ইস্তাহারে আজ সে প্রকল্পের রোডম্যাপ জানাল কংগ্রেস। ছবি: এপি।
ক্ষমতায় এলে সময় লাগবে ১১ বছর। তার পর দেশে আর কেউ গরিব থাকবেন না। ইস্তাহারে এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিলেন রাহুল গাঁধী।
এর আগে দারিদ্র দূর করতে নরেন্দ্র মোদী ২০২২ সালের সময়সীমা বেঁধেছিলেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেই বছরেই ‘নতুন ভারত’ গড়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস বলছে, মোদীর আর পাঁচটি মিথ্যার মতোই সেটি একটি। দেশ থেকে দারিদ্র ঘোচাতে বাস্তবসম্মত সময় লাগবে ২০৩০ সাল। আজ ইস্তাহারে সে কথা বলল কংগ্রেস। ক্ষমতায় এলে ৫ কোটি গরিব পরিবারকে বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ক’দিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন রাহুল। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এই প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘ন্যায়’। ইস্তাহারে আজ সে প্রকল্পের রোডম্যাপ জানাল কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই প্রকল্পকে ‘অবাস্তব’ বললেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
রাহুল আজই বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক খাতে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেটি মিথ্যা। কিন্তু ভাবনাটি ভাল। তখনই দলকে বলি, ঠিক কত টাকা গরিবের খাতে দেওয়া যায়, খতিয়ে দেখুন। তাঁরা বলেন, বছরে ৭২ হাজার টাকা। নোটবন্দি, গব্বর সিংহ ট্যাক্সের পর ফেঁসে থাকা অর্থনীতি এই প্রকল্পের মাধ্যমেই গড়াতে শুরু করবে।’’ কংগ্রেসের ইস্তাহারে আজ জানানো হল, সরকারে এলে প্রথম তিন মাস এর পরিকল্পনায় লাগবে। তার পর ৬-৯ মাস পাইলট প্রকল্প ও পরীক্ষায়-নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজন। এর পর ধাপে ধাপে এটি চালু হবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জেটলিদের আপত্তি অন্যত্র। জেটলির মতে, ইস্তাহারেই লেখা হয়েছে এর জন্য টাকা শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্যকেও বহন করতে হবে। কোনও রাজ্য রাজি না হলে? দ্বিতীয়ত বলা হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে। যার অর্থ, তারা মনে করলে সারের ভর্তুকি তুলে দিতে পারে। আবার কেউ দারিদ্রসীমার উপরে উঠে গেলে গরিবদের জন্য দেওয়া ভর্তুকিও বিলোপ করে দিতে পারে। জেটলি বলেন, ‘‘আসলে ক্ষমতায় আসবে না জেনেই যা বড় বড় ঘোষণা করছে কংগ্রেস। রাহুল গাঁধীর থেকে বেশি বার কংগ্রেসের ইস্তাহার পড়েছি। এর রূপায়ণ বাস্তবসম্মত নয়।’’ ইস্তাহার প্রকাশের আগে এআইসিসি দফতরে আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের বক্তব্যও শোনানো হয়। সেখানে ‘ন্যায়’ প্রকল্পের পক্ষেই কথা বলছেন রাজন। জেটলি বলেন, ‘‘রঘুরাম রাজন বলেছেন, আর্থিক হাল ভাল হলে এটি রূপায়ণ করা যায়। আর এক অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেছেন, কর চাপানোর কথা। এ ভাবে রাজস্ব জোগাড় হবে? চিদম্বরমের তত্ত্ব তো আবার, একটি মুরগি কিনে ডিম দিলে হাজার মুরগি হবে। তাতে আমি কোটিপতি হব। ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধী যে ভাবে রাজকোষ ঘাটতি বাড়িয়ে তুলেছিলেন, কংগ্রেস আমলে মুদ্রাস্ফীতিও বেড়ে গিয়েছিল, এ বারেও তাদের ভাবনা সে পথেই এগোচ্ছে।’’
কংগ্রেসের ইস্তাহারের রূপকার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম অবশ্য বলেন, ‘‘এ প্রকল্প রূপায়ণ করার জন্য মধ্যবিত্তের উপর কর চাপবে না। তবে কিছু ভর্তুকি পর্যালোচনা করা যেতে পারে। আর এটি রূপায়ণও হবে ধাপে ধাপে। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি রূপায়ণের প্রক্রিয়া স্থির করবে। গরিবতম প্রথম দশ শতাংশকে সরাসরি অর্থ দেওয়ার জন্য জিডিপির ১.৩ শতাংশ দরকার। তার পর গরিবদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। জিডিপির আয়তন বাড়বে। ফলে দেশের ২০ শতাংশ গরিবকে উন্নীত করতে ১.৪ শতাংশের বেশি খরচ হবে না। এ প্রকল্প অনায়াসে রূপায়ণ সম্ভব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy