—ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় এলে নীতি আয়োগ তুলে দেবেন বলে জানিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সভাপতির ঘোষণা, আবার যোজনা কমিশন ফিরিয়ে আনবেন। কিন্তু তার বহর হবে অনেক ছোট। খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ মিলিয়ে ১০০ জনেরও কম লোক থাকবেন।
নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লাল কেল্লা থেকে প্রথম বক্তৃতাতেই জওহরলাল নেহরুর তৈরি যোজনা কমিশন তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৫-র ১ জানুয়ারি যোজনা কমিশনের বদলে তৈরি হয় নীতি আয়োগ। এর পরে, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাও তুলে দেয় মোদী সরকার। তার বদলে ১৫ বছর, ৭ বছর এবং ৩ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি হয়। মোদী সরকারের শেষবেলায় তার সঙ্গে স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ, ২০২২-এ নতুন ভারতের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি তৈরি হয়েছে।
বস্তুত ইউপিএ-সরকারের শেষবেলায় খোদ মনমোহন সিংহই যোজনা কমিশনের ভোলবদলের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। রাজীব গাঁধীর আমলে যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষ মনমোহন প্রশ্ন তুলেছিলেন, দুনিয়া বদলে গেলেও যোজনা কমিশন পুরনো পদ্ধতিতেই কাজ করে যাচ্ছে না তো?
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আজ রাহুল ফের যোজনা কমিশন ফিরিয়ে আনার ঘোষণা করায় প্রশ্ন উঠেছে, নতুন যোজনা কমিশনের কাজ কী হবে? রাহুল কি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ফিরিয়ে আনার কথাও ভাবছেন? সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার ‘গসপ্ল্যান’-এ অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৫০ সালের ১৫ মার্চ মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব এনে যোজনা কমিশন গড়েছিলেন জওহরলাল নেহরু। কিন্তু কমিশনের বিরুদ্ধে সবথেকে বড় অভিযোগ ছিল, তারা দিল্লিতে বসে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার উন্নয়নের জন্য নীতি তৈরি করে তা রাজ্যের উপর চাপিয়ে দেয়। অর্থনীতির উন্নয়নে সরকারি লগ্নির বদলে বেসরকারি লগ্নিই প্রধান ভূমিকা নেওয়ায় যোজনা কমিশনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
নতুন যোজনা কমিশন কী করবে? কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এর বিশদ উত্তর মিলবে কংগ্রেসের ইস্তাহারে। তরুণ প্রজন্মের জন্য আরও কর্মসংস্থান, রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে শিক্ষা-স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নে নতুন যোজনা কমিশন কাজ করবে। তৃণমূল এবং সিপিএমও ইস্তাহারে যোজনা কমিশন ফিরিয়ে আনার কথা বলেছে। এর কারণ হিসেবে দু’দলই কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক মজবুত করার প্রয়োজনের কথা বলেছে। যোজনা কমিশনে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সরব হওয়ায় জায়গা থাকত।
নীতি আয়োগ তুলে দেওয়ার পিছনে রাহুলের যুক্তি, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রেজেন্টেশন বানানো ও পরিসংখ্যানের কারচুপি করা ছাড়া নীতি আয়োগ আর কোনও কাজ করেনি।’’ বস্তুত, বেকারত্বের হার নিয়ে এনএসএসও-র সমীক্ষা ধামাচাপা দেওয়ার পিছনে নীতি আয়োগই প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল। নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার সরকারের হয়ে সাফাই দিতে মাঠেও নেমেছিলেন। নীতি আয়োগের কর্তারাও মানেন, গোটা প্রতিষ্ঠান এখন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বর্ধিত অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy