দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী।
সঙ্ঘ পরিবারের নীতি নির্ধারক দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং স্বামী বিবেকানন্দের নাম পাশাপাশি আনার চেষ্টা করে গত বছর সমালোচিত হয়েছিল বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বার দক্ষিণ আফ্রিকায় সফররত বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পরপর দু’টি অনুষ্ঠান করতে চলেছেন দীনদয়াল এবং মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর স্মরণে।
আগামী ৭ তারিখ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকবেন সুষমা। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন যৌথ কর্মসূচি এবং উৎসব হচ্ছে সেখানে। সূত্রের খবর, ভারত সরকারের উদ্যোগে দু’টি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রথমটি, দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রেন থেকে ‘অ-শ্বেতাঙ্গ’ গাঁধীজিকে নামিয়ে দেওয়ার কুখ্যাত ঘটনার ১২৫ বছর পূর্ণ হওয়া। অন্যটি দীনদয়াল স্মরণে ডাকটিকিট প্রকাশ।
রাজনৈতিক ভাবে বিষয়টি অর্থবহ। কিছু দিন আগেই সুষমা নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন, তাঁদের আমলে বিদেশনীতি শুধুই উঁচু তলার মানুষদের জন্য নয়, ‘আমজনতার’ কাছে চলে এসেছে তা। বিরোধী দলগুলি বলছে, বিভিন্ন রাজ্যে কোণঠাসা হয়ে মোদী এখন বিদেশনীতিকেও দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে তিনি যা যা করবেন, সবই রাজনীতির কথা মাথায় রেখে। কংগ্রেসের রাজনীতির প্রধানতম ‘ব্র্যান্ড’ গাঁধীজিকে আত্মসাৎ করতে নিরন্তর চেষ্টা করছেন মোদী। সেই কৌশলেরই অঙ্গ এটা। গাঁধী-নেহরু পরিবারের বাইরে স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্য নেতাদের তুলে ধরছেন মোদী। বল্লভভাই পটেল ‘আইকন’ হয়ে উঠেছেন বহু দিনই। আর স্বচ্ছ ভারত অভিযানে গাঁধীজির চশমাকে প্রতীক করেছে কেন্দ্র।
দু’বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে গাঁধীকে বারবার স্মরণ করেছেন মোদী। ‘গাঁধীর তীর্থভূমি’ বলে বর্ণনা করেছেন সেই দেশকে। ১৮৯৩ সালে সে ট্রেনের প্রথম শ্রেণিতে সফর করছিলেন গাঁধীজি। এক শ্বেতাঙ্গ যাত্রীর আপত্তিতে পিটারমারিৎজ়বার্গ স্টেশনে জোর করে তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনা থেকে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন গাঁধী। সেই ঘটনার সঙ্গে দীনদয়াল স্মরণকেও একই বন্ধনীতে রাখার নেপথ্যে মোদী সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy