Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪
general-election-2019-west-bengal

চৌকিদার তকমা থেকে রেহাই চাইছেন নেতারা

ফের সরকার গড়ার যে আত্মবিশ্বাস নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ ভরে দিয়েছেন, তাতে অনেকটাই নিশ্চিন্ত বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বুথ ফেরত সমীক্ষার পর কাল চূড়ান্ত ফল বেরোলেও যে একই ছবি ফুটে উঠবে, কারও মনেও আর তেমন দ্বিধা নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০৩:৩২
Share: Save:

ঢের তো হল। আর কত দিন?

ফের সরকার গড়ার যে আত্মবিশ্বাস নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ ভরে দিয়েছেন, তাতে অনেকটাই নিশ্চিন্ত বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বুথ ফেরত সমীক্ষার পর কাল চূড়ান্ত ফল বেরোলেও যে একই ছবি ফুটে উঠবে, কারও মনেও আর তেমন দ্বিধা নেই। ফলে বেশ খোসমেজাজে রয়েছেন তাঁরা। শুধু যাঁরা বুথ পাহারা দিচ্ছেন, তাঁদের কথা আলাদা। বাকিদের কাজ এখন কালকের বিজয়-উৎসবের আয়োজন করা। দিল্লিতে এমনই কিছু নেতা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আড্ডা দিচ্ছেন খোশমেজাজে। আর এই প্রশ্নটি উঠে এল তাঁদের ঘরোয়া আড্ডাতেই।

ভোট প্রচারে রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিরন্তর বিঁধছিলেন রাহুল গাঁধী। সেনার ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি করে অনিল অম্বানীর পকেটে দিয়েছেন— এমন অভিযোগ ছিল তাঁর। পাঁচ বছর আগে নরেন্দ্র মোদী নিজেই বলেছিলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নন, চৌকিদার হতে চান। কিন্তু জনসভায় এ হেন ‘চৌকিদার’-এর কথা যেই না বলেছেন, জনতার মধ্যে থেকে আওয়াজ উঠে এসেছে, ‘চোর হ্যায়।’ সঙ্গে সঙ্গে রাহুল সেটি লুফে নেন। তখন থেকেই নতুন স্লোগান তৈরি হয় ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। যেটি পরে দেশের কোণে কোণে জনপ্রিয় করে তুলেছেন রাহুল।

এই স্লোগান জনপ্রিয় হতেই মোদীকে নতুন কৌশল রচনা করতে হয়। দলের সঙ্গে কথা বলে স্থির করেন, সকলকেই ‘চৌকিদার’ তৈরি করা হবে। টুইটারে নিজের নামের আগেও ‘চৌকিদার’ শব্দটি যোগ করেন, বাকিদেরও করতে বলেন। অগত্যা, দলের সকলকেই তা করতে হয়। শুধু নেতা নন, কর্মী-সমর্থকদেরও। সভায় সভায় গিয়ে মোদীকেও পাল্টা বলতে হয়, ‘ম্যায় ভি চৌকিদার!’

কিন্তু ভোট মিটে গিয়েছে। বিজেপির অনেকেই এখন নিষ্কৃতি পেতে চাইছেন এই জোর করে চাপানো ‘উপাধি’ থেকে। ঘরোয়া আড্ডায় আলোচনাতেও একই বিষয়। এক জন বললেন, ‘‘আচ্ছা বলুন তো, অনিল অম্বানী-আদানিরা এখন কংগ্রেসের নেতাদের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলা তুলে নিচ্ছেন। সিবিআইও মুলায়ম-অখিলেশকে ক্লিনচিট দিচ্ছে। বফর্স মামলার তদন্তও প্রত্যাহার করছে সিবিআই। প্রণব মুখোপাধ্যায়ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হচ্ছেন। বাকি কী থাকল? আমাদের ‘চৌকিদার’ শব্দ তোলার নির্দেশ কবে আসবে?’’ অন্য জন বললেন, ‘‘আমার নামের সঙ্গে ‘চৌকিদার’ দেখে বাচ্চারাও প্রশ্ন করছে। এমনকি বিদেশি চ্যানেলে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের নামও ‘চৌকিদার সুষমা স্বরাজ’ বলে প্রচার হয়েছে। তারা ভাবছে এটিই বুঝি তাঁর নাম!’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিজেপি ‘ছাড়ব-ছাড়ব’ করে উদিত রাজ আগেই ‘চৌকিদার’ নাম প্রথম বার টুইট থেকে মিটিয়ে ফেলেছিলেন। পরে নেতাদের ধাতানি খেয়ে ফের যোগ করেন। তার পরে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে পাকাপাকি নিষ্কৃতি পেয়েছেন এটি থেকে। আর সুব্রহ্মণ্যম স্বামী তো দলের নির্দেশ থাকলেও ‘চৌকিদার’ যোগ করতে চাননি। তাঁর আবার সাফ যুক্তি, ‘‘আমি ব্রাহ্মণ, চৌকিদার কী করে হতে পারি?’’ আফশোস দলের নেতাদের, ‘‘এই সাহস যদি দেখাতে পারতাম?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE