর কংগ্রেস ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন গাঁধীজি! ব্লগে দাবি মোদীর

দুর্নীতি, জাতিভেদ, পরিবারতন্ত্রের মতো অভিযোগ তুলে কংগ্রেসকে একের পর এক আক্রমণ করে গিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘গাঁধীজি অনেক বার বলেছেন, তিনি অসাম্য এবং জাতি-সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভেদের বিপক্ষে(অর্থাৎ সাম্য ও ঐক্যের পক্ষে)। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করতে কংগ্রেস কখনও দ্বিধা করেনি।’’

মহাত্মা গাঁধীর ডান্ডি অভিযানকে স্মরণ করে কংগ্রেেসকে আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

মহাত্মা গাঁধীর ডান্ডি অভিযানকে স্মরণ করে কংগ্রেেসকে আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ১২:২৯
Share: Save:

পাঁচ বছর আগে ক্ষমতায় এসেই মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর আদর্শে চালু করেছিলেন স্বচ্ছ ভারত অভিযান। গুজরাতের নর্মদায় তৈরি করেছেন বল্লভভাই পটেলের বিশ্বের সর্বোচ্চ ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। গত পাঁচ বছরে বহু বার গাঁধী-নেহরু-পটেলকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফের একই কায়দায় কংগ্রেসকে বিঁধতে গাঁধীকেই অস্ত্র হিসেবে তুলে নিলেন মোদী। ডান্ডি অভিযানের ৮৯ তম বর্ষপূর্তির দিনে কংগ্রেসের আদর্শ নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। দাবি করলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর গাঁধীজিই কংগ্রেসকে ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন।’’ কারণ? মোদীর মতে, ‘‘গাঁধীজির অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যের নীতিই মানেনি কংগ্রেস।’’মঙ্গলবারই আমদাবাদে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, ডান্ডি অভিযান এবং গাঁধীজিকে স্মরণ করার নামে আসলে লোকসভা ভোটের মুখে নিজের ব্লগে আসলে কংগ্রেসেকে আক্রমণ করাই মূল উদ্দেশ্য মোদীর।

১৯৩০ সালের এই দিনেই ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। সেই দিনটিকে স্মরণ করতেই মঙ্গলবার একটি ব্লগ লেখেন নরেন্দ্র মোদী। গাঁধীজির নীতি-আদর্শকে তুলে ধরে মোদীর ব্লগের ছত্রে ছত্রে রয়েছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ। দুর্নীতি, জাতিভেদ, পরিবারতন্ত্রের মতো অভিযোগ তুলে কংগ্রেসকে একের পর এক আক্রমণ করে গিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘গাঁধীজি অনেক বার বলেছেন, তিনি অসাম্য এবং জাতি-সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভেদের বিপক্ষে(অর্থাৎ সাম্য ও ঐক্যের পক্ষে)। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করতে কংগ্রেস কখনও দ্বিধা করেনি।’’

ডান্ডি অভিযান ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতীক এবং ভারতের ‘মর্যাদা রক্ষার অভিযান’। কিন্তু কংগ্রেস গাঁধীজির সেই আদর্শ থেকে সরে এসেছে। অভিযোগ তুলে নিজের দল বিজেপির সাফাই করেছেন ঠিক একই অস্ত্রে। অর্থাৎ গাঁধীজিকে টেনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি তুলেছেন, বিজেপিই গাঁধীর সেই নীতি-আদর্শের ধ্বজাধারী বলে দাবি মোদীর। লিখেছেন, অসাম্য-অবিচারের বিরুদ্ধেই বিজেপির সংগ্রাম।

নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে কতটা জানেন, ঝালিয়ে নিন জ্ঞানভাণ্ডার

আরও পড়ুন: মোদীর ‘ঘরে’ই আজ কংগ্রেসের বৈঠক, এই প্রথম বক্তৃতা করবেন প্রিয়ঙ্কা!​

শতাব্দী প্রাচীন দল কংগ্রেস। দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রাপথে দলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিজের ব্লগে সেই ইস্যু টেনে এনে মোদী করেছেন, ‘‘আমরাই দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি।’’ আর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে খোঁচা, ‘‘কংগ্রেস আর দুর্নীতি এখন সমার্থক।’’অর্থাৎ, কংগ্রেস-সহ বর্তমান বিরোধীরা রাফাল, নীরব মোদী, বিজয় মাল্যদের মতো ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেও মোদী বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁর দলই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে।

দীর্ঘ কয়েক দশকের কংগ্রেস শাসন কালে সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায় ইন্দিরা গাঁধী জমানার‘জরুরি অবস্থা’। সেই প্রসঙ্গেও কংগ্রেসকে এক হাত নিয়েছেন মোদী। জরুরি অবস্থার ঘোষণা গণতন্ত্রের পবিত্রতা নষ্ট করেছে— এই অভিযোগ তুলে মোদীর দাবি, ‘‘কংগ্রেস বহু বার ৩৫৬ ধারার অপব্যবহার করেছে। যখনই কোনও নেতাকে পছন্দ হয়নি, তখনই সেই সরকার ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর সব সময় পরিবারতন্ত্রের পক্ষে সওয়াল করে এসেছে এবং দলের কাছে গণতন্ত্রের কোনও মূল্য নেই।’’— লিখেছেন মোদী।

আরও পড়ুন: প্রার্থীদের ফৌজদারি অপরাধের তথ্য বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে, নয়া নির্দেশিকা কমিশনের

মঙ্গলবারই গুজরাতের আমদাবাদে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। বৈঠকের আগে গাঁধীজির সবরমতী আশ্রম পরিদর্শন করেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। এই বৈঠকেই ভোটের রণকৌশল ঠিক করবে কংগ্রেস। তার আগে জাতির জনকেরআদর্শ থেকে কংগ্রেসের বিচ্যুতি এবং তিনি ও তাঁর দলই যে সেই আদর্শের অনুসরণকারী, সেটা প্রমাণ করতেই মোদীর এই প্রচেষ্টা বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Mahatma Gandhi Dandi March Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE