Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
general-election-2019-national

কোন নিয়মে বরখাস্ত ওড়িশার আইএএস অফিসার? মোদীর কপ্টারে তল্লাশি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

মোদীর কপ্টারে তল্লাশি চালিয়ে কোনও নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেননি ওড়িশার এই আইএএস আধিকারিক?

মোদীর কপ্টার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র।

মোদীর কপ্টার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৫২
Share: Save:

ওড়িশার সম্বলপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কপ্টারে তল্লাশি চালাতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোপে পড়েছেন আইএএস অফিসার মহম্মদ মহসিন। গতকাল রাতেই তাঁকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের আওতায় থাকে, তাই এই তল্লাশি চালানোর এক্তিয়ার ছিল না মহসিনের, এমনটাই জানানো হয়েছিল কমিশনের তরফে। কিন্তু এই তল্লাশি চালিয়ে আদৌ কি কোনও নিয়মভঙ্গ করেছিলেন এই আইএএস অফিসার? যে নিয়মের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন, তা দেখার পর আরও জোরাল হল এই প্রশ্ন।

ওড়িশার সম্বলপুর কেন্দ্রের বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ছিলেন ১৯৯৬ ব্যাচের কর্নাটক ক্যাডারের আইএএস অফিসার মহম্মদ মহসিন। সেখানেই নরেন্দ্র মোদীর কপ্টারে তল্লাশি চালান তিনি। যার জন্য মোদীর কপ্টার উড়তে প্রায় ১৫ মিনিট দেরি হয়। এর পরই কর্তব্য পালন না করার অপরাধে তাঁকে বরখাস্ত করে নির্বাচন কমিশন। এই আইএএস অফিসার কোন নিয়ম ভেঙেছেন তা জানতে চাওয়া হলে কমিশনের তরফে জানানো হয়, ‘‘২০১৪ সালের ১০ এপ্রিলে দেওয়া একটি নির্দেশে বলা হয়েছিল যাঁরা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের আওতায় থাকেন, তাঁদের তল্লাশি করা যাবে না।’’

২০১৪ সালের সেই নিয়মে অবশ্য এই রকম কোনও নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছে না। বরং বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে তল্লাশি চালানো যেতে পারে, এমনটাই বলা হয়েছে সেই নির্দেশিকায়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনের প্রচারে বা নির্বাচন সংক্রান্ত যাতায়াতে কোনও ভাবেই সরকারি গাড়ির ব্যবহার করা যাবে না।’ যাঁরা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের নিরাপত্তা পান, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘এক মাত্র প্রধানমন্ত্রী বা অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যাঁদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হয় চরমপন্থী বা সন্ত্রাসবাদী হামলার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য, তাঁরা এই নির্দেশের আওতার বাইরে থাকবেন।’ কিন্তু একই সঙ্গে সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ বা অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক ব্যক্তির স্বার্থে বাড়াবাড়ি রকমের কাজ করতে থাকলে কমিশন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সরকারকে জানাবেন। তার ভিত্তিতে জরুরি ব্যবস্থা নেবে সরকার।’’

আরও পড়ুন: মোদীর কপ্টারে তল্লাশি, সাজা কর্তাকে

সেক্ষেত্রে যে নিয়মের প্রেক্ষিতে বরখাস্ত করা হয়েছে মহসিনকে, সেই নিয়মই বলছে— ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ, মোদীর কপ্টারে তল্লাশি চালিয়ে কোনও নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেননি ওড়িশার এই আইএএস আধিকারিক।

মোদীর কপ্টারে তল্লাশি চালিয়ে শাস্তির বিষয়টি সামনে আসার পরই সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের টুইট, ‘মোদী হেলিকপ্টারে কী নিয়ে যান, যা তিনি সারা দেশকে দেখাতে চান না।’ একই সঙ্গে তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর কপ্টারে তল্লাশি চালানো যাবে না, এমন কোনও নিয়ম কোথাও নেই।

আম আদমি পার্টির কটাক্ষ, ‘নিজের সুরক্ষিত ঘরে থাকতে চান দেশের চৌকিদার। চৌকিদার কী লুকাতে চাইছেন?’

আরও পড়ুন: মোদীর কপ্টারে ‘রহস্যজনক’ কালো ট্রাঙ্ক, নির্বাচন কমিশনে তদন্তের আর্জি কংগ্রেসের

মোদীর কপ্টার নিয়ে গত বেশ কিছু দিন ধরেই সরব ছিলেন দেশের বিরোধীরা। গত সপ্তাহেই কর্নাটকের চিত্রদুর্গে তাঁর কপ্টার থেকে একটি কালো ট্রাঙ্ক নামানোর ছবি সামনে এসেছিল। সেখানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার থেকে একটি কালো রঙের ট্রাঙ্ক নামাচ্ছেন কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী। দৌড়তে দৌড়তে সেটি নিয়ে গিয়ে একটি ইনোভা গাড়িতে তুলতে দেখা যায় তাঁদের। গাড়িটি সঙ্গে সঙ্গে রওনা হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানায় কংগ্রেস। যদিও কালো ট্রাঙ্কে কী ছিল, তা এখনও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE