প্রতীকী ছবি।
মাত্র এক বছর আগে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতে রাজ্যে সরকার গড়েছিল তারা। সেই ত্রিপুরায় দু’টি লোকসভা আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গিয়ে এখন জেরবার বিজেপি। কোন্দল ঘরে, বিবাদ জোটেও!
ত্রিপুরার দু’টি আসনে ভোট প্রথম দুই দফায় অর্থাৎ ১১ ও ১৮ এপ্রিল। প্রার্থী বাছাইয়ে টানাপড়েন চলছে দেখে রাজ্য বিজেপির নেতাদের মত নিয়ে ফয়সালা করার জন্য বুধবার আগরতলায় গিয়েছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং উত্তর-পূর্বের পর্যবেক্ষক রাম মাধব। বৈঠকে দলের নেতাদের তিনি জানিয়ে দেন, পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি থেকে যত বেশি সম্ভব আসন জেতার লক্ষ্যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে। কিন্তু তার পরে দুই আসন নিয়ে আলোচনা এগোতেই প্রকট হয়ে যায় ঘরোয়া কোন্দল। এক দিকে ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে প্রার্থী বাছাই ঘিরে দলের অন্দরে বিবাদ, আবার অন্য দিকে জনজাতির জন্য সংরক্ষিত পূর্ব আসনটিতে আইপিএফটি-র সঙ্গে টানাপড়েন। পরে আইপিএফটি নেতাদেরও ডেকে আলোচনায় বসেছিলেন রাম মাধব। সেখানেও মীমাংসা সূত্র মেলেনি। এন সি দেববর্মাদের সঙ্গে কথা চালিয়ে যেতে রাজ্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন রাম মাধব।
বিরোধী সিপিএম অবশ্য দুই আসনে তাদের দুই বিদায়ী সাংসদ শঙ্করপ্রসাদ দত্ত এবং জিতেন্দ্র চৌধুরীকেই প্রার্থী করার ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু শাসক বিজেপির ঘরের সমস্যা ঢের বেশি! মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের শিবিরের নেতারা চাইছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও শিল্পমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণকে পশ্চিম আসনে প্রার্থী করতে। বেশ কয়েক মাস ধরেই মন্ত্রিসভার অন্দরে বিপ্লব-সুদীপ ঠান্ডা লড়াই চলছে। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যাওয়া সুদীপকে সরকারি বহু অনুষ্ঠান বা বৈঠকের খবরও ঠিক মতো দেওয়া হয় না বলে দলের একাংশের অভিযোগ। লোকসভায় জিতে সুদীপ দিল্লি চলে গেলে রাজ্যে বিপ্লবের পথ পরিষ্কার হবে, এই অঙ্ক থেকেই তাঁকে প্রার্থী করার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ। কিন্তু এই ছক ধরে ফেলে বেঁকে বসেছেন সুদীপ! রাম মাধবকেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, লোকসভায় প্রার্থী হতে তিনি কোনও মতেই আগ্রহী নন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ প্রসঙ্গে দুই শিবিরের কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। সুদীপ-ঘনিষ্ঠ এক বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘ওঁকে প্রার্থী করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাতে ফল হবে না!’’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী ঘোষণা হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। দিল্লিতে দলের সংসদীয় বোর্ড আলোচনা করে প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করবে।’’
নাগরিকত্ব বিল করতে গিয়ে উত্তর-পূর্বে এমনিতেই বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি। এমতাবস্থায় জোটসঙ্গী আইপিএফটি জানিয়ে রেখেছে, সংরক্ষিত আসনটিতে তারাই লড়তে চায়। দলের নেতা তথা মন্ত্রী মেবার কুমার জামাতিয়ার যুক্তি, দু’টি আসন দুই জোটসঙ্গী ভাগ করে নেবে— এটাই স্বাভাবিক শর্ত। কিন্তু বিজেপি ওই আসনটিও নিজের হাতে রাখতে চায়। রাজীববাবুর কথায়, ‘‘আইপিএফটি-র সঙ্গে আরও আলোচনা হবে। ওরাও সময় চেয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy