পুরনো জোটসঙ্গীরা বিবাদ সরিয়ে ফের কাছাকাছি। নতুন জোটসঙ্গীরা এখনও পরস্পরের থেকে দূরে!
লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় এ বার জমে উঠছে নানা সমীকরণের খেলা। উত্তর-পূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যে লোকসভা আসন মাত্র দু’টি। কিন্তু বিজেপির ‘আধিপত্য’ ঠেকাতে সেখানেও চলছে নানা অঙ্ক। দুই আসনের মধ্যে জনজাতি সংরক্ষিত পূর্ব ত্রিপুরায় এখনও পর্যন্ত বেশি অস্বস্তিতে শাসক দল। আবার ভোট বিভাজনের সম্ভাবনায় সামান্য হলেও স্বস্তিতে প্রধান বিরোধী দল সিপিএম।
ত্রিপুরায় গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রায় গোটা ভোটব্যাঙ্কই ঢুকে গিয়েছিল বিজেপির বাক্সে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন বলে জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেস কিছু ভোট পেলেও তাতে বিজেপির ক্ষতি, এমনই অঙ্ক মানিক সরকারদের। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস হাইকম্যান্ড ত্রিপুরার দুই আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে।
মনোনয়ন জমা ও প্রত্যাহারের পর্ব এখনও শেষ হয়নি। এখনও পর্যন্ত যা ছবি দেখা যাচ্ছে, তাতে চতুর্মুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। বিজেপি এবং রাজ্য সরকারে তাদের জোটসঙ্গী আইপিএফটি দু’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। সিপিএমের পাশাপাশি রয়েছে কংগ্রেস। রীতিমতো সমঝোতাপত্র সই করে রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যোৎ মানিক্য রায় বর্মণ অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরিয়ে নিতে পেরেছেন তাঁদের পুরনো জোটসঙ্গী আইএনপিটি-কে। কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করে নেবে, অরণ্যের অধিকার আইন ফিরিয়ে দেবে, জনজাতিদের স্বশাসিত পরিষদ এডিসি-তে সরাসরি তহবিল দেওয়া হবে— এমনই আশ্বাসের পরিবর্তে আইএনপিটি-র দুই প্রার্থী বিজয় রাঙ্খল ও জগদীশ দেববর্মা নিজেদের প্রার্থীপদ তুলে নিয়ে কংগ্রেসকেই সমর্থন করতে রাজি হয়েছেন।
ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে বিজেপির প্রতিমা ভৌমিকের বিরুদ্ধে সদ্য বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে আসা সুবল ভৌমিককেই টিকিট দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। আবার বিজেপির আর এক বিধায়ক সুরজিৎ দত্ত তাঁর দলেরই নেত্রী প্রতিমার সঙ্গে মাদক পাচার চক্রের যোগসাজশের অভিযোগ তুলে শাসক শিবিরে অস্বস্তি তৈরি করেছেন। ওই কেন্দ্রে আইপিএফটি-র প্রার্থী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া। ত্রিপুরা পূর্ব আসনে বিজেপির রেবতী মোহন ত্রিপুরার বিরুদ্ধে আইপিএফটি-র তরফে ময়দানে আছেন স্বয়ং এন সি দেববর্মা। কংগ্রেস ওই আসনে প্রার্থী করেছে প্রদেশ সভাপতি প্রদ্যোতের দিদি প্রজ্ঞা দেব বর্মণকে। রেবতী, এন সি এবং প্রজ্ঞার মধ্যে ভোট ভাগ হলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারেন ওই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা অবশ্য সুষ্ঠু ভোট নিয়েই এখনও সন্দিহান। পশ্চিমের সিপিএম প্রার্থী ও বিদায়ী সাংসদ শঙ্করপ্রসাদ দত্তের প্রচারে শনি ও রবিবারই তিন বার হামলার অভিযোগ এসেছে। দলের রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশ বলছেন, ‘‘মানুষকে ভোট দিতে দিলে তবে তো আমাদের সুবিধা-অসুবিধার প্রশ্ন! অবাধ ভোট নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন আছে।’’ একই প্রশ্ন তুলেই প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাপস দে-র সংযোজন, ‘‘বিজেপি-আইপিএফটি আলাদা লড়লে আমাদের সুবিধা। আবার আইপিএফটি শেষ মুহূর্তে নাম তুলে নিলেও আমরা প্রশ্ন তুলব, সংসদে সওয়াল করার আশ্বাস কোথায় গেল?’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের অবশ্য দাবি, ত্রিপুরার মানুষ নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেই থাকবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy