উদ্ধব ঠাকেরেকে পাশে নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে শিবসেনায় যোগ দিলেন প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী। ছবি: পিটিআই।
দলের প্রতি অসন্তোষের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল বুধবারই। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই লম্বা টুইটে অসন্তোষ জাহির করে দল ছেড়ে শিবসেনার সৈনিক হলেন কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী।
প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী কংগ্রেসের হাই প্রোফাইল কর্মী ছিলেন। ১০ বছর তিনি কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছেন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্যারোডি বানিয়ে দেশজুড়ে তিনি সমালোচিতও হন। এতদিনের কর্মীর আচমকা দলবদল নিয়ে এখনও অবশ্য কংগ্রেসের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
অসন্তোষ কী নিয়ে?
গত সেপ্টেম্বরের একটা ঘটনা টুইটে তুলে ধরেছেন প্রিয়ঙ্কা। ওই সময় উত্তরপ্রদেশের মথুরায় একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন প্রিয়ঙ্কার। সেই অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের কয়েকজন কর্মী তাঁর সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন, তাঁর অভিযোগ। অসন্তোষ অবশ্য তাঁর সঙ্গে ঘটা দুর্ব্যবহারের জন্য নয়। সেই ঘটনায় ওই কর্মীদের বহিষ্কার করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু সম্প্রতি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর তত্ত্বাবধানে কংগ্রেসের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি (ডিসিপ্লিনারি কমিটি) তাঁদের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এটাই তাঁর অসন্তোষের কারণ বলে টুইটে জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: মোদীর মতো ভুয়ো নন, পিছড়ে বর্গের আসল নেতা মুলায়ম, ঐতিহাসিক সভায় সার্টিফিকেট
কংগ্রেস সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে লেখা ওই টুইটে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, ‘‘যাঁরা দলের জন্য ঘাম এবং রক্ত ঝরিয়ে কাজ করছে, দলে তাঁদের থেকেও বেশি গুরুত্ব পায় সমাজবিরোধীরা। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’টুইটে তিনি ইস্তফাপত্রটাও জুড়ে দিয়েছেন। সেই লম্বা ইস্তফাপত্রের একটা অংশে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, ‘‘পাশাপাশি আমি এটাও বিশ্বাস করি, যত বেশি সময় আমি এই প্রতিষ্ঠানে কাটাব, আমার আত্মসম্মান এবং মূল্যবোধ দিয়েই তার মূল্য চোকাতে হবে।’’এর পর কংগ্রেস সভাপতিকে তাঁর সঙ্গে ঘটা দুর্ব্যবহারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, ‘‘দল যে ভাবে মহিলাদের সুরক্ষা, সম্মান এবং ক্ষমতার জন্য লড়ছে, তার প্রতিফলন দলের অন্দরে মহিলা কর্মীর ক্ষেত্রে দেখা যায় না। তার ফলেই আমি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’’বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সভাপতির কাছে ওই ইস্তফাপত্র পাঠান প্রিয়ঙ্কা।
Deeply saddened that lumpen goons get prefence in @incindia over those who have given their sweat&blood. Having faced brickbats&abuse across board for the party but yet those who threatened me within the party getting away with not even a rap on their knuckles is unfortunate. https://t.co/CrVo1NAvz2
— Priyanka Chaturvedi (@priyankac19) April 17, 2019
তবে প্রিয়ঙ্কা নিজের ইস্তফার পিছনে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা কংগ্রেস কর্মীদের প্রতি দলের সহানুভূতিশীল আচরণকে তুলে ধরলেও, রাজনীতিকদের একাংশ অন্য একটি সম্ভাবনার কথাও বলছেন।রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, ১০ বছর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করা প্রিয়ঙ্কা চলতি লোকসভা নির্বাচনে মুম্বই থেকে দলের টিকিটে লড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এই কারণেই অসন্তুষ্ট প্রিয়ঙ্কা দল বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
I am absolutely overwhelmed and grateful with the love and support I have got across board from the nation in the past 3 days.
— Priyanka Chaturvedi (@priyankac19) April 19, 2019
I consider myself blessed with this immense outpouring of support. Thank you to all who have been a part of this journey. pic.twitter.com/WhUYYlwHLj
ইস্তফা দেওয়ার পর দিনই মহারাষ্ট্রে বিজেপি শরিক শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকেরেকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রিয়ঙ্কা। শিবসেনায় যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। সেখানেও তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, টিকিট না পাওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত কি না? জবাবে প্রিয়ঙ্কা খুব স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, সেটা কারণ নয়। প্রকৃত কারণ তিনি ইস্তফাপত্রেই উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি প্রশ্নও তুলেছেন, ‘‘যদি পরিবারের কোনও সদস্যের হাতে যৌন হেনস্থার শিকার হন আর আপনার মা যদি সমালোচনার কথা ভেবে বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার কথা বলেন, তাহলে কী করা উচিত?"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy